এস. এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি:বাগেরহাটের ৯ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে সুকৌশলে বিক্রি হচ্ছে অতিথি পাখি। শীতের শুরুতেই এক শ্রেণির শিকারী অতিথি পাখি শিকারে তৎপর হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় জানান, প্রতিবারের মতো এবারও শীতের শুরুতে খাদ্য ও আশ্রয়ের সন্ধানে আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখি। এলাকার বিভিন্ন খাল, বিল, জলাশয়ে আশ্রয় নিচ্ছে তারা। উপজেলার বারুইডাঙার বিল, বগুড়ার বিল, কোদলার বিল, হোচলা, ডহর মৌভোগ, মুলঘর, ফলতিতা, কাকডাংগা, কলকলিয়া, কেন্দুয়া বিলসহ আশেপাশের বিভিন্ন জলাশয়ে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে পাখিরা।
আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির অসাধু পাখি শিকারিরা ফাঁদ ও জাল দিয়ে পাখি শিকার করছে। এসব পাখি স্থানীয় হাট-বাজারে অতি সন্তর্পণে থলের ভেতরে করে বিক্রি করছে শিকারীরা। প্রতি জোড়া পাখি আকার ভেদে ৩’শ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অতি লাভের আশায় পাখি শিকার ও বেচা-কেনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে এক শ্রেণির অসাধু লোকজন। এই নেটওয়ার্কে থাকা বেশ কয়েকটি দল পরিচিত লোকের মাধ্যমে পাখি বিক্রি করে। পরিচিতজনের মাধ্যমে ফোনে অর্ডার দিলেই নির্দিষ্ট স্থানে মেলে পাখি।
এলাকার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এসব পাখি কিনেছেন। উপজেলার ফকিরহাট বাজার, ফলতিতা বাজার, টাউন নওয়াপাড়া হাট, কলকলিয়া সহ বিভিন্ন হাট-বাজারে ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ অতিথি পাখির বেচা-কেনা হচ্ছে। এসব পাখির মধ্যে নাইট হেরন, সোনাজঙ্গ, ডুঙ্কর, খেনি, স্নাইপ বা কাদাখোঁচা, খুরুলে, জলকৌড়ি, বুনো হাঁস, বক, সারস, কুনচুষীসহ বিভিন্ন পাখি বিক্রি হয়। এছাড়া দেশি ঘুঘু ও ডাহুক পাখিও বিক্রি করা হয় বলে জানা গেছে। প্রশাসনের নজরদারী এড়াতে পাখি শিকারীরা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করেন এবং স্থান পরিবর্তন করেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান প্রকৃতি ও পাখি প্রেমিক মানুষ। এ বিষয়ে ফকিরহাট নিবাসী পাখি বিশারদ শরীফ খান জানান প্রতি বছর শীত মৌসুমে সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গলিয়া, ভারতসহ হিমালয় সংলগ্ন নানা দেশ থেকে পরিযায়ী পাখিরা এদেশে এসে আশ্রয় নেয়। বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনে যে কোন পাখি ও বন্যপ্রাণি শিকার ও পালন করা দন্ডনীয় অপরাধ। এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে প্রচার প্রচারণা করা প্রয়োজন।
ফকিরহাট উপজেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, অতিথি পাখি ধরা ও বিক্রি করার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কাজ করছি। বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী মেজিস্ট্রেট সুমনা আইরিন জানান, পাখি শিকার ও বেচা-কেনার সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি সচেতন জনগনের কাছ থেকে তথ্য প্রদানের জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন।”ছবি সংযুক্ত আছে।







