মোরেলগঞ্জ ৩০১ তম ঐতিহ্যবাহী কালাচাঁদ আউলিয়ার মেলা শুরু

এস.এম.সাইফুল ইসলাম কবির ,  বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে প্রায় ৩০১ বছরের ঐতিহ্যবাহী কালাচাঁদ আউলিয়ার মেলা আজ বুধবার শুরু হয়েছে। তিনদিন ব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও চলে সপ্তাহব্যাপী।

মেলা প্রাঙ্গন এখন সাজসাজ রব। মেলার মাঠ সেজেছে শিশু বিনোদনের খেলনাসহ নানা সামগ্রীতে। শত শত দোকানী বসেছে তাদের নানা পসরা নিয়ে।  দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীদের উপড়ে পড়া ভীড় হয় এ মেলায়। প্রতিবছর  ২৫ অগ্রহায়ণ থেকে তিন দিনব্যাপী এ মেলা হবার নিয়ম থাকলেও আনুষ্ঠানিকভাবে কয়েক দিন আগে থেকেই মেলা জমে উঠে।

গতকাল মঙ্গলবার  কালাচাঁদ মেলার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মেলা শুরুর দুই-তিন দিন আগে থেকেই বসেছে নানা দোকান। ইতোমধ্যে শত শত দোকানি মেলা প্রাঙ্গণে শিশুদের খেলনা, টমটম, কাঠের বাঁশি, সিলভারের হাঁড়ি-পাতিল, গৃহস্থদের ঘরে ব্যবহারে কাঠের নানা সামগ্রী দোকান নিয়ে বসেছেন। এ ছাড়া প্রসাধনী কসমেটিকস, পাশাপাশি বসেছে মিষ্টি, মুড়ি মোয়ার দোকান। হাসিখুশি পানের দোকানে বিক্রি হচ্ছে নবরাজ,  আগুন পান, মনের মতো পান। ১০-১৫ ধরনের মসলা দিয়ে এ পান বিক্রি হচ্ছে ১০-১০০ টাকায়। আচারের দোকানে আমের কাশ্মিরী মোরব্বা, গরুর গোশতের আচার, চালকুমড়ার আচার, পেঁপে, শিম, মিক্স আচার, আলু বোখারা, কিশমিশসহ ১০০ ধরনের আচার পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দোকানীরা জানায়,তারা ৩০-৩৫ বছর ধরে এ মেলায় দোকান নিয়ে আসে। লক্ষ লক্ষ টাকা বেচা কেনা হয় দোকানীদের।

স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ৩০০ বছর আগে শিশু কালাচাঁদ আউলিয়া পানগুছি নদীতে ভেসে এসেছিলেন। তিনি বারইখালী কাজী বাড়ি এলাকায় বটগাছের নিচে আস্তনাা গেড়েছিলেন। লোকমুখে রয়েছে তার বিভিন্ন ধরনের অলৌকিক কাহিনি। দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার ভক্ত, আশেকানবৃন্দ ও দর্শনার্থীরা এ মেলায় সমবেত হয়। জনশ্রæতি রয়েছে , এক লোক শীতার্ত কালাচাঁদকে দেখে তার গায়ের চাদর দিয়ে দেন। কালাচাঁদ চাদরটি পেয়ে তার সামনে জ্বলন্ত আগুনে ফেলে দিলে তা পুড়ে যায়। এতে ওই লোকটি আফসোস করলে কালাচাঁদ জ্বলন্ত আগুন থেকে অক্ষত চাদরটি উঠিয়ে তাকে ফেরত দেন। সমসাময়িক সময়ে কালাচাঁদ আউলিয়া নাকি বাঘের পিঠে ঘুরে বেড়াতেন। এভাবে তার নামে রয়েছে নানা জনশ্্রুতি। বারইখালী ফকিরের তাকিয়া মৌজা তার নামেই হয়েছে। বারইখালীর কাজী বাড়ির চত্বরে তিনি আস্তানা গড়েন এবং আর এখানেই তিনি জ্যান্ত কবর নিয়েছিল বলেও প্্রবীনরা জানান। তার নামেই এখানে প্রতি বছর মেলা বসে।

তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত মেলায় রাতভর চলবে ওয়াজ মাহফিল, ওরস, মুর্শিদী ও মাইজভান্ডারী গান। ভক্তরা কালাচাঁদ আউলিয়ার মাজারে আগরবাতি আর মোমবাতি দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। হাজারো ভক্ত মনের আশা পূরণ আর মানতের টাকা-পয়সা মাজারে দান করে তৃপ্ত হবে।
কালাচাঁদ আউলিয়া মাজার কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল্লাহ জানান, অত্যন্ত স্বপ্লপরিসরে ৩ দিনের জন্য এ মেলার আয়োজনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ঝুকিঁপূর্ণ কোন রাইড কিংবা অববৈধ কিছু চলতে পারবেনা।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» মা-মেয়ে হত্যা : গৃহকর্মী ৬ দিন, স্বামী ৩ দিনের রিমান্ডে

» রংপুরে বিভাগীয় ইজতেমার প্রথম দিনে দুই মুসল্লির মৃত্যু

» উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত

» শীতেই বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি, আক্রান্ত হলে বুঝবেন কীভাবে?

» গরুর মাংস দিয়ে আলু ঘাটি রান্নার রেসিপি জেনে নিন

» সমকামী উৎসবের ভেন্যুতে মিসর-ইরানের বিশ্বকাপ ম্যাচ, তুমুল প্রতিক্রিয়া

» স্কুলে ভর্তিতে লটারির ফল প্রকাশ, জানা যাবে যেভাবে

» ভোটের মাধ্যমেই অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ : আমীর খসরু

» ৫ দিনের রিমান্ডে সাংবাদিক শওকত মাহমুদ

» রাজশাহীতে পৃথক অভিযানে ২১ জন গ্রেফতার

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মোরেলগঞ্জ ৩০১ তম ঐতিহ্যবাহী কালাচাঁদ আউলিয়ার মেলা শুরু

এস.এম.সাইফুল ইসলাম কবির ,  বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে প্রায় ৩০১ বছরের ঐতিহ্যবাহী কালাচাঁদ আউলিয়ার মেলা আজ বুধবার শুরু হয়েছে। তিনদিন ব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও চলে সপ্তাহব্যাপী।

মেলা প্রাঙ্গন এখন সাজসাজ রব। মেলার মাঠ সেজেছে শিশু বিনোদনের খেলনাসহ নানা সামগ্রীতে। শত শত দোকানী বসেছে তাদের নানা পসরা নিয়ে।  দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীদের উপড়ে পড়া ভীড় হয় এ মেলায়। প্রতিবছর  ২৫ অগ্রহায়ণ থেকে তিন দিনব্যাপী এ মেলা হবার নিয়ম থাকলেও আনুষ্ঠানিকভাবে কয়েক দিন আগে থেকেই মেলা জমে উঠে।

গতকাল মঙ্গলবার  কালাচাঁদ মেলার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মেলা শুরুর দুই-তিন দিন আগে থেকেই বসেছে নানা দোকান। ইতোমধ্যে শত শত দোকানি মেলা প্রাঙ্গণে শিশুদের খেলনা, টমটম, কাঠের বাঁশি, সিলভারের হাঁড়ি-পাতিল, গৃহস্থদের ঘরে ব্যবহারে কাঠের নানা সামগ্রী দোকান নিয়ে বসেছেন। এ ছাড়া প্রসাধনী কসমেটিকস, পাশাপাশি বসেছে মিষ্টি, মুড়ি মোয়ার দোকান। হাসিখুশি পানের দোকানে বিক্রি হচ্ছে নবরাজ,  আগুন পান, মনের মতো পান। ১০-১৫ ধরনের মসলা দিয়ে এ পান বিক্রি হচ্ছে ১০-১০০ টাকায়। আচারের দোকানে আমের কাশ্মিরী মোরব্বা, গরুর গোশতের আচার, চালকুমড়ার আচার, পেঁপে, শিম, মিক্স আচার, আলু বোখারা, কিশমিশসহ ১০০ ধরনের আচার পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দোকানীরা জানায়,তারা ৩০-৩৫ বছর ধরে এ মেলায় দোকান নিয়ে আসে। লক্ষ লক্ষ টাকা বেচা কেনা হয় দোকানীদের।

স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ৩০০ বছর আগে শিশু কালাচাঁদ আউলিয়া পানগুছি নদীতে ভেসে এসেছিলেন। তিনি বারইখালী কাজী বাড়ি এলাকায় বটগাছের নিচে আস্তনাা গেড়েছিলেন। লোকমুখে রয়েছে তার বিভিন্ন ধরনের অলৌকিক কাহিনি। দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার ভক্ত, আশেকানবৃন্দ ও দর্শনার্থীরা এ মেলায় সমবেত হয়। জনশ্রæতি রয়েছে , এক লোক শীতার্ত কালাচাঁদকে দেখে তার গায়ের চাদর দিয়ে দেন। কালাচাঁদ চাদরটি পেয়ে তার সামনে জ্বলন্ত আগুনে ফেলে দিলে তা পুড়ে যায়। এতে ওই লোকটি আফসোস করলে কালাচাঁদ জ্বলন্ত আগুন থেকে অক্ষত চাদরটি উঠিয়ে তাকে ফেরত দেন। সমসাময়িক সময়ে কালাচাঁদ আউলিয়া নাকি বাঘের পিঠে ঘুরে বেড়াতেন। এভাবে তার নামে রয়েছে নানা জনশ্্রুতি। বারইখালী ফকিরের তাকিয়া মৌজা তার নামেই হয়েছে। বারইখালীর কাজী বাড়ির চত্বরে তিনি আস্তানা গড়েন এবং আর এখানেই তিনি জ্যান্ত কবর নিয়েছিল বলেও প্্রবীনরা জানান। তার নামেই এখানে প্রতি বছর মেলা বসে।

তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত মেলায় রাতভর চলবে ওয়াজ মাহফিল, ওরস, মুর্শিদী ও মাইজভান্ডারী গান। ভক্তরা কালাচাঁদ আউলিয়ার মাজারে আগরবাতি আর মোমবাতি দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। হাজারো ভক্ত মনের আশা পূরণ আর মানতের টাকা-পয়সা মাজারে দান করে তৃপ্ত হবে।
কালাচাঁদ আউলিয়া মাজার কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল্লাহ জানান, অত্যন্ত স্বপ্লপরিসরে ৩ দিনের জন্য এ মেলার আয়োজনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ঝুকিঁপূর্ণ কোন রাইড কিংবা অববৈধ কিছু চলতে পারবেনা।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com