সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আহ্বানে যে উদ্দীপনা ও উত্তেজনা নিয়ে সংস্কার উদ্যোগ শুরু হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, ‘যে উদ্দীপনা, উত্তেজনা নিয়ে আমরা সংস্কারের প্রক্রিয়া শুরু করেছিলাম সরকারের উদ্যোগে, সরকারের আহ্বানে—সেই উদ্যোগ বা উদ্দীপনা কোথায় যেন ম্রিয়মাণ হয়ে গেল।’
আজ সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’ ওয়েবসাইটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ম্রিয়মাণ হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কতগুলো অভিজ্ঞতা হয়েছে। আসলে নকশা করা যত কঠিন, বাস্তবায়ন করা অত সহজ না। অতীতে প্রতিযোগিতাহীন রাজনীতির কারণে দেশে প্রতিযোগিতাহীন অর্থনীতির সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে যে উন্নয়ন বয়ান দাঁড় করানো হয়েছিল, তা অনেক ক্ষেত্রেই অতিরঞ্জিত ছিল এবং অংশগ্রহণমূলক ছিল না।
সাধারণ মানুষ সেই উন্নয়নের পূর্ণ সুবিধা সব সময় পায়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দেবপ্রিয় বলেন, ‘একপর্যায়ে দেশে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর উত্থান ঘটে, যারা ক্রনি ক্যাপিটালিজম বা চামচা পুঁজিবাদ থেকে লুটপাতন্ত্রের দিকে দেশকে ঠেলে দেয়। এর ফলে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে নীতি প্রণয়নের যে ক্ষমতা থাকা উচিত, তা ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে যায়।
২৪-এর নাগরিক ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেই অভিজ্ঞতা সংস্কারের প্রশ্নকে আবার সামনে নিয়ে এসেছে। কীভাবে সংস্কারের মাধ্যমে সংস্কারবিরোধী চক্র ভাঙা যায় এবং গণপক্ষে অর্থনীতি ও সমাজনীতি পরিচালনা করা যায়—এটাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ।’
সংস্কার প্রক্রিয়ার দুর্বলতা তুলে ধরে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ক্ষেত্রে যে পরিমাণ স্বচ্ছতা, তথ্য-উপাত্তের ধারাবাহিকতা এবং যোগাযোগ দরকার ছিল, তা সব সময় বজায় রাখা হয়নি। সরকারের ভেতরে সমন্বয়ের ঘাটতি ছিল এবং অংশীজনদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রেও পর্যাপ্ত উদ্যোগ দেখা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘শুধু সংস্কারের নকশা করলেই হয় না। নাগরিকদের সচেতন অংশগ্রহণ ছাড়া সংস্কার অসম্পূর্ণ থেকে যায়। সেই সুযোগে স্বার্থের গোষ্ঠী সংস্কারকে কুক্ষিগত করে ফেলতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত মানুষের পক্ষে যায় না।’







