প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ পরিবর্তন করে গণভোটের তারিখ আলাদাভাবে ঘোষণার দাবি ৮ দলের

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক :  একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে ভাষণ দিয়েছেন সেটা পরিবর্তন করে অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের আগে আলাদাভাবে গণভোটের তারিখ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ আন্দোলনরত ৮ দল।

একইসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টাকে ভুল বুঝিয়ে বিভ্রান্তি ও জটিলতা সৃষ্টি করছেন-এমন কমপক্ষে তিন উপদেষ্টাকে অপসারণ এবং প্রশাসনে নিরপেক্ষ, সৎ ও জবাবদিহির আওতায় থাকা লোকদের নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের এ দাবি জানান। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জুলাই সনদের বিষয়ে যে আদেশ দিয়েছেন, সেটা গ্রহণ করি কিন্তু সংস্কার কমিশন যেভাবে সুপারিশ দিয়েছিল সেটার ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন-সেটার আপত্তি জানাচ্ছি।

ডা. তাহের বলেন, ১৬ তারিখে আট দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক আছে। সেখান থেকে সার্বিক করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে আগের কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা বাদে সারা দেশে বিক্ষোভ হচ্ছে। তবে যমুনার সামনে তাদের কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

জামায়াতের এই নেতা বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোনো অন্যায়ের কাছে মাথানত না করে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি অটল থেকে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু সরকার সরকারের নিযুক্ত কমিশনের সুপারিশই পুরোপুরি গ্রহণ করেনি। তারা একটি বিশেষ দলের স্বার্থে অনেক পরিবর্তন করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে জাতি জনগণ অনেক হতাশ হয়েছে।

তিনি বলেন, একটা প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। কারণ বিএনপি কখনো অধ্যাদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চায়নি। ড. ইউনূস সেই আদেশ দিয়েছেন। এজন্য ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু কমিশনের সুপারিশ পুরোপুরি না রেখে দিয়েছেন। তারপরও যতটুকু রেখে আদেশ দিয়েছেন, আমরা তা গ্রহণ করছি।

তিনি বলেন, গণভোটে চারটা পয়েন্ট বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে জনগণকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে। একটি দল নোট অব ডিসেন্টকে হ্যাঁ বা না ভোটে রাখার আবদার করেছিল। সরকার বিএনপির নোট অব ডিসেন্টকে অ্যাকোমোডেট করার জন্যই অন্যায়ভাবে এই চারটা ভাগে ভাগ করে হ্যাঁ-না ভোটে দিয়েছে। বাধ্যবাধকতার পয়েন্ট থেকেও সরকার সরে এসে বিএনপির দাবিই পূরণ করেছে।

ডা. তাহের বলেন, পুরো জাতিই চেয়েছিল গণভোট আলাদাভাবে হোক। বিভিন্ন অনলাইন জরিপেও ৮০ শতাংশ লোক আলাদাভাবে গণভোট চেয়েছে। একটি বড় দল একসঙ্গে চেয়েছে। কারণ হলো-বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের মতো একটি দলের বিপক্ষে গিয়েছে। আওয়ামী লীগ বিতাড়নের পেছনে যেসব কারণ ছিল, জুলাই বিপ্লবে আওয়ামী লীগ বিতাড়নের পর একটি দলের আচরণে সেই একই চিত্র ফুটে উঠেছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আওয়ামী বিরোধী মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে। এজন্য বিএনপি চেয়েছে একসঙ্গে গণভোট হোক।

তিনি বলেন, গণভোট হচ্ছে সংস্কার ইস্যুতে। আর জাতীয় নির্বাচন সরকার গঠনের জন্য। দুটো আলাদা জিনিস। একই দিনে গণভোট হলে তাতে খুব কম লোক আগ্রহ দেখাবে। ভোট কম হলে বিএনপি চাইবে সংস্কার না হোক। এটা একটা ফাঁদ। সরকার বুঝে না বুঝে, ইচ্ছা-অনিচ্ছায় সেই ফাঁদে পা দিয়েছে। আগেও এ সরকার এই দলটির প্রতি নানাভাবে আনুগত্য বা দুর্বলতা দেখিয়েছে। সেটা শুরু হয়েছে লন্ডনে গিয়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা এবং আলোচনা না করেই নির্বাচনের রোডম্যাপ দেয়ার মধ্য দিয়ে। এ সরকার আর নিরপেক্ষ সরকার নয়। একটি দলের প্রতি আনুগত্যশীল সরকার।

ডা. তাহের বলেন, আমরা আট দল আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগেই জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এরং এজন্য কাজ করছি। কিন্তু যে কারণে বিগত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি, একইভাবে আরেকটি নির্বাচনের মহড়া চলছে কিনা, সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ সরকারের অধীনেও নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

তারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির বিষয়ে মনোযোগী নয়। কয়েকজন উপদেষ্টা দলীয় প্রশাসনে রূপ দিয়েছে। প্রশাসনের এ অবস্থা থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাগপা এবং ডেভেলেপমেন্ট পার্টির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» টাকার বস্তা নিয়ে স্বজনদের হাসিনা আগেই ভাগিয়ে দিয়েছেন: এ্যানি

» ভোলায় গ‌্যাস দে‌শের কা‌জে লাগা‌নো হ‌বে: শিল্প উপ‌দেষ্টা

» পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে যুবকে ছুরিকাঘাতে খুন

» জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আলাদা গণভোট এখন অসম্ভব: নুর

» অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত প্রধান উপদেষ্টার

» ভারতীয় শাড়ি পাচারের সময় ৩জন আটক

» গণভোটে আইন প্রণয়ন হয়ে যাবে না, সেজন্য সংসদ গঠিত হতে হবে : সালাহউদ্দিন

» আয়ারল্যান্ডকে ইনিংস ও ৪৭ রানে হারাল বাংলাদেশ

» জেমস ও পাকিস্তানের আলী আজমতের কনসার্ট স্থগিত

» পরমাণু সাবমেরিন তৈরির ব্যাপারে সম্মত দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ পরিবর্তন করে গণভোটের তারিখ আলাদাভাবে ঘোষণার দাবি ৮ দলের

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক :  একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে ভাষণ দিয়েছেন সেটা পরিবর্তন করে অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের আগে আলাদাভাবে গণভোটের তারিখ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ আন্দোলনরত ৮ দল।

একইসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টাকে ভুল বুঝিয়ে বিভ্রান্তি ও জটিলতা সৃষ্টি করছেন-এমন কমপক্ষে তিন উপদেষ্টাকে অপসারণ এবং প্রশাসনে নিরপেক্ষ, সৎ ও জবাবদিহির আওতায় থাকা লোকদের নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের এ দাবি জানান। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জুলাই সনদের বিষয়ে যে আদেশ দিয়েছেন, সেটা গ্রহণ করি কিন্তু সংস্কার কমিশন যেভাবে সুপারিশ দিয়েছিল সেটার ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন-সেটার আপত্তি জানাচ্ছি।

ডা. তাহের বলেন, ১৬ তারিখে আট দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক আছে। সেখান থেকে সার্বিক করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে আগের কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা বাদে সারা দেশে বিক্ষোভ হচ্ছে। তবে যমুনার সামনে তাদের কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

জামায়াতের এই নেতা বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোনো অন্যায়ের কাছে মাথানত না করে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি অটল থেকে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু সরকার সরকারের নিযুক্ত কমিশনের সুপারিশই পুরোপুরি গ্রহণ করেনি। তারা একটি বিশেষ দলের স্বার্থে অনেক পরিবর্তন করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে জাতি জনগণ অনেক হতাশ হয়েছে।

তিনি বলেন, একটা প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। কারণ বিএনপি কখনো অধ্যাদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চায়নি। ড. ইউনূস সেই আদেশ দিয়েছেন। এজন্য ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু কমিশনের সুপারিশ পুরোপুরি না রেখে দিয়েছেন। তারপরও যতটুকু রেখে আদেশ দিয়েছেন, আমরা তা গ্রহণ করছি।

তিনি বলেন, গণভোটে চারটা পয়েন্ট বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে জনগণকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে। একটি দল নোট অব ডিসেন্টকে হ্যাঁ বা না ভোটে রাখার আবদার করেছিল। সরকার বিএনপির নোট অব ডিসেন্টকে অ্যাকোমোডেট করার জন্যই অন্যায়ভাবে এই চারটা ভাগে ভাগ করে হ্যাঁ-না ভোটে দিয়েছে। বাধ্যবাধকতার পয়েন্ট থেকেও সরকার সরে এসে বিএনপির দাবিই পূরণ করেছে।

ডা. তাহের বলেন, পুরো জাতিই চেয়েছিল গণভোট আলাদাভাবে হোক। বিভিন্ন অনলাইন জরিপেও ৮০ শতাংশ লোক আলাদাভাবে গণভোট চেয়েছে। একটি বড় দল একসঙ্গে চেয়েছে। কারণ হলো-বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের মতো একটি দলের বিপক্ষে গিয়েছে। আওয়ামী লীগ বিতাড়নের পেছনে যেসব কারণ ছিল, জুলাই বিপ্লবে আওয়ামী লীগ বিতাড়নের পর একটি দলের আচরণে সেই একই চিত্র ফুটে উঠেছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আওয়ামী বিরোধী মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে। এজন্য বিএনপি চেয়েছে একসঙ্গে গণভোট হোক।

তিনি বলেন, গণভোট হচ্ছে সংস্কার ইস্যুতে। আর জাতীয় নির্বাচন সরকার গঠনের জন্য। দুটো আলাদা জিনিস। একই দিনে গণভোট হলে তাতে খুব কম লোক আগ্রহ দেখাবে। ভোট কম হলে বিএনপি চাইবে সংস্কার না হোক। এটা একটা ফাঁদ। সরকার বুঝে না বুঝে, ইচ্ছা-অনিচ্ছায় সেই ফাঁদে পা দিয়েছে। আগেও এ সরকার এই দলটির প্রতি নানাভাবে আনুগত্য বা দুর্বলতা দেখিয়েছে। সেটা শুরু হয়েছে লন্ডনে গিয়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা এবং আলোচনা না করেই নির্বাচনের রোডম্যাপ দেয়ার মধ্য দিয়ে। এ সরকার আর নিরপেক্ষ সরকার নয়। একটি দলের প্রতি আনুগত্যশীল সরকার।

ডা. তাহের বলেন, আমরা আট দল আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগেই জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এরং এজন্য কাজ করছি। কিন্তু যে কারণে বিগত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি, একইভাবে আরেকটি নির্বাচনের মহড়া চলছে কিনা, সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ সরকারের অধীনেও নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

তারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির বিষয়ে মনোযোগী নয়। কয়েকজন উপদেষ্টা দলীয় প্রশাসনে রূপ দিয়েছে। প্রশাসনের এ অবস্থা থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাগপা এবং ডেভেলেপমেন্ট পার্টির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com