সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে সরাকারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েও লাভ হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু।
তিনি বলেন, আমরা আগেও প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি, তাতেও কোনো কাজ হয়নি। তবে আমরা হতাশ হতে চাই না, একদিন সাগর-রুনি হত্যার বিচার পাবো।
শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় ডিআরইউ প্রাঙ্গণে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, আমাদের দাবি ও স্মারকলিপি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবারও দেবো। আমরা তাদের একটি ডেটলাইন দিতে বলবো, আসলে কত দিনের মধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারবেন।
সাংবাদিক সংগঠনগুলোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের যেসব সাংবাদিক সংগঠন আছে তারা আজকে অন্তত একটা কর্মসূচি দিতে পারতো। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাণের তাগিদেই এই কর্মসূচি একের পর এক দিয়ে যাচ্ছে। এটা শুধু সাগর-রুনির ক্ষেত্রে না, অন্য যে কোনো সাংবাদিকের ক্ষেত্রে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কথা বলে।
ডিআরইউ সভাপতি আরও বলেন, আমরা সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে সোচ্চার আছি এবং থাকবো। আমরা নিশ্চিত যে একদিন এই বিচার পাবো। আমরা হতাশ হতে চাই না, আমরা চাই বাংলাদেশ সরকার তার নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করবে।
অনুষ্ঠানে মাছরাঙা টেলিভিশনের চিফ নিউজ এডিটর রাশেদ আহমেদ বলেন, আমরা আশা ছাড়তে চাই না। আমরা বিশ্বাস করি রাষ্ট্র এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করবে। তদন্ত প্রতিবেদনে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে তাদের নাম আমাদের সামনে প্রকাশ করতে আহ্বান জানাই।
সাগর-রুনির হত্যাকারীরা এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, সাংবাদিক পেশার দুজন মানুষকে এক দশক আগে হত্যা করা হয়েছে। আদালত যদি এ বিচারের দিকে সুদৃষ্টি দেয় তবে সারা দেশের মানুষের প্রত্যাশার বিচার দ্রুত শেষ হবে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলাম খান তপু বলেন, ২০১২ সালের এ দিনে সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি খুন হন। ওই বছর আমাদের প্রতিবাদের বছর ছিল। সারা দেশে দলমত নির্বিশেষে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল সেটির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এ ডিআরইউ। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমরা সেই বিচার পাইনি। দফায় দফায় তদন্ত প্রতিবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে ৮৫ বার। হয়তো কয়েক দিন পরে সেটি ১০০ পার হয়ে যাবে। সেটি না করে দ্রুত আমরা বিচার চাই।
ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব শেখ মামুন বলেন, সবাই বলেন অনুসন্ধানী সাংবাদিতা করার কথা। সেদিনও আমরা বলেছিলাম, যেই দুটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাগর ও রুনি কাজ করতেন, সেই দুটি চ্যানেলসহ আমরা সবাই এ হত্যাকাণ্ডকে নানাভাবে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করেছি। সাগর-রুনি হত্যা, মানিক সাহা, বালু হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। কেন হয়নি?- এ প্রশ্নের জবাব রাষ্টের কাছে চাই।
প্রতিবাদ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিবসহ অন্যান্য সাংবাদিক নেতারা।