২০২৫ সাল শেষের দিকে, বাংলাদেশের তরুণ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা ও ডিভাইস সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ স্পষ্টভাবে বেড়েছে এই বছরে। শিল্প পর্যবেক্ষণ ও আন্তর্জাতিক ডিজিটাল নিরাপত্তা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এখন স্মার্টফোন শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়—পড়াশোনা, আর্থিক লেনদেন, কাজকর্ম ও বিনোদনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠায় নিরাপদ ব্যবহার নিয়ে সচেতনতাও বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক সাইবার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, স্মার্টফোন চুরি, অনলাইন প্রতারণা (ফিশিং) এবং ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা ঝুঁকি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দ্রুত বাড়ছে। বাংলাদেশে তরুণরাই যেহেতু মোবাইল ইন্টারনেটের বড় অংশ ব্যবহার করেন, তাই অনিরাপদ চার্জিং অভ্যাস ও দুর্বল প্রাইভেসি নিয়ন্ত্রণ দীর্ঘমেয়াদে ডিভাইসের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এই বাস্তবতায় দেশে কার্যরত স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোও ডিজিটাল সুরক্ষা ও দায়িত্বশীল ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে জোর দিচ্ছে। তারুণ্য নির্ভর প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স জানিয়েছে, ২০২৫ জুড়ে বিভিন্ন শ্রেণির তরুণ ব্যবহারকারীদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে তারা ডিভাইস নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি উদ্বেগ লক্ষ্য করেছে।
বছরজুড়ে পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, তরুণরা এখন স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন মোবাইল ব্যাংকিং, ডিজিটাল ওয়ালেট, অনলাইন ক্লাস ও গেমিং প্ল্যাটফর্মে আগের চেয়ে অনেক বেশি। টেলিকম ও ফিনটেক খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই বাড়তি নির্ভরতা ব্যবহারকারীদের শুধু ক্যামেরা বা পারফরম্যান্স নয়, বরং ডেটা সুরক্ষা, ব্যক্তিগত ফাইল নিরাপত্তা এবং অ্যাপের অনুমতি নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়গুলোতেও গুরুত্ব দিতে বাধ্য করছে।
খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, স্মার্টফোন কেনার সময় এখন ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ও আলোচনা আগের চেয়ে বেশি হচ্ছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি ব্যবহারকারীদের আচরণে একটি পরিবর্তনের ইঙ্গিত—যেখানে ব্যক্তিগত তথ্য, আর্থিক ডেটা এবং ডিভাইসের দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে।
এই প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ডিজিটাল সুরক্ষা বিষয়ক সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করছে। ইনফিনিক্সের মতে, চুরি সতর্কতা ব্যবস্থা, নিরাপদ ফাইল সংরক্ষণ, ডিভাইস প্রোটেকশন মোড, শক্তিশালী সিস্টেম সিকিউরিটি এবং নিরাপদ চার্জিং প্রযুক্তির মতো ফিচারগুলো সচেতন ব্যবহার অভ্যাসের সঙ্গে মিললে দৈনন্দিন ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শুধু প্রযুক্তি থাকলেই নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় না। নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট রাখা, সন্দেহজনক অ্যাপ এড়িয়ে চলা, অপ্রয়োজনীয় অনুমতি সীমিত করা এবং বিশেষ করে রাতের বেলায় নিরাপদ চার্জিং অভ্যাস—এসবই ঝুঁকি কমানোর কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত।
বাংলাদেশে ডিজিটাল জীবনযাত্রা যত বিস্তৃত হচ্ছে, স্মার্টফোন সুরক্ষা নিয়ে সচেতনতার গুরুত্ব ততই বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ২০২৫ সালের অভিজ্ঞতা বলছে, নিরাপদ প্রযুক্তির পাশাপাশি সচেতন ব্যবহারই আগামী দিনে তরুণদের ডিজিটাল জীবনকে আরও নিরাপদ রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।








