সংগৃহীত ছবি
সন্তানধারণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো প্রজনন ক্ষমতা বা ফার্টিলিটি
লাইফস্টাইল ডেস্ক : সন্তানধারণের পরিকল্পনা করার সঙ্গে সঙ্গেই সফল হয়েছেন এমন সৌভাগ্য সবার হয় না। কারণ এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। যার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে অনেকরকম শারীরিক শর্ত। একজন নারী সন্তানধারণ করতে পারবেন কি না তার জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো তার প্রজনন ক্ষমতা বা ফার্টিলিটি।
সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে অবশ্যই পুরুষের প্রজনন ক্ষমতাও ভূমিকা রাখে। তবে নারীদের ভূমিকা বেশি। একজন নারী চাইলে তার প্রজনন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারে। এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন হলো ঋতুস্রাব বা পিরিয়ডের দ্বিতীয় দিন। এমনটাই বলছেন চিকিৎসক।

চিকিৎসকের মতে, হরমোনের ভারসাম্য থেকে শুরু করে ডিম্বাশয় এবং ডিম্বাণুর স্বাস্থ্য— সবকিছুই জানা যায় মাসিকের দ্বিতীয় দিনে।
সাধারণত পিরিয়ডের দ্বিতীয় দিনটিতে নানা ধরনের যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় নারীদের। পেটের যন্ত্রণা, মেজাজ খারাপ হওয়া, হজমের সমস্যা, পেট খারাপ হওয়ার মতো সমস্যা লেগেই থাকে। তবে এর বাইরেও শারীরিক দিক থেকে এই দিনটির গুরুত্ব রয়েছে। এই কারণেই প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির নানারকম চিকিৎসার জন্যও এই বিশেষ দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়।

পিরিয়ডের দ্বিতীয় দিন কী করতে হবে?
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বলছেন, সন্তানের জন্য পরিকল্পনা করলে অনেকেই গাইনি চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন। তবে এক্ষেত্রে কয়েকটি কাজ আপনি চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগেই এগিয়ে রাখতে পারেন। ঋতুস্রাবের দ্বিতীয় একটি অ্যান্ট্রাল ফলিকল কাউন্টের (Antral Follicle Count) পরীক্ষা করান। একই সঙ্গে হরমোনের স্বাস্থ্যও পরীক্ষা করান।
এই পরীক্ষা করানোর আগে ৮ ঘণ্টা না খেয়ে থাকুন। অর্থাৎ সকালে খালি পেটে এই পরীক্ষা করাতে হয়।

অ্যান্ট্রাল ফলিকল কী?
ডিম্বাশয়ের ভেতরে থাকা একটি ক্ষুদ্র তরল-ভরা থলি হলো অ্যান্ট্রাল ফলিকল। একটি একক ডিম্বাশয়ে একাধিক ফলিকল থাকে যার মাধ্যমে প্রতি মাসে মাসিকের সময় ডিম নির্গত হয়।
ডিম্বস্ফোটনের সময়, অ্যান্ট্রাল ফলিকলগুলো সর্বোত্তম সময় থাকে। এসময় ডিম পরিপক্ক থাকে এবং মুক্তির জন্য সহায়ক থাকে। প্রতিটি ঋতুচক্রে অনেক অ্যান্ট্রাল ফলিকল এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। কিন্তু সাধারণত মাত্র একটি ফলিকল সফলভাবে একটি ডিম্বাণু বের করে। মাঝে মাঝে, একাধিক পরিপক্ক ডিম নিঃসৃত হয়, যা যমজ সন্তান ধারণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

ডিম্বস্ফোটন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর, অ্যান্ট্রাল ফলিকল একটি কর্পাস লুটিয়ামে পরিণত হয় (ডিম্বাশয়ের অস্থায়ী অঙ্গ)। প্রতিটি অ্যান্ট্রাল ফলিকলের ভেতরে একটি করে গহ্বর থাকে, যাকে অ্যান্ট্রাম বলা হয়। অ্যান্ট্রামের আকার অ্যান্ট্রাল ফলিকলের সামগ্রিক আকার নির্ধারণ করে। আল্ট্রাসাউন্ডের সময় প্রায় ১-২ মিমি ব্যাসের একটি অ্যান্ট্রাল ফলিকল সহজেই দেখা যায় এবং গণনা করা যায়।
অ্যান্ট্রাল ফলিকল কাউন্ট কী?
অ্যান্ট্রাল ফলিকলের গণনা ডিম্বাশয়ে থাকা ফলিকলের সংখ্যা পরিমাপ করে। একটি চলমান মাসিক চক্রের সময় ট্রান্সভ্যাজাইনাল আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে এটি গণনা সনাক্ত করা যেতে পারে। বিশেষ করে পিরিয়ডের ২য় থেকে ৪র্থ দিনের মধ্যে।

অ্যান্ট্রাল ফলিকল কাউন্ট ডিম্বাশয়ের রিজার্ভের অবস্থা নির্ধারণ করে না তবে আপনার সন্তানধারণের সম্ভাবনা কতটুকু আছে তা এটি নির্ধারণ করে।
পিরিয়ডের দ্বিতীয় দিন কী কী পরীক্ষা করাতে হবে?
অ্যান্ট্রাল ফলিকল কাউন্ট জানার জন্য ট্রান্সভ্যাজাইনাল আল্ট্রাসাউন্ড, অ্যান্টি মুলেরিয়ান হরমোনের পরীক্ষা, লিউটেনাইজিং হরমোনের পরীক্ষা, ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোনের পরীক্ষা করাতে হয়। এছাড়া রাতে ভালোভাবে ঘুমানোর পরে সকাল ১১টার সময় প্রোল্যাকটিনের পরীক্ষাও করাতে পারেন।
এই পরীক্ষাগুলোর ফলাফল বলে দেবে, একজন নারীর প্রজননের স্বাস্থ্য কী অবস্থায় রয়েছে।







