ফাইল ছবি
অনলাইন ডেস্ক : সারাদেশের বাজারে সবজির দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রেতাদের হাঁসফাঁস অবস্থা। ভোক্তাদের অভিযোগ— প্রতিদিন বাজারে গেলে নতুন ধাক্কা খেতে হচ্ছে। এক সময় সাধারণ মানুষের নিয়মিত খাদ্যতালিকার অংশ হিসেবে থাকা সবজি এখন যেন বিলাসপণ্যে পরিণত হয়েছে।
আজ শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও শ্যামপুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, করলা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। ঢেড়শের দাম কেজি প্রতি ১০০ থেকে ১১০ টাকা। কাঁকরোল, বেগুন, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, ঝিঙে ৮০ থেকে ৯০ টাকা, শিম ও টমেটো ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছুটা কমের মধ্যে রয়েছে পেঁপে, আলু। যদিও আলুর দাম আগের তুলনায় কেজি প্রতি পাঁচ টাকা বেড়েছে।
এছাড়া কচুরমুখী ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। গাজর ১৬০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা, শালগম ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মিষ্টি কুমড়ার দাম কেজিতে অন্তত ১০ টাকা বেড়ে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধনেপাতা প্রতিকেজি ১৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা।
বাজারে সবজি কিনতে আসা ক্রেতা সেলিনা আক্তার ঢাকা মেইলকে বলেন, এক সময় ২০০ টাকায় তিন-চার রকম সবজি কেনা যেত। এখন ৫০০ টাকা নিয়েও বাজারে ঢুকলে কিছুই হয় না। করলা আর ঢেড়শ যেন এখন সোনার দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দামের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আবদুল মালেক বলেন, সবজির দাম এত বেশি, এখন ভাত খাই তরকারি ছাড়া। সরকারের উচিৎ বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা।
এদিকে বিক্রেতাদের দাবি, মৌসুম পরিবর্তন ও খরচ বৃদ্ধি দামের ওপর প্রভাব ফেলছে। যাত্রাবাড়ী আড়তের সবজি ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন ঢাকা মেইলকে বলেন, গ্রামে এখন ফসল কম, পরিবহন খরচও বেড়েছে। আমাদের হাতেও জিনিস আসে বেশি দামে, তাই বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে।
ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলোর মতে, কেবল মৌসুম ও পরিবহন খরচকে দায়ী করলে চলবে না। বাজারে যথাযথ তদারকি নেই, আর সরবরাহে সামান্য ঘাটতি হলেই ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়ে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়িয়ে দেন।
ভোক্তা অধিকার কর্মী মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতিবার একই অজুহাত দেখিয়ে ক্রেতাদের পকেট খালি করা হয়। কৃষক উৎপাদন পর্যায়ে যে দাম পাচ্ছে আর ক্রেতারা যে দামে কিনছে, তার মধ্যে বিপুল পার্থক্য। এর দায় নিয়ন্ত্রণহীন বাজারব্যবস্থার।
তার অভিযোগ কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মাঝে মধ্যে বাজার মনিটরিংয়ের কথা বললেও বাস্তবে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বাজারে সরবরাহ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা ও অযৌক্তিক মুনাফা রোধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ভোক্তাদের দুঃসহ অবস্থা কাটবে না।