মালা

সাখাওয়াত হোসেন সুজন: নিজের থেকে ১১ বছরের ছোট ছেলেটিকেই খুশি মনে বিয়ে করলো মালা। বয়স যখন পঁয়ত্রিশের ঘর পেরিয়ে ৪০ এর দিকে তীব্র গতিতে ছুটে চলছে তখন তাকে এমন সিদ্ধান্ত নিতেই হলো। বয়সকালে বর পাওয়া কঠিন। তার উপর মৃগী বেরামসহ হিংস্রতার অভিযোগতো আছেই। আগে বছরে একবার মাসখানেকের জন্য তার এ রোগ দেখা যেত। এ সময় কখনও বাঁশঝাড়ে কখনও পুকুরপাড়ে কাটা মুরগির মতো ছটফট করতে থাকে সে। কোনো কোনো সময় পায়খানা-প্রস্রাবে একাকার করে সব। মাঝে মাঝে পরনের কাপড়গুলোও খুলে ফেলে। ছোটকালে এটা তেমন কোনো সমস্যা ছিল না। সমস্যাটা তখনই হলো যখন তার বাড়ন্ত বয়স। পাড়ার সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তিটিও লোলুপ দৃষ্টিতে তাকায়। এজন্য পরিবার খুব সতর্ক। এখন যদিও চিকিৎসার ফলে বছর বছর রোগটা দেখা যায় না। দুই থেকে তিন বছর পর পর ওঠে। মৃগী বেরাম দেখা দিলেই তাকে কত ধরনের দুর্গন্ধই না শুকানো হয়। কখনও মানুষের মল কিংবা মুরগির বিষ্ঠা কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত জুতা, মোজা অথবা স্যান্ডেল। এর ফলে কিছুটা সম্বিৎ ফেরে তার। এরপর টানা কয়েকদিন ওষুধ খাওয়ালে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়।

রোগের কথা ভাবলে তাকে যতটা দুর্বল নারী মনে হয় আসলে সে ততটা দুর্বল নয়। মারাত্মক হিংস্র। গ্রামের একটা জমি নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে বিরোধ আছে তাদের। মালার কারণে সেই জমিতে পা পর্যন্ত ফেলতে পারে না শত্রুরা। বেশ কয়েকবার শত শত ভাড়াটে মাস্তান এনে জমিটা দখলের চেষ্টা করে প্রতিপক্ষ। তখন এক মালাই তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। শত্রুদের তীর-ধনুক, টেঁটা-বল্লমের ভিড়ে তার লাঠিই যথেষ্ট। তারা জমি দখলের জন্য মাঠে নামলেই মালার রুদ্র রূপ দেখা যায়। খালি হাতেই জমির দিকে ছুটে সে। যাবার পথে নিজেদের হোক আর অন্য কারও হোক বাঁশের বেড়া থেকে দুটো খুঁটি নিমেষেই তুলে নেয়। দুই হাতে যেন লাঠির ঘূর্ণিঝড় ওঠে। পাড়ার লোক মজা করে দেখে এ দৃশ্য। শত শত সামর্থ্যবান পুরুষকে পিটিয়ে শুইয়ে ফেলে সে। তীর-বল্লম, ছুরি-তলোয়ার ফেলে পালায় তারা। তাদের অস্ত্রেই তাদেরকে ধরাশায়ী করে মালা। পাড়ার বয়স্ক হিন্দু নারীরা এ দৃশ্য দেখে দূর থেকে প্রণাম করে মালাকে। তারা বলে ঠিক এই মুহূর্তে মা কালী তার উপর ভর করে, তা না হলে অবলা নারীর এমন সবল রূপ রীতিমতো অসম্ভব। লড়াই শেষে মাঠশূন্য করে জমির আইলের মধ্যে বসে জোরে জোরে শ্বাস নেয় সে। পানির পাত্র নিয়ে ছুটে আসে মা-বাবা। জগভর্তি পানি সাবাড় করে উঠে বাড়ির দিকে চলে যায় মালা। যেন কিছুই হয়নি! এমন ঘটনা মাসের পর মাস পুরো এলাকার মানুষের আলোচনার বিষয় হয়।

 লড়াই শেষে মাঠশূন্য করে জমির আইলের মধ্যে বসে জোরে জোরে শ্বাস নেয় সে। পানির পাত্র নিয়ে ছুটে আসে মা-বাবা। জগভর্তি পানি সাবাড় করে উঠে বাড়ির দিকে চলে যায় মালা। যেন কিছুই হয়নি! এমন ঘটনা মাসের পর মাস পুরো এলাকার মানুষের আলোচনার বিষয় হয়।

আজ সেই জমিটাই বেদখল! কয়েক বছরের চেষ্টায় শত্রুপক্ষ সুযোগ নেয় ঠিকই। তারা ঠিক সেই সময় জমিটা দখল করে যে সময় মালার মৃগীর বেরাম ওঠে। জমি দখলের দৃশ্যটা দেখে সবাই অবাক হয়। সকালে যে জমির এক কোণে একটা কুঁড়েঘর ছিল সেই জায়গাটা এখন পুকুর। জমির ঠিক মাঝখানে একটা বাড়ি উঠেছে। সেই বাড়ির চারপাশে অনেক কলাগাছ। কিছু কিছু ফলের গাছও আছে। এমনকি উঠোনে দেখা যায় ফলন্ত আমের গাছ। কলম করা আমগাছ, যেন কয়েক বছর ফল দিচ্ছে। শত শত লোকের সুচারু কাজ! বিস্ফারিত নেত্রে সেদিকে তাকিয়ে থাকে গ্রামের লোকজন। সবার মুখে এক কথা- ‘মালা যদি সুস্থ থাকতো’।

সবাই ভেবে নিয়েছিল এমন মেয়ের বিয়ে অসম্ভব! কিন্তু বিয়েটা হলো, ছেলেটাও ভালো, ব্যবসায়ী। ভাগ্যটা খারাপ মালার ছোট বোন রুপার। কাছাকাছি বয়সের সেই বোনটির বিয়ে প্রথমে আটকে ছিল বড় বোনের কারণে, এরপর এক দুঃসম্পর্কের দুলাভাইয়ের কুটচালে। তার কারণে রুপার জন্য আসা প্রতিটা সম্বন্ধই নষ্ট হয়ে যেত। বিষয়টা আবিষ্কারের পর রুপা একদিন সেই দুলাভাইয়ের ঘরে গিয়েই ওঠে। বিয়ের দাবিতে অনশনে বসে। তার সোজা কথা- ‘অন্য কোথাও বিয়ে হতে দিবি না তো, তুই নিজে বিয়ে কর। না হলে এখানেই বিষ খাবো।’ সেই লোকের সরলা স্ত্রীও মহাবিপাকে।

অবস্থা বেগতিক দেখে পাড়ার মুরব্বিরা সেই বউ-বাচ্চাওয়ালা ব্যক্তির সঙ্গেই রুপার বিয়ে দেয়। এমনটা করার কারণ পাড়ার দু-একজন নারী তার কাছে জানতে চেয়েছিল। সে সোজা-সাপ্টা জবাব দেয়, ‘এই হারামজাদার কারণে যৌবন শুকিয়ে গেলেও বিয়ে হতো না। বুড়ি হতে আর বেশি দেরি নেই, তাই বিয়ে করলাম। তার বউ-বাচ্চা যাই থাক, মাঝে মাঝে একটু সোহাগতো করবে!’

মালার আরও দুটো ভাই আছে। একজন তার ছোট, আরেকজন সমবয়সী। ছোট ভাই রবিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে দূরে এক পতিতার বাড়িতে ঘন ঘন যাতায়াতের। তার বড় রিপনের বিরুদ্ধেও অমন অভিযোগ ছিল। যদিও এখন সে বিবাহিত। একবার সে পাগল হয়েছিল, বিয়ের জন্য। বিয়েপাগলা ছেলেকে বাবা এক রাত্রের মধ্যেই পাত্রী খুঁজে তার বিয়ে দেয়। কিন্তু একটি সন্তান হয়ে গেলেও তার বিরুদ্ধে আছে আরেক অভিযোগ। আর সে অভিযোগটি করেছে স্বয়ং তার স্ত্রী। অনবরত দাম্পত্য কলহের কারণ জানতে চাইলে পরিবারের সবাইকে সে জানিয়ে দিয়েছে তার স্বামীর অক্ষমতার কথা। শাশুড়িকে সে জানায়, বিয়ের পর বছর পেরিয়ে সন্তান পৃথিবীতে এলেও একজন নারীর প্রত্যাশিত সুখ সে কখনই পায়নি। তাদের গোপন জীবন অনেকটা মোরগ-মুরগির মতো।
চারিত্রিক দুষ্কর্মই এমন রোগের কারণ বলে মন্তব্য করেন অনেকে। রিপনের স্ত্রী যদিও গো ধরেছে এই নাবালক স্বামীকে সেই সাবালক বানিয়ে ছাড়বে। চিকিৎসা চলছে, তাকেও তার অভ্যাস বদলাতে হবে।

অন্যদিকে রবিন বাঁধিয়েছে ভয়াবহ যৌনরোগ। সকালে সে যখন প্রস্রাব করতে বসে তখন পুরো পাড়া টের পায়। ভয়াবহ প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া। প্রস্রাবের সময় তার আর্তচিৎকারে কেউ হাসে কেউবা আবার কপালে ভাঁজ ফেলে, বাচ্চাগুলোরও ঘুম ভেঙে যায়। প্রতিবেশী যুবকদের মন্তব্য, ‘হারমাজাদা, আরও ঘন ঘন যা বেশ্যার বাড়ি।’

শ্বশুর বাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে আসা মালা এ দৃশ্য দেখে। এসব নিয়ে তেমন কোনো চিন্তা কিংবা দুশ্চিন্তা তাকে গ্রাস করে না। একটা প্রজন্ম এভাবেই চলে যাচ্ছে, আরেকটা প্রজন্ম পৃথিবীতে আসার অপেক্ষায় দিন গুনছে। সে এখন সন্তানসম্ভাবা। অনাগত সন্তানকে কীভাবে উচ্চতর মানুষ বানানো যাবে সে বিষয় নিয়েই অনবরত ভাবছে সে। মাঝে মাঝে লাথি মেরে পেটের শিশুও যেন এ কথাই তাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।  সূএ:জাগো নিউজ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আজকের খেলা

» অধিকার আদায়ে শেরে বাংলার অবদান কখনোই ভুলবার নয়: ফখরুল

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ৩৯ জন গ্রেপ্তার

» সরবরাহ থাকলেও কমছে না সবজির দাম, অস্বস্তি মাছ-মাংসের বাজারে

» ভারী বৃষ্টিপাতের পর তানজানিয়ায় বন্যা-ভূমিধস, নিহত অন্তত ১৫৫

» ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু

» সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২

» নদীতে ৪ নৌ চাঁদাবাজ আটক

» থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

» আজ শুক্রবার রাজধানীর যেসব এলাকা-মার্কেট বন্ধ

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মালা

সাখাওয়াত হোসেন সুজন: নিজের থেকে ১১ বছরের ছোট ছেলেটিকেই খুশি মনে বিয়ে করলো মালা। বয়স যখন পঁয়ত্রিশের ঘর পেরিয়ে ৪০ এর দিকে তীব্র গতিতে ছুটে চলছে তখন তাকে এমন সিদ্ধান্ত নিতেই হলো। বয়সকালে বর পাওয়া কঠিন। তার উপর মৃগী বেরামসহ হিংস্রতার অভিযোগতো আছেই। আগে বছরে একবার মাসখানেকের জন্য তার এ রোগ দেখা যেত। এ সময় কখনও বাঁশঝাড়ে কখনও পুকুরপাড়ে কাটা মুরগির মতো ছটফট করতে থাকে সে। কোনো কোনো সময় পায়খানা-প্রস্রাবে একাকার করে সব। মাঝে মাঝে পরনের কাপড়গুলোও খুলে ফেলে। ছোটকালে এটা তেমন কোনো সমস্যা ছিল না। সমস্যাটা তখনই হলো যখন তার বাড়ন্ত বয়স। পাড়ার সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তিটিও লোলুপ দৃষ্টিতে তাকায়। এজন্য পরিবার খুব সতর্ক। এখন যদিও চিকিৎসার ফলে বছর বছর রোগটা দেখা যায় না। দুই থেকে তিন বছর পর পর ওঠে। মৃগী বেরাম দেখা দিলেই তাকে কত ধরনের দুর্গন্ধই না শুকানো হয়। কখনও মানুষের মল কিংবা মুরগির বিষ্ঠা কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত জুতা, মোজা অথবা স্যান্ডেল। এর ফলে কিছুটা সম্বিৎ ফেরে তার। এরপর টানা কয়েকদিন ওষুধ খাওয়ালে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়।

রোগের কথা ভাবলে তাকে যতটা দুর্বল নারী মনে হয় আসলে সে ততটা দুর্বল নয়। মারাত্মক হিংস্র। গ্রামের একটা জমি নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে বিরোধ আছে তাদের। মালার কারণে সেই জমিতে পা পর্যন্ত ফেলতে পারে না শত্রুরা। বেশ কয়েকবার শত শত ভাড়াটে মাস্তান এনে জমিটা দখলের চেষ্টা করে প্রতিপক্ষ। তখন এক মালাই তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। শত্রুদের তীর-ধনুক, টেঁটা-বল্লমের ভিড়ে তার লাঠিই যথেষ্ট। তারা জমি দখলের জন্য মাঠে নামলেই মালার রুদ্র রূপ দেখা যায়। খালি হাতেই জমির দিকে ছুটে সে। যাবার পথে নিজেদের হোক আর অন্য কারও হোক বাঁশের বেড়া থেকে দুটো খুঁটি নিমেষেই তুলে নেয়। দুই হাতে যেন লাঠির ঘূর্ণিঝড় ওঠে। পাড়ার লোক মজা করে দেখে এ দৃশ্য। শত শত সামর্থ্যবান পুরুষকে পিটিয়ে শুইয়ে ফেলে সে। তীর-বল্লম, ছুরি-তলোয়ার ফেলে পালায় তারা। তাদের অস্ত্রেই তাদেরকে ধরাশায়ী করে মালা। পাড়ার বয়স্ক হিন্দু নারীরা এ দৃশ্য দেখে দূর থেকে প্রণাম করে মালাকে। তারা বলে ঠিক এই মুহূর্তে মা কালী তার উপর ভর করে, তা না হলে অবলা নারীর এমন সবল রূপ রীতিমতো অসম্ভব। লড়াই শেষে মাঠশূন্য করে জমির আইলের মধ্যে বসে জোরে জোরে শ্বাস নেয় সে। পানির পাত্র নিয়ে ছুটে আসে মা-বাবা। জগভর্তি পানি সাবাড় করে উঠে বাড়ির দিকে চলে যায় মালা। যেন কিছুই হয়নি! এমন ঘটনা মাসের পর মাস পুরো এলাকার মানুষের আলোচনার বিষয় হয়।

 লড়াই শেষে মাঠশূন্য করে জমির আইলের মধ্যে বসে জোরে জোরে শ্বাস নেয় সে। পানির পাত্র নিয়ে ছুটে আসে মা-বাবা। জগভর্তি পানি সাবাড় করে উঠে বাড়ির দিকে চলে যায় মালা। যেন কিছুই হয়নি! এমন ঘটনা মাসের পর মাস পুরো এলাকার মানুষের আলোচনার বিষয় হয়।

আজ সেই জমিটাই বেদখল! কয়েক বছরের চেষ্টায় শত্রুপক্ষ সুযোগ নেয় ঠিকই। তারা ঠিক সেই সময় জমিটা দখল করে যে সময় মালার মৃগীর বেরাম ওঠে। জমি দখলের দৃশ্যটা দেখে সবাই অবাক হয়। সকালে যে জমির এক কোণে একটা কুঁড়েঘর ছিল সেই জায়গাটা এখন পুকুর। জমির ঠিক মাঝখানে একটা বাড়ি উঠেছে। সেই বাড়ির চারপাশে অনেক কলাগাছ। কিছু কিছু ফলের গাছও আছে। এমনকি উঠোনে দেখা যায় ফলন্ত আমের গাছ। কলম করা আমগাছ, যেন কয়েক বছর ফল দিচ্ছে। শত শত লোকের সুচারু কাজ! বিস্ফারিত নেত্রে সেদিকে তাকিয়ে থাকে গ্রামের লোকজন। সবার মুখে এক কথা- ‘মালা যদি সুস্থ থাকতো’।

সবাই ভেবে নিয়েছিল এমন মেয়ের বিয়ে অসম্ভব! কিন্তু বিয়েটা হলো, ছেলেটাও ভালো, ব্যবসায়ী। ভাগ্যটা খারাপ মালার ছোট বোন রুপার। কাছাকাছি বয়সের সেই বোনটির বিয়ে প্রথমে আটকে ছিল বড় বোনের কারণে, এরপর এক দুঃসম্পর্কের দুলাভাইয়ের কুটচালে। তার কারণে রুপার জন্য আসা প্রতিটা সম্বন্ধই নষ্ট হয়ে যেত। বিষয়টা আবিষ্কারের পর রুপা একদিন সেই দুলাভাইয়ের ঘরে গিয়েই ওঠে। বিয়ের দাবিতে অনশনে বসে। তার সোজা কথা- ‘অন্য কোথাও বিয়ে হতে দিবি না তো, তুই নিজে বিয়ে কর। না হলে এখানেই বিষ খাবো।’ সেই লোকের সরলা স্ত্রীও মহাবিপাকে।

অবস্থা বেগতিক দেখে পাড়ার মুরব্বিরা সেই বউ-বাচ্চাওয়ালা ব্যক্তির সঙ্গেই রুপার বিয়ে দেয়। এমনটা করার কারণ পাড়ার দু-একজন নারী তার কাছে জানতে চেয়েছিল। সে সোজা-সাপ্টা জবাব দেয়, ‘এই হারামজাদার কারণে যৌবন শুকিয়ে গেলেও বিয়ে হতো না। বুড়ি হতে আর বেশি দেরি নেই, তাই বিয়ে করলাম। তার বউ-বাচ্চা যাই থাক, মাঝে মাঝে একটু সোহাগতো করবে!’

মালার আরও দুটো ভাই আছে। একজন তার ছোট, আরেকজন সমবয়সী। ছোট ভাই রবিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে দূরে এক পতিতার বাড়িতে ঘন ঘন যাতায়াতের। তার বড় রিপনের বিরুদ্ধেও অমন অভিযোগ ছিল। যদিও এখন সে বিবাহিত। একবার সে পাগল হয়েছিল, বিয়ের জন্য। বিয়েপাগলা ছেলেকে বাবা এক রাত্রের মধ্যেই পাত্রী খুঁজে তার বিয়ে দেয়। কিন্তু একটি সন্তান হয়ে গেলেও তার বিরুদ্ধে আছে আরেক অভিযোগ। আর সে অভিযোগটি করেছে স্বয়ং তার স্ত্রী। অনবরত দাম্পত্য কলহের কারণ জানতে চাইলে পরিবারের সবাইকে সে জানিয়ে দিয়েছে তার স্বামীর অক্ষমতার কথা। শাশুড়িকে সে জানায়, বিয়ের পর বছর পেরিয়ে সন্তান পৃথিবীতে এলেও একজন নারীর প্রত্যাশিত সুখ সে কখনই পায়নি। তাদের গোপন জীবন অনেকটা মোরগ-মুরগির মতো।
চারিত্রিক দুষ্কর্মই এমন রোগের কারণ বলে মন্তব্য করেন অনেকে। রিপনের স্ত্রী যদিও গো ধরেছে এই নাবালক স্বামীকে সেই সাবালক বানিয়ে ছাড়বে। চিকিৎসা চলছে, তাকেও তার অভ্যাস বদলাতে হবে।

অন্যদিকে রবিন বাঁধিয়েছে ভয়াবহ যৌনরোগ। সকালে সে যখন প্রস্রাব করতে বসে তখন পুরো পাড়া টের পায়। ভয়াবহ প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া। প্রস্রাবের সময় তার আর্তচিৎকারে কেউ হাসে কেউবা আবার কপালে ভাঁজ ফেলে, বাচ্চাগুলোরও ঘুম ভেঙে যায়। প্রতিবেশী যুবকদের মন্তব্য, ‘হারমাজাদা, আরও ঘন ঘন যা বেশ্যার বাড়ি।’

শ্বশুর বাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে আসা মালা এ দৃশ্য দেখে। এসব নিয়ে তেমন কোনো চিন্তা কিংবা দুশ্চিন্তা তাকে গ্রাস করে না। একটা প্রজন্ম এভাবেই চলে যাচ্ছে, আরেকটা প্রজন্ম পৃথিবীতে আসার অপেক্ষায় দিন গুনছে। সে এখন সন্তানসম্ভাবা। অনাগত সন্তানকে কীভাবে উচ্চতর মানুষ বানানো যাবে সে বিষয় নিয়েই অনবরত ভাবছে সে। মাঝে মাঝে লাথি মেরে পেটের শিশুও যেন এ কথাই তাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।  সূএ:জাগো নিউজ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com