ইমো হ্যাক করে প্রতারণা

খুলনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমো হ্যাক করে প্রবাসীদের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকচক্র। বিদেশে থাকা ব্যক্তির ইমো অ্যাকাউন্ট থেকে তার বিপদের কথা জানিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়। পরে পরিবারের সদস্যদের কাছে ভুয়া মেসেজ বা ভয়েজ রেকর্ড শুনিয়ে বিকাশের মাধ্যমে দ্রুত টাকা পাঠানোর চাপ দেওয়া হয়। গত এক মাসে পরপর কয়েকটি ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। জানা যায়, সৌদি আরবের বিয়াদে থাকা এক প্রবাসীর ‘আর ইসলাম’ নামে ইমো অ্যাকাউন্ট থেকে বিপদের কথা জানিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর সোয়া ২টায় খুলনা খালিশপুরে তার পরিবারের কাছে মেসেজ পাঠানো হয়। ওই মেসেজে বলা হয়- ‘সেখানে পুলিশি ঝামেলা হয়েছে। তাকেসহ চারজনকে জরিমানা করা হয়েছে। টাকা না দিলে পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যাবে, জেল হতে পারে।’ এ সময় দেশে থাকা প্রবাসীর স্ত্রী আতঙ্কিত হয়ে ইমো নম্বরে ফোন দিলে তা রিসিভ না করে বলা হয়- ‘এখানে পুলিশ আছে, আমার খুব ভয় করছে ভয়েজ মেসেজ দাও কল দিও না। এরপর অপরপ্রান্ত থেকে ওই প্রবাসীর একটি ভয়েস রেকর্ডও পাঠানো হয়। সেখানে পুলিশের গাড়ি শব্দের মাঝে বলতে প্রবাসীকে শোনা যায় ‘তোমাদের কথা বুঝতে পারছি না, নেটওয়ার্কে প্রবলেম আছে।’ তারপর একটি বিকাশ নম্বর দিয়ে সেখানে দ্রুত টাকা পাঠাতে বলা হয়। দেশে থাকা প্রবাসীর পরিবার তার মেসেজ ও কণ্ঠ শুনে বিকাশের ওই নম্বরে টাকা পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু কয়েকঘণ্টা পর মোবাইলে প্রবাসীর সঙ্গে কথা হলে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানায়। ঘটনার পর থেকে বিকাশের ওই নম্বরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় প্রবাসীর পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, ইমো অ্যাকাউন্টে পাঠানো ভয়েজটি ওই প্রবাসীর। কিন্তু সেটি ছিল আগের কোনো সময়ের রেকর্ড করা। অভিযোগ রয়েছে, খুলনা-যশোর অঞ্চলের একটি প্রতারকচক্র পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীদের টার্গেট করে এ ধরনের প্রতারণা করে আসছে। পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, এই চক্র সংঘবদ্ধভাবে প্রবাসীদের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রবাসী নামে বিভিন্ন ফেসবুক পেজ গ্রুপ খুলে প্রবাসীদের অ্যাড করা হয়। সেসব পেজ কিংবা গ্রুপে কিছু মেয়েকে লাইভে অ্যাড করে। পাশাপাশি চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। তাদের প্রধান টার্গেট প্রবাসী বাংলাদেশি। এদিকে একই সঙ্গে খুলনায় বিকাশ অ্যাকাউন্ট হ্যাকের সংখ্যাও বেড়েছে। গত ১৩ জানুয়ারি রূপসা পশ্চিম নন্দনপুরে একটি ইন্টারনেট নম্বর থেকে যশোর বোর্ড কর্মকর্তা পরিচয়ে ০১৬১৭-২৭২৮৩০ নম্বর মোবাইলে ফোন করে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীর দুই বছরের শিক্ষা বৃত্তির টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। এরপর মোবাইলে একটি ‘ওটিপি’ নম্বর পাঠানো হয়। সেটি তাকে জানানোর কিছুক্ষণ পর মোবাইল বিকাশে ১১ হাজার ২২০ টাকা পাঠানো হয়। কিন্তু টাকা আনতে দোকানে গেলে জানা যায় বিকাশ নম্বরটি হ্যাক করে সব টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি রূপসা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

 

পুলিশ জানায়, বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে ০১৭৯৯৮৭৬৪৯৬ নম্বর থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর বিকাশের টাকা পাঠানো হয়েছিল মুন্সীগঞ্জের বালুচর থেকে।

 

এ বিষয়ে র‌্যাব-৬-এর কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি খুলনা বটিয়াঘাটা থেকে ডিজিটাল ডিভাইস অ্যাপস ব্যবহারের মাধ্যমে মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনে জড়িত একটি চক্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ১৪টি মোবাইল ফোন, ১৭টি মেমোরি কার্ড, ২১টি সিমকার্ড ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। এ কাজে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে।  সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আমাদের মূল লক্ষ্য ভোটারদের আস্থা ফিরিয়ে আনা: ইসি হাবিব

» এরশাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছি: জি এম কাদের

» ১৫ শতাংশ শ্রমিকের সম্মতিতে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করা যাবে

» বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ

» বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের বাধাহীন প্রবেশাধিকারের দাবি নোয়াব ও সম্পাদক পরিষদের

» ২০০ টাকায় দেখা যাবে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে লড়াই

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ২০জন গ্রেপ্তার

» চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী

» উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেই: ইসি আলমগীর

» মানুষের প্রতিকার চাওয়ার কোনো জায়গা নেই: রিজভী

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ইমো হ্যাক করে প্রতারণা

খুলনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমো হ্যাক করে প্রবাসীদের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকচক্র। বিদেশে থাকা ব্যক্তির ইমো অ্যাকাউন্ট থেকে তার বিপদের কথা জানিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়। পরে পরিবারের সদস্যদের কাছে ভুয়া মেসেজ বা ভয়েজ রেকর্ড শুনিয়ে বিকাশের মাধ্যমে দ্রুত টাকা পাঠানোর চাপ দেওয়া হয়। গত এক মাসে পরপর কয়েকটি ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। জানা যায়, সৌদি আরবের বিয়াদে থাকা এক প্রবাসীর ‘আর ইসলাম’ নামে ইমো অ্যাকাউন্ট থেকে বিপদের কথা জানিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর সোয়া ২টায় খুলনা খালিশপুরে তার পরিবারের কাছে মেসেজ পাঠানো হয়। ওই মেসেজে বলা হয়- ‘সেখানে পুলিশি ঝামেলা হয়েছে। তাকেসহ চারজনকে জরিমানা করা হয়েছে। টাকা না দিলে পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যাবে, জেল হতে পারে।’ এ সময় দেশে থাকা প্রবাসীর স্ত্রী আতঙ্কিত হয়ে ইমো নম্বরে ফোন দিলে তা রিসিভ না করে বলা হয়- ‘এখানে পুলিশ আছে, আমার খুব ভয় করছে ভয়েজ মেসেজ দাও কল দিও না। এরপর অপরপ্রান্ত থেকে ওই প্রবাসীর একটি ভয়েস রেকর্ডও পাঠানো হয়। সেখানে পুলিশের গাড়ি শব্দের মাঝে বলতে প্রবাসীকে শোনা যায় ‘তোমাদের কথা বুঝতে পারছি না, নেটওয়ার্কে প্রবলেম আছে।’ তারপর একটি বিকাশ নম্বর দিয়ে সেখানে দ্রুত টাকা পাঠাতে বলা হয়। দেশে থাকা প্রবাসীর পরিবার তার মেসেজ ও কণ্ঠ শুনে বিকাশের ওই নম্বরে টাকা পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু কয়েকঘণ্টা পর মোবাইলে প্রবাসীর সঙ্গে কথা হলে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানায়। ঘটনার পর থেকে বিকাশের ওই নম্বরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় প্রবাসীর পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, ইমো অ্যাকাউন্টে পাঠানো ভয়েজটি ওই প্রবাসীর। কিন্তু সেটি ছিল আগের কোনো সময়ের রেকর্ড করা। অভিযোগ রয়েছে, খুলনা-যশোর অঞ্চলের একটি প্রতারকচক্র পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীদের টার্গেট করে এ ধরনের প্রতারণা করে আসছে। পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, এই চক্র সংঘবদ্ধভাবে প্রবাসীদের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রবাসী নামে বিভিন্ন ফেসবুক পেজ গ্রুপ খুলে প্রবাসীদের অ্যাড করা হয়। সেসব পেজ কিংবা গ্রুপে কিছু মেয়েকে লাইভে অ্যাড করে। পাশাপাশি চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। তাদের প্রধান টার্গেট প্রবাসী বাংলাদেশি। এদিকে একই সঙ্গে খুলনায় বিকাশ অ্যাকাউন্ট হ্যাকের সংখ্যাও বেড়েছে। গত ১৩ জানুয়ারি রূপসা পশ্চিম নন্দনপুরে একটি ইন্টারনেট নম্বর থেকে যশোর বোর্ড কর্মকর্তা পরিচয়ে ০১৬১৭-২৭২৮৩০ নম্বর মোবাইলে ফোন করে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীর দুই বছরের শিক্ষা বৃত্তির টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। এরপর মোবাইলে একটি ‘ওটিপি’ নম্বর পাঠানো হয়। সেটি তাকে জানানোর কিছুক্ষণ পর মোবাইল বিকাশে ১১ হাজার ২২০ টাকা পাঠানো হয়। কিন্তু টাকা আনতে দোকানে গেলে জানা যায় বিকাশ নম্বরটি হ্যাক করে সব টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি রূপসা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

 

পুলিশ জানায়, বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে ০১৭৯৯৮৭৬৪৯৬ নম্বর থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর বিকাশের টাকা পাঠানো হয়েছিল মুন্সীগঞ্জের বালুচর থেকে।

 

এ বিষয়ে র‌্যাব-৬-এর কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি খুলনা বটিয়াঘাটা থেকে ডিজিটাল ডিভাইস অ্যাপস ব্যবহারের মাধ্যমে মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনে জড়িত একটি চক্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ১৪টি মোবাইল ফোন, ১৭টি মেমোরি কার্ড, ২১টি সিমকার্ড ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। এ কাজে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে।  সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com