ছবি সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক : কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলেও হঠাৎ কোথাও ঝটিকা মিছিলের চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা। নিয়মিত বিরতিতে হচ্ছে গ্রেফতারও। গেল ছ’মাসে এ সংখ্যা ছাড়িয়েছে হাজারখানেক। গোয়েন্দা পুলিশের তথ্য, অক্টোবরে রাজধানী বা দেশের অন্যস্থানে নাশকতার পরিকল্পনা আছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢালাওভাবে গ্রেফতারের চেয়ে জরুরি আওয়ামী লীগের দৃশ্যমান বিচার। পাশাপাশি দরকার রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের।
ক্ষমতাচ্যুত দলটির কর্মীদের বর্তমান দৃশ্যমান মাঠের চিত্র অনেকটা এমন— তীব্র গতিতে ছুটে চলেছেন তারা। সামনে থেকে অনেকে মোবাইল দিয়ে ঝটিকা মিছিলের ভিডিও ধারণ করে চলেছেন। এদিকে, আইন সংশোধন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে দলটির কার্যক্রম। তবুও অস্তিত্ব জানান দেয়ার চেষ্টাতেই এসব ভিডিও দেখা যায় তাদের ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ঝটিকা দৌড়ের পাশাপাশি কোথাও-কোথাও ঘটছে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও। কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, জন পঞ্চাশেক ব্যক্তি হুট করে জড়ো হচ্ছে। কয়েকটি স্লোগান দিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে সটকে পড়ছেন যে-যার মতো।
তবে, ঝটিকা মিছিলের পর গ্রেফতারও হচ্ছেন অনেকে। কাওকে কাওকে গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে বেশ পুরনো মামলায়। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় মাসে রাজধানীতে আটক হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রায় এক হাজার কর্মী। যারা গ্রেফতার হচ্ছেন, তাদের অনেকেই ঢাকার বাইরের আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগ অথবা অঙ্গসংগঠনের নেতা।
দলটি অক্টোবরজুড়ে বিভিন্ন স্থানে নাশকতার পরিকল্পনা করেছে- এমন তথ্য জানা গেছে গোয়েন্দা সূত্রে। টার্গেট, অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা। তাই ঢাকার কোথাও মিছিল বা মিছিলের চেষ্টা হলে, দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের মাঠ পর্যায়ে কড়া নজরদারি জারি রাখতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকমান্ড। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায়, এরইমধ্যে, ধানমন্ডি, শেরে বাংলা নগর ও মোহাম্মপুর থানার বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে বদলিও করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, আমরা সবসময় সচেষ্ট রয়েছি। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলার সক্ষমতা ডিএমপির রয়েছে। টহল কার্যক্রম জোরদারের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও অব্যাহত রয়েছে। রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
বিশ্লেষক তৌহিদুল হক মনে করেন, সবার আগে দরকার গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের দৃশ্যমান বিচার এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য। বলেন, নির্বাচনের আগে যদি বিচার সম্পন্ন না হয়, তাহলে এর রেশ ভিন্নভাবে বর্তাতে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখনও দলটির নেতাকর্মীদের বক্তব্য এটিই জানান দিচ্ছে, তারা নির্বাচনকে প্রতিহত করার চেষ্টা-ই করবে। এর রেশ ভোটারদের ওপর নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলবে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগের নিশ্চয়তা পাবেন না বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে, পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা সফল হবে না। অরাজকতা সৃষ্টির যেকোনো চেষ্টাই মোকাবেলা করা হবে কঠোরভাবে।