আমরা বিভাজিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি: মাহবুব আজীজ

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট মাহবুব আজীজ বলেছেন, ১৯৯১, ৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮, তারপরের তিনটি তো আওয়ামী লীগ ছলে-বলে-কৌশলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। এই চারটি নির্বাচনের যে ভোট সংখ্যা যদি দেখেন শতকরা ৪০ করে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের ভোট। তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকার যে বসছে, তারা প্রথমেই কীভাবে বাছাই করল এই রাজনৈতিক দলগুলোকে? সিপিবি এবং চারটি প্রধান বাম দল বলল যে ৭২-এর সংবিধান থেকে মূল স্তম্ভ যদি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে আমরা যাব না বলে তারা মিটিং থেকে উঠে চলে গেছে। ঠিক এইরকম কোন প্রসঙ্গে যদি জামায়াত বা এনসিপি চলে যেত অথবা বিএনপি চলে যেত, সরকার কি কোনো উদ্যোগ নিত না? তাদেরকে আনবার জন্যে? তাহলে বামদের জন্য কি সরকার কোনো উদ্যোগ নিয়েছে?

বুধবার (২৬ নভেম্বর) এক অনুষ্ঠানের এক টক শোতে এসব কথা বলেন তিনি।

মাহবুব আজীজ বলেন, তাহলে এই যে জেসচারটা সরকারের, কী ইঙ্গিত দেয়? তার মানে বাম দলের কোনো প্রয়োজন নাই। অর্থাৎ প্রগতিশীল, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের যারা, যারা ৭১-এর যেই বিস্তৃত প্রেক্ষাপটটি তৈরি করলেন পুরো ৬০-এর দশক জুড়ে, তারা অনুপস্থিত এই ৩০টি রাজনৈতিক দলের বৈঠকে। অনুপস্থিত জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টিকে অনেকেই বলছেন যে ফ্যাসিবাদের দোসর।

তাহলে জাতীয় পার্টি নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে। অনেক ন্যক্কারজনক কাজ তারা করেছে। সঙ্গে ইসলামিক দল ছিল। ইসলামিক দলগুলো এখন আবার জামায়াতের সঙ্গে গিয়ে জোট বেঁধে নানান রকম হইচই করছে।
তারা অত্যন্ত প্রগতিশীল হয়ে উঠেছে। তাহলে তাদের ক্ষেত্রে আপনি এক যাত্রায় এক ফল, আর জাতীয় পার্টির জন্য আরেক ফল করবেন কেন?

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রশ্ন, আওয়ামী লীগ গণহত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদের নেতাদেরকে বিচার করা হচ্ছে এবং এটা খুবই যৌক্তিক। বিচারের অবশ্যই তাদের মুখোমুখি হতে হবে। তাহলে জামায়াতে ইসলামী যে একটি জাতির অভ্যুদয়ের পেছনে দাঁড়িয়ে গেল, বিপরীতে দাঁড়িয়ে গেল, ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যুর জন্য তারা কাজ করল এবং নিজের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে দাঁড়াল, ১৬ ডিসেম্বরে যে আত্মসমর্পণ দলিল আছে, সেখানে লিখিত আছে পাকিস্তানি নৌ, বিমান ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি সিভিল আর্মড ফোর্সেস আত্মসমর্পণ করেছে। এই সিভিল আর্ম ফোর্স কারা? এই জামায়াতে ইসলামী, আল বদর, আল শামস এবং ১৪ ডিসেম্বরে কি ঘটনা তারা ঘটিয়েছে, সেগুলো যদি আপনারা কোনো রকম অ্যাড্রেস না করেন, সরকার কি একবারও বলেছে জামায়াতের এই ঘটনাগুলো নিয়ে? কোনোকিছু নিয়ে? তাহলে তাদের (সরকার) তৎপরতা থেকে আমরা কি বুঝতে পারি যে আমরা একটি বিভাজিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি যেই বিভাজন আমাদের পরিষ্কার করছে যে একদিকে থাকবে ডানপন্থারা এবং আরেকদিকে বামপন্থী এবং প্রগতিশীল অনুপস্থিত থাকবে

তার ইঙ্গিত আমরা দেখতে দেখতে পাচ্ছি সর্বশেষ মানিকগঞ্জে যে এক গুচ্ছ বাউলকে পানিতে ফেলা হচ্ছে, বাউলকে জেলে দেওয়া হচ্ছে, তার আগে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ভাঙা হয়েছে, ঐতিহাসিক নিদর্শন, স্মৃতিময় নিদর্শন, স্থাপনা, মাজার লাগাতার ভাঙচুর করা হয়েছে।

ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর দু-দিন ধরে ভাঙা হয়েছে বুলডোজার দিয়ে। ভ্রূক্ষেপ করার প্রয়োজন বোধ করেননি সরকার। তাহলে এগুলো কী ইঙ্গিত দেয়? ইঙ্গিত দেয় যে বাংলাদেশের রাজনীতি আগামীতে একটি বিভাজিত সংস্কৃতির মধ্যে যাতে পড়ে এবং সেখানে একপাশে থাকবে সাম্প্রদায়িক শক্তি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের আরও নজরদারির আওতায় আনা হবে : ইসি সচিব

» চিকিৎসকের নিষেধ সত্ত্বেও চোট নিয়ে অনুশীলনে নেইমার

» আজ ও শনিবার ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়

» জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবক নিহত

» মাদক মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

» অস্ত্র ও গুলিসহ এক ব্যক্তি গ্রেফতার

» ৩ লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার

» কথিত সেই প্রেমিকের সঙ্গে বিমানবন্দরে মালাইকা

» রুক্মিণী আমাকে নিয়ে কেন এত আলোচনা হয়?

» প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আমরা বিভাজিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি: মাহবুব আজীজ

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট মাহবুব আজীজ বলেছেন, ১৯৯১, ৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮, তারপরের তিনটি তো আওয়ামী লীগ ছলে-বলে-কৌশলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। এই চারটি নির্বাচনের যে ভোট সংখ্যা যদি দেখেন শতকরা ৪০ করে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের ভোট। তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকার যে বসছে, তারা প্রথমেই কীভাবে বাছাই করল এই রাজনৈতিক দলগুলোকে? সিপিবি এবং চারটি প্রধান বাম দল বলল যে ৭২-এর সংবিধান থেকে মূল স্তম্ভ যদি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে আমরা যাব না বলে তারা মিটিং থেকে উঠে চলে গেছে। ঠিক এইরকম কোন প্রসঙ্গে যদি জামায়াত বা এনসিপি চলে যেত অথবা বিএনপি চলে যেত, সরকার কি কোনো উদ্যোগ নিত না? তাদেরকে আনবার জন্যে? তাহলে বামদের জন্য কি সরকার কোনো উদ্যোগ নিয়েছে?

বুধবার (২৬ নভেম্বর) এক অনুষ্ঠানের এক টক শোতে এসব কথা বলেন তিনি।

মাহবুব আজীজ বলেন, তাহলে এই যে জেসচারটা সরকারের, কী ইঙ্গিত দেয়? তার মানে বাম দলের কোনো প্রয়োজন নাই। অর্থাৎ প্রগতিশীল, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের যারা, যারা ৭১-এর যেই বিস্তৃত প্রেক্ষাপটটি তৈরি করলেন পুরো ৬০-এর দশক জুড়ে, তারা অনুপস্থিত এই ৩০টি রাজনৈতিক দলের বৈঠকে। অনুপস্থিত জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টিকে অনেকেই বলছেন যে ফ্যাসিবাদের দোসর।

তাহলে জাতীয় পার্টি নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে। অনেক ন্যক্কারজনক কাজ তারা করেছে। সঙ্গে ইসলামিক দল ছিল। ইসলামিক দলগুলো এখন আবার জামায়াতের সঙ্গে গিয়ে জোট বেঁধে নানান রকম হইচই করছে।
তারা অত্যন্ত প্রগতিশীল হয়ে উঠেছে। তাহলে তাদের ক্ষেত্রে আপনি এক যাত্রায় এক ফল, আর জাতীয় পার্টির জন্য আরেক ফল করবেন কেন?

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রশ্ন, আওয়ামী লীগ গণহত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদের নেতাদেরকে বিচার করা হচ্ছে এবং এটা খুবই যৌক্তিক। বিচারের অবশ্যই তাদের মুখোমুখি হতে হবে। তাহলে জামায়াতে ইসলামী যে একটি জাতির অভ্যুদয়ের পেছনে দাঁড়িয়ে গেল, বিপরীতে দাঁড়িয়ে গেল, ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যুর জন্য তারা কাজ করল এবং নিজের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে দাঁড়াল, ১৬ ডিসেম্বরে যে আত্মসমর্পণ দলিল আছে, সেখানে লিখিত আছে পাকিস্তানি নৌ, বিমান ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি সিভিল আর্মড ফোর্সেস আত্মসমর্পণ করেছে। এই সিভিল আর্ম ফোর্স কারা? এই জামায়াতে ইসলামী, আল বদর, আল শামস এবং ১৪ ডিসেম্বরে কি ঘটনা তারা ঘটিয়েছে, সেগুলো যদি আপনারা কোনো রকম অ্যাড্রেস না করেন, সরকার কি একবারও বলেছে জামায়াতের এই ঘটনাগুলো নিয়ে? কোনোকিছু নিয়ে? তাহলে তাদের (সরকার) তৎপরতা থেকে আমরা কি বুঝতে পারি যে আমরা একটি বিভাজিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি যেই বিভাজন আমাদের পরিষ্কার করছে যে একদিকে থাকবে ডানপন্থারা এবং আরেকদিকে বামপন্থী এবং প্রগতিশীল অনুপস্থিত থাকবে

তার ইঙ্গিত আমরা দেখতে দেখতে পাচ্ছি সর্বশেষ মানিকগঞ্জে যে এক গুচ্ছ বাউলকে পানিতে ফেলা হচ্ছে, বাউলকে জেলে দেওয়া হচ্ছে, তার আগে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ভাঙা হয়েছে, ঐতিহাসিক নিদর্শন, স্মৃতিময় নিদর্শন, স্থাপনা, মাজার লাগাতার ভাঙচুর করা হয়েছে।

ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর দু-দিন ধরে ভাঙা হয়েছে বুলডোজার দিয়ে। ভ্রূক্ষেপ করার প্রয়োজন বোধ করেননি সরকার। তাহলে এগুলো কী ইঙ্গিত দেয়? ইঙ্গিত দেয় যে বাংলাদেশের রাজনীতি আগামীতে একটি বিভাজিত সংস্কৃতির মধ্যে যাতে পড়ে এবং সেখানে একপাশে থাকবে সাম্প্রদায়িক শক্তি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com