সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এরই মধ্যে দেশের ২৩৬টি নির্বাচনী আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিতে তোড়জোড় শুরু হয়েছে দলটির মধ্যে। এমতাবস্থায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর পর দেশে এসে কোথায় উঠবেন এবং কোথায় অফিস করবেন তাও চূড়ান্ত। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খুব শিগগির দেশে ফিরছেন তারেক রহমান।
দলীয় উচ্চপর্যায়ের বিভিন্ন সূত্র, দলের সিনিয়র নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়ির নীরব প্রস্তুতি থেকে ধারণা করা হচ্ছে, আসছে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই দেশে ফিরতে পারেন তারেক রহমান। যদিও কৌশলগত কারণে তারেক রহমানের ফেরার সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখ দলের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হচ্ছে না।
দলীয় উচ্চপর্যায়ের বিভিন্ন সূত্র, দলের সিনিয়র নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়ির নীরব প্রস্তুতি থেকে ধারণা করা হচ্ছে, আসছে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই দেশে ফিরতে পারেন তারেক রহমান। যদিও কৌশলগত কারণে তারেক রহমানের ফেরার সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখ দলের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হচ্ছে না।
কিছুদিন আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ প্রকাশ্যে বলেছিলেন, নভেম্বরের শেষ দিকেই তারেক রহমান দেশে ফিরবেন বলে আশা করছি। দলীয় পর্যায়ে তার এই মন্তব্যই প্রথম আনুষ্ঠানিক ইঙ্গিত হিসেবে আলোচনায় আসে। যদিও সময়সীমা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারিত হয়নি।
তবে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যমাত্রা এখন ডিসেম্বরের শুরুতে পুনর্নির্ধারিত হয়েছে। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়েও চলছে প্রস্তুতি। দেশে ফেরার পর তারেক রহমান এই কার্যালয় থেকেই রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে জানা গেছে।
গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে সাজ সাজ রব
প্রায় ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফিরে তারেক রহমান গুলশান-২ এভিনিউ রোডের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার এই বাড়ির নামজারি সম্পন্ন করে এ সংক্রান্ত কাগজপত্র বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার হাতে হস্তান্তর করেছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের থাকার জন্য বাড়িটি উপযোগী করে তোলা হচ্ছে। বাড়ির ভেতর-বাইরে করা হচ্ছে সাজসজ্জা। বাড়ির চারপাশে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, কাঁটাতারের বেষ্টনি। বাড়ির নিরাপত্তায় বসানো হচ্ছে চেকপোস্টও।
১৯৮১ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী খালেদা জিয়াকে এই বাড়িটি বরাদ্দ দেয় তৎকালীন সরকার।
বাড়িটির ইতিহাস ও প্রস্তুতি সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, দেড় বিঘা জায়গায় নির্মিত বাড়িটি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের সরকারের সময় খালেদা জিয়ার নামে বরাদ্দ হয়েছিল। এখন নামজারি হয়েছে তারেক রহমানের নামে। বাড়িটিতে তিন বেড, ড্রয়িং, ডাইনিং, লিভিং রুম, সুইমিংপুলসহ আধুনিক সব সুবিধা রয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করেই বাড়িটি তারেক রহমানের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
‘গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬, নম্বর বাড়িটির ভেতর-বাইরের সংস্কার কাজ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। দেশে ফিরে তারেক রহমান এখানেই থাকবেন। খালেদা জিয়ার বাড়ির পাশেই ছেলের অবস্থান দলীয় কার্যক্রমের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হবে।’ —ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়িটির ভেতর-বাইরের সংস্কারকাজ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। দেশে ফিরে তারেক রহমান এখানেই থাকবেন। খালেদা জিয়ার বাড়ির পাশেই ছেলের অবস্থান দলীয় কার্যক্রমের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হবে।
চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়েও প্রস্তুতি
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়েও চলছে প্রস্তুতি। দেশে ফেরার পর তারেক রহমান এই কার্যালয় থেকেই রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে জানা গেছে।
দলীয় নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, সালাহউদ্দিন আহমদের ‘নভেম্বরের শেষ দিকে ফেরা’ মন্তব্যটি এখন ডিসেম্বরের শুরুর দিকে সরানো হয়েছে।
‘দেড় বিঘা জায়গায় নির্মিত বাড়িটি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের সরকারের সময় খালেদা জিয়ার নামে বরাদ্দ হয়েছিল। এখন নামজারি হয়েছে তারেক রহমানের নামে। বাড়িটিতে তিন বেড, ড্রয়িং, ডাইনিং, লিভিং রুম, সুইমিংপুলসহ আধুনিক সব সুবিধা রয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করেই বাড়িটি তারেক রহমানের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।’ —সেলিমা রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই দেশে ফেরার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তারেক রহমান। তবে দলের সিনিয়র নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্য ও গুলশানের প্রস্তুতি—সবকিছু মিলিয়ে এটি স্পষ্ট যে, তারেক রহমানের ফেরা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রত্যাবর্তন ঘিরে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত জানানো হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, প্রায় ১৭ বছর ধরে লন্ডনে আছেন তারেক রহমান। ২০০৭ সালের ৭ মার্চ ১/১১-এর সময় তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। কারাগারে তার ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। পরে ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান তিনি। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য সপরিবারে লন্ডনে যান। এরপর সেখান থেকেই দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তারেক রহমান। এদিকে, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়া হলে তারেক রহমান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর সব মামলা থেকে অব্যাহতি পান তিনি।







