জীবন মৃত্যুর খেলা

সুলেখা আক্তার শান্তা :
নাম নুরুদ্দিন। নূর অর্থ আলো, আলোকিত করে চারদিক। নুরুদ্দিনের মধ্যে তেমন কিছুই নাই। সে ঘোরতর কৃষ্ণ বর্ণের মানুষ। অবশ্য নিজের গাত্রবর্ণ নিয়ে তার কোন আফসোস নাই। নুরুদ্দিনের পিতা-মাতা গত হয়েছেন। ভাই বোনেরা যে যার ঘর সংসার নিয়ে ভালো আছে। সেই তুলনায় নুরুদ্দিন ভালো করতে পারিনি। পারিপার্শ্বিকতা এবং নিজের গাফিলতির কারণে লেখাপড়া খুব বেশি এগোয়নি। ছোটখাটো একটা চাকরি জোগাড় করার পর শুরু হয় বিয়ের তাগাদা। নুরুদ্দিনের বিয়ে হয় আত্মীয় স্বজনদের পছন্দে। সমস্যা শুরু হয় বিয়ের পর। স্ত্রী বকুল সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা মানতে নারাজ। অপরদিকে স্বামীর কৃষ্ণবর্ণের কারণে সীমিত উপস্থাপন যোগ্যতা তাকে বিব্রত করে। ইতিমধ্যে তাদের এক সন্তানের জন্ম হয়েছে। স্বল্প আয়ের সংসারের অনিবার্য সংকট শুরু হয়। বেসামাল হয়ে ওঠে দাম্পত্য জীবন। স্ত্রী ঠাই নেয় তার বাপের বাড়িতে। একদিন নুরুদ্দিনের কাছে ফোন আসে, তাদের বাচ্চা হারিয়ে গেছে। নুরুদ্দিন বাচ্চার সন্ধানে সাধ্য অনুযায়ী সবকিছু করে। কিন্তু এ বিষয়ে স্ত্রীর রহস্যজনক নির্লিপ্ততা তাকে বিস্মিত করে। কিছুদিন পরে আসে বিবাহ বিচ্ছেদের চিঠি। স্তব্ধ হয়ে যায় নুরুদ্দিন।
জীবনের এক পর্যায় সমাপ্ত হলে শুরু হয় আরেক পর্যায়ে। একদিন নুরুদ্দিন অসুস্থতা নিয়ে ডাক্তারের কাছে যায়। ডাক্তার জানায় ঘোরতর সমস্যার কথা। নুরুদ্দিন কিডনি রোগে আক্রান্ত। ডাক্তারের পরামর্শ, কিডনি প্রতিস্থাপন। জীবন বাঁচতে হলে এখনই ডায়ালাইসিস শুরু করতে হবে। কোন কিছুই তার আয়ত্তের মধ্যে না। কিডনি রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল, সে চোখে অন্ধকার দেখে। আকরাম এক সহৃদয় ব্যক্তি। বন্ধু বৎসল আকরামের সামর্থ্য সীমিত। তবুও সেই সামর্থ্য দিয়ে মানুষের উপকার করতে চায় সে। জীবনের সংকটময় মুহূর্তে আকরামের কথা মনে হলো নুরুদ্দিনের। হতাশ নুরুদ্দিনের সমস্ত ঘটনা শোনার পর আকরাম দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এই চিকিৎসার কোন শর্টকাট রাস্তা নাই। একবার শুরু করলে যতদিন বাঁচবেন চিকিৎসা করিয়ে যেতে হবে। নুরুদ্দিনের প্রশ্ন, এখন কি করতে পারি তার পরামর্শ দেন। স্বল্প বেতনের চাকরি করি। বেতনের টাকায় হয়তো মাসের পনের দিনের চিকিৎসা খরচ মিটবে কিন্তু তারপর। আমি কারো মুখাপেক্ষী হতে চাই না। আকরাম বলে, কোন চিকিৎসা ছাড়া বেঁচে থাকা হবে ভয়াবহ বিড়ম্বনার। একটা কথা বলতে পারি, সংকোচ নিয়ে সে বলে। কথাটা বহুল প্রচলিত, ‘যার নাই কোন গতি সে করে হোমো-প্যাথি’। সেই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার কথা তো জানেন, ওই লাইনে একবার খোঁজ খবর নিয়ে দেখতে পারেন। তাতে অন্তত একটা চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে থাকবেন। আকরাম নুরুদ্দীনকে একজন নামকরা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। চিকিৎসক যথেষ্ট পরিমাণ আশ্বাস এবং কিছু ওষুধ দিয়ে দেন।
নুরুদ্দিন অত্যন্ত অঞ্চলে স্বল্প বেতনের চাকরি নিয়ে চলে যায় শহরের খরচ এবং দূষণ এড়াতে। আকরাম সাহেবের মাঝে মাঝে নুরুদ্দিনের কথা মনে হয়। খোঁজখবর না পেয়ে ধরে নেন নুরুদ্দিন ভালই আছে। প্রায় বছর পাঁচেক পর একদিন সশরীরে হাজির হয় নুরুদ্দিন। উজ্জ্বল হয়েছে তার শরীরে কৃষ্ণ বর্ণ। দেখে বোঝা যায় ভালই আছে সে। এক গাল হেসে বলে, কেমন আছেন আকরাম ভাই। আকরাম বলে, আমি ভালো। আপনি কেমন আছেন বলেন। নুরুদ্দিন বলে, আমি ভালো আছি ভাই। বিয়ে করেছি, বলে পিছনে ফিরে তাকায়। দেখা যায় নুরুদ্দিনের পেছনে অল্প বয়সী এক গ্রাম্য ললনা কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আকরাম সাহেব ব্যস্ত হয়ে বলে, বসেন বসেন। অনুযোগ করেন, একটা খবরা খবর তো দিবেন কেমন আছেন। কাকতালীয়ভাবে হোক অথবা হোমিওপ্যাথির গুনে হোক জীবনে পাঁচটি বছর যোগ হয়েছে তার পরমায়ুর তে। এই তৃপ্তিতে সে উৎফুল্ল। নুরুদ্দিন ফিরে যায় তার নিভৃত পল্লীর কর্মস্থলে। বছর দুয়েক পরে আবার উদয় হয় নুরুদ্দিন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে। আকরাম সাহেব চমকে ওঠেন তাকে দেখে। কৃষ্ণ বর্ণের নুরুদ্দিনের সমস্ত শরীর যেন কাঠ কয়লার মতো অঙ্গারে পরিণত হয়েছে। হাঁপিয়ে ওঠে কথা বলার সময়। বলে, ডায়ালাইসিস এর উপর বেঁচে আছি ভাই। উপরে আল্লাহ আর নিচে আছে রেনু। স্ত্রীর দিকে নির্দেশ করে।
আশ্চর্যজনকভাবে রেনু শয্যাশায়ী স্বামীর শুশ্রুষা করে চলে নিষ্ঠার সঙ্গে। কেউ কিছু বললে রেনু বলে, উনি আমার স্বামী তাকে তো আর ফেলে দিতে পারি না। আল্লাহ কপালে যা লিখে রেখেছেন তাই তো হবে। নুরুদ্দিন সবাইকে কষ্টের হাত থেকে মুক্তি দিয়ে পরপারে পাড়ি জমায়, জীবনের সব দুঃখ নিয়ে ছেড়ে চলে যায় সুখের পৃথিবী। দাফন কাফন হয়ে যাবার পর কৃতজ্ঞতা জানাতে রেনু আকরাম সাহেবের কাছে যায়। আকরাম সাহেবের খুব খারাপ লাগে। শূন্য হাতে মেয়েটার জীবনের এক পর্বের ইতি টানা দেখে। তিনি রেনুর কাছে জানতে চান, এখন কী করবেন? রেনু দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে, যাই বাবা মায়ের কাছে, দেখি তারা কি করে!

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» যাদের সামনে নারীর পর্দা করার প্রয়োজন হয় না

» ‘প্রলয়’ ঘটাবেন রণবীর-আলিয়া

» স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা থাকায় জামায়াতের ৩ জানুয়ারির মহাসমাবেশ স্থগিত

» বরিশাল সদর ৫ ও ৬ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ফয়জুল করিম

» শহীদ ওসমান হাদির আসনে এনসিপির প্রার্থী হবেন নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারী

» ঢাকা-৬ আসনে মনোনয়নপত্র জমা, নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে আশাবাদী ইশরাক

» ঢাকা-১৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন মাওলানা মামুনুল হক

» আমি আপনাদের পাঠানো ডোনেশন ফিরিয়ে দেব : তাজনূভা

» আমাদের সঙ্গে এলডিপি ও এনসিপি যুক্ত হয়েছে: জামায়াত আমির

» গুলি ও বিদেশি পিস্তলসহ পাইপগান উদ্ধার

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জীবন মৃত্যুর খেলা

সুলেখা আক্তার শান্তা :
নাম নুরুদ্দিন। নূর অর্থ আলো, আলোকিত করে চারদিক। নুরুদ্দিনের মধ্যে তেমন কিছুই নাই। সে ঘোরতর কৃষ্ণ বর্ণের মানুষ। অবশ্য নিজের গাত্রবর্ণ নিয়ে তার কোন আফসোস নাই। নুরুদ্দিনের পিতা-মাতা গত হয়েছেন। ভাই বোনেরা যে যার ঘর সংসার নিয়ে ভালো আছে। সেই তুলনায় নুরুদ্দিন ভালো করতে পারিনি। পারিপার্শ্বিকতা এবং নিজের গাফিলতির কারণে লেখাপড়া খুব বেশি এগোয়নি। ছোটখাটো একটা চাকরি জোগাড় করার পর শুরু হয় বিয়ের তাগাদা। নুরুদ্দিনের বিয়ে হয় আত্মীয় স্বজনদের পছন্দে। সমস্যা শুরু হয় বিয়ের পর। স্ত্রী বকুল সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা মানতে নারাজ। অপরদিকে স্বামীর কৃষ্ণবর্ণের কারণে সীমিত উপস্থাপন যোগ্যতা তাকে বিব্রত করে। ইতিমধ্যে তাদের এক সন্তানের জন্ম হয়েছে। স্বল্প আয়ের সংসারের অনিবার্য সংকট শুরু হয়। বেসামাল হয়ে ওঠে দাম্পত্য জীবন। স্ত্রী ঠাই নেয় তার বাপের বাড়িতে। একদিন নুরুদ্দিনের কাছে ফোন আসে, তাদের বাচ্চা হারিয়ে গেছে। নুরুদ্দিন বাচ্চার সন্ধানে সাধ্য অনুযায়ী সবকিছু করে। কিন্তু এ বিষয়ে স্ত্রীর রহস্যজনক নির্লিপ্ততা তাকে বিস্মিত করে। কিছুদিন পরে আসে বিবাহ বিচ্ছেদের চিঠি। স্তব্ধ হয়ে যায় নুরুদ্দিন।
জীবনের এক পর্যায় সমাপ্ত হলে শুরু হয় আরেক পর্যায়ে। একদিন নুরুদ্দিন অসুস্থতা নিয়ে ডাক্তারের কাছে যায়। ডাক্তার জানায় ঘোরতর সমস্যার কথা। নুরুদ্দিন কিডনি রোগে আক্রান্ত। ডাক্তারের পরামর্শ, কিডনি প্রতিস্থাপন। জীবন বাঁচতে হলে এখনই ডায়ালাইসিস শুরু করতে হবে। কোন কিছুই তার আয়ত্তের মধ্যে না। কিডনি রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল, সে চোখে অন্ধকার দেখে। আকরাম এক সহৃদয় ব্যক্তি। বন্ধু বৎসল আকরামের সামর্থ্য সীমিত। তবুও সেই সামর্থ্য দিয়ে মানুষের উপকার করতে চায় সে। জীবনের সংকটময় মুহূর্তে আকরামের কথা মনে হলো নুরুদ্দিনের। হতাশ নুরুদ্দিনের সমস্ত ঘটনা শোনার পর আকরাম দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এই চিকিৎসার কোন শর্টকাট রাস্তা নাই। একবার শুরু করলে যতদিন বাঁচবেন চিকিৎসা করিয়ে যেতে হবে। নুরুদ্দিনের প্রশ্ন, এখন কি করতে পারি তার পরামর্শ দেন। স্বল্প বেতনের চাকরি করি। বেতনের টাকায় হয়তো মাসের পনের দিনের চিকিৎসা খরচ মিটবে কিন্তু তারপর। আমি কারো মুখাপেক্ষী হতে চাই না। আকরাম বলে, কোন চিকিৎসা ছাড়া বেঁচে থাকা হবে ভয়াবহ বিড়ম্বনার। একটা কথা বলতে পারি, সংকোচ নিয়ে সে বলে। কথাটা বহুল প্রচলিত, ‘যার নাই কোন গতি সে করে হোমো-প্যাথি’। সেই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার কথা তো জানেন, ওই লাইনে একবার খোঁজ খবর নিয়ে দেখতে পারেন। তাতে অন্তত একটা চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে থাকবেন। আকরাম নুরুদ্দীনকে একজন নামকরা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। চিকিৎসক যথেষ্ট পরিমাণ আশ্বাস এবং কিছু ওষুধ দিয়ে দেন।
নুরুদ্দিন অত্যন্ত অঞ্চলে স্বল্প বেতনের চাকরি নিয়ে চলে যায় শহরের খরচ এবং দূষণ এড়াতে। আকরাম সাহেবের মাঝে মাঝে নুরুদ্দিনের কথা মনে হয়। খোঁজখবর না পেয়ে ধরে নেন নুরুদ্দিন ভালই আছে। প্রায় বছর পাঁচেক পর একদিন সশরীরে হাজির হয় নুরুদ্দিন। উজ্জ্বল হয়েছে তার শরীরে কৃষ্ণ বর্ণ। দেখে বোঝা যায় ভালই আছে সে। এক গাল হেসে বলে, কেমন আছেন আকরাম ভাই। আকরাম বলে, আমি ভালো। আপনি কেমন আছেন বলেন। নুরুদ্দিন বলে, আমি ভালো আছি ভাই। বিয়ে করেছি, বলে পিছনে ফিরে তাকায়। দেখা যায় নুরুদ্দিনের পেছনে অল্প বয়সী এক গ্রাম্য ললনা কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আকরাম সাহেব ব্যস্ত হয়ে বলে, বসেন বসেন। অনুযোগ করেন, একটা খবরা খবর তো দিবেন কেমন আছেন। কাকতালীয়ভাবে হোক অথবা হোমিওপ্যাথির গুনে হোক জীবনে পাঁচটি বছর যোগ হয়েছে তার পরমায়ুর তে। এই তৃপ্তিতে সে উৎফুল্ল। নুরুদ্দিন ফিরে যায় তার নিভৃত পল্লীর কর্মস্থলে। বছর দুয়েক পরে আবার উদয় হয় নুরুদ্দিন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে। আকরাম সাহেব চমকে ওঠেন তাকে দেখে। কৃষ্ণ বর্ণের নুরুদ্দিনের সমস্ত শরীর যেন কাঠ কয়লার মতো অঙ্গারে পরিণত হয়েছে। হাঁপিয়ে ওঠে কথা বলার সময়। বলে, ডায়ালাইসিস এর উপর বেঁচে আছি ভাই। উপরে আল্লাহ আর নিচে আছে রেনু। স্ত্রীর দিকে নির্দেশ করে।
আশ্চর্যজনকভাবে রেনু শয্যাশায়ী স্বামীর শুশ্রুষা করে চলে নিষ্ঠার সঙ্গে। কেউ কিছু বললে রেনু বলে, উনি আমার স্বামী তাকে তো আর ফেলে দিতে পারি না। আল্লাহ কপালে যা লিখে রেখেছেন তাই তো হবে। নুরুদ্দিন সবাইকে কষ্টের হাত থেকে মুক্তি দিয়ে পরপারে পাড়ি জমায়, জীবনের সব দুঃখ নিয়ে ছেড়ে চলে যায় সুখের পৃথিবী। দাফন কাফন হয়ে যাবার পর কৃতজ্ঞতা জানাতে রেনু আকরাম সাহেবের কাছে যায়। আকরাম সাহেবের খুব খারাপ লাগে। শূন্য হাতে মেয়েটার জীবনের এক পর্বের ইতি টানা দেখে। তিনি রেনুর কাছে জানতে চান, এখন কী করবেন? রেনু দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে, যাই বাবা মায়ের কাছে, দেখি তারা কি করে!

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com