শিমিন মুশশারাত: ছোটবেলা থেকে আমার খুব বড় হওয়ার শখ। বড় হয়েছি, অনার্সের পাট চুকেছে। মাস্টার্স পড়ব কি-না এখনো ঠিক করে উঠতে পারিনি। দশটা-ছয়টা অফিস। অফিস একটি বুকশপ। প্রিয় বুকশপ। সুযোগ-সময়-অজুহাত পেলেই যেখানে ছুটে যেতাম; সেখানে প্রতিদিন আট ঘণ্টা!
আমাদের এই বুকশপে অনেক শেলফ। প্রতিটা শেলফের নাম আছে—কথাসাহিত্য, নতুন বই, কবিতা, প্রবন্ধ, ফিকশন, ক্লাসিকস, খেলাধুলা—আরও অনেক। সবচেয়ে ভালো লাগে কথাসাহিত্য, ফিকশন আর ছোটদের বই। ভারত থেকে বই এলে প্রতিবার কিছু ছোটদের বই বাগিয়ে নেই। লাল টুকটুকে ‘পাগলা দাশু’ আর ‘ক্ষীরের পুতুল’ নিয়ে আমি মহাসুখী!
খুব ইচ্ছে হয়, ছোটদের জন্য লেখা সব বই পড়ে ফেলতে। আগে যা পড়েছি সেসব আরও একবার পড়তে। যেমন এই মুহূর্তে সত্যজিৎ ম্যারাথন চলছে। পড়া হয়েছে ‘রয়েল বেঙ্গল রহস্য’, ‘টিনটোরেটোর যিশু’, ‘বাক্স রহস্য’, ‘যত কাণ্ড কাঠমান্ডুতে’। এরপর পড়ার প্ল্যান ‘প্রোফেসর শঙ্কু’, ‘মহাসংকটে শঙ্কু’। বইগুলো পড়ে নিজের মনে হাসতে হাসতে হঠাৎ মনে হয়, কোন এক ফাইনাল পরীক্ষা শেষে স্কুল ছুটির সময়ে ফিরে গেছি।
বেশ কিছুদিন হলো ‘যকের ধন’ খুব পড়তে ইচ্ছে হচ্ছে। প্রথমবার যখন পড়েছিলাম; ভেবেছিলাম ঘটনাটি সত্য! ‘নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড়’ অনেকবার পড়তে ইচ্ছে করে। চার খণ্ডের শাহরিয়ার কবির সমগ্রটা চোখে চোখে রাখছি বেশ কিছুদিন হলো। এর মাঝে একদিন সবগুলো কিনে এনে টপাটপ পড়ে ফেলব। আর মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘রাশা’, ‘ইকারাস’, ‘আমি তপু’, ‘বিজ্ঞানী অনিক লুম্বা’ বা ‘রাজু ও আগুনালির ভূত’।
রঙিন চকচকে অ্যাসটেরিক্স, টিনটিন দেখে খুব লোভ হয়। অদ্ভুতুড়ে, কাকাবাবু, কিকিরা, ঘনাদা, ব্যোমকেশ—কত কত সমগ্র! বড়বেলায় পৌঁছে যাওয়ার ভালো দিক যেমন অনেক, তেমন কিছু কম ভালো দিকও আছে। কম ভালো লাগা ব্যাপারগুলো যখন ঘটে, ছোটবেলার বইগুলোর কাছে ফিরে যাই। তারা খুব পুরোনো বন্ধুর মতো মন ভালো করে দেয়। আর বড়বেলার খিটমিটে টু-ডু লিস্টগুলোকে একটু কম খিটমিটে মনে হয়। সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম