চীনে ভয়াবহ বন্যা

কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে চীনে। মুষলধারে বৃষ্টি ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। সবচেয়ে বেশি প্লাবিত শহর গুয়াংডংয়ের ইংদেতে পানির স্তর তিনতলা পর্যন্ত বেড়েছে। অনেক বাসিন্দা ভবনে আটকা পড়েছেন। এছাড়া আরও কয়েকটি প্রদেশেও বন্যা দেখা দিয়েছে।

 

চাইনা গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্কের (সিজিটিএন) এর খবরে বলা হয়েছে, গুয়াংজু থেকে দুই লাখ ২৭ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

 

গুয়াংডং প্রদেশের শাওগুয়ানে কর্মকর্তারা বন্যা সতর্কতার মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করেছেন। শহরটি মে মাসের শেষ দিক থেকে রেকর্ড বৃষ্টিপাত দেখেছে। গুয়াংডংয়ের কুইংগুয়ান শহরেও সর্বোচ্চ বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

 

একই দৃশ্য এখন চীনের ঝেজিয়াং ও ফুজিয়ান প্রদেশেরও। সেখানে প্রবল বন্যায় দেখা দিয়েছে ভূমিধস। ভেঙে পড়ছে বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ব্রিজসহ নানা স্থাপনা। বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়েছেন অনেকে। যতদূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। বহু মানুষ নিজের বাড়িতে আটকা পড়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। যাদের উদ্ধারে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

 

উত্তরপূর্ব চীনের জিয়াংসি প্রদেশে বন্যায় ৪ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ সেখানেও বন্যা সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, চীনের ছয়টি দক্ষিণ প্রদেশে হাজার হাজার দমকলকর্মী, পুলিশ, সৈন্য এবং প্রবীণ স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধার ও দুর্যোগ ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

বিভিন্ন নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকায় এবং বন্যার পানির উচ্চতা ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হওয়ার পর মঙ্গলবার দুটি প্রদেশ বন্যা সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়েছে।

 

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের ভিডিওতে বন্যায় সড়কে থাকা গাড়ি ভেসে যেতে এবং দড়ির সাহায্যে লোকজনকে উদ্ধারের দৃশ্য দেখা গেছে। ১৯৬১ সালের পর ওই অঞ্চলে এবারই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে আবহাওয়া কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।

 

নদী তীরবর্তী ও নিচু এলাকাগুলোর বাসিন্দাদেরকে তুলনামূলক উঁচু জায়গায় সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

 

সামনের দিনগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে এবং পার্ল নদীর অববাহিকায় পানির মাত্রা বাড়া অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় কর্মকর্তাদের।

চীনের আবহাওয়া কেন্দ্র জানিয়েছে, গুয়াংডং, ফুজিয়ান ও গুয়াংসিতে মে-র শুরু থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত গড় বৃষ্টিপাত পৌঁছেছে ৬২১ মিলিমিটারে, যা ১৯৬১ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ।

 

১৯৯৮ সালে ভয়াবহ বন্যার পর চীন বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করেছে। ওই বন্যায় দুই হাজারের বেশি মানুষ মারা যায় এবং লক্ষাধিক মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে।

 

বাংলাদেশ, চীন এবং ভারতের মতো দেশগুলোতে অনাকাঙ্খিত বৃষ্টিপাত ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এটি এশিয়ার দেশগুলোকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির লালবাগ উপশাখা উদ্বোধন

» পাঁচবিবিতে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

» বৃষ্টি কামনায় বায়তুল মোকাররমে ইসতিসকার নামাজ আদায়

» মেটার স্মার্ট সানগ্লাসে দিয়ে করা যাবে ভিডিও কল

» গরমে ট্রাফিক পুলিশ কীভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে?

» জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরু থেকে কেন খেলবেন না, জানালেন সাকিব

» পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলের চালক নিহত

» বাস-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংর্ঘষে ইজিবাইক চালক নিহত,আহত ৩

» বিএনপি নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া: কাদের

» শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে আ.লীগের কর্মসূচি

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

চীনে ভয়াবহ বন্যা

কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে চীনে। মুষলধারে বৃষ্টি ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। সবচেয়ে বেশি প্লাবিত শহর গুয়াংডংয়ের ইংদেতে পানির স্তর তিনতলা পর্যন্ত বেড়েছে। অনেক বাসিন্দা ভবনে আটকা পড়েছেন। এছাড়া আরও কয়েকটি প্রদেশেও বন্যা দেখা দিয়েছে।

 

চাইনা গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্কের (সিজিটিএন) এর খবরে বলা হয়েছে, গুয়াংজু থেকে দুই লাখ ২৭ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

 

গুয়াংডং প্রদেশের শাওগুয়ানে কর্মকর্তারা বন্যা সতর্কতার মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করেছেন। শহরটি মে মাসের শেষ দিক থেকে রেকর্ড বৃষ্টিপাত দেখেছে। গুয়াংডংয়ের কুইংগুয়ান শহরেও সর্বোচ্চ বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

 

একই দৃশ্য এখন চীনের ঝেজিয়াং ও ফুজিয়ান প্রদেশেরও। সেখানে প্রবল বন্যায় দেখা দিয়েছে ভূমিধস। ভেঙে পড়ছে বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ব্রিজসহ নানা স্থাপনা। বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়েছেন অনেকে। যতদূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। বহু মানুষ নিজের বাড়িতে আটকা পড়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। যাদের উদ্ধারে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

 

উত্তরপূর্ব চীনের জিয়াংসি প্রদেশে বন্যায় ৪ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ সেখানেও বন্যা সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, চীনের ছয়টি দক্ষিণ প্রদেশে হাজার হাজার দমকলকর্মী, পুলিশ, সৈন্য এবং প্রবীণ স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধার ও দুর্যোগ ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

বিভিন্ন নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকায় এবং বন্যার পানির উচ্চতা ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হওয়ার পর মঙ্গলবার দুটি প্রদেশ বন্যা সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়েছে।

 

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের ভিডিওতে বন্যায় সড়কে থাকা গাড়ি ভেসে যেতে এবং দড়ির সাহায্যে লোকজনকে উদ্ধারের দৃশ্য দেখা গেছে। ১৯৬১ সালের পর ওই অঞ্চলে এবারই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে আবহাওয়া কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।

 

নদী তীরবর্তী ও নিচু এলাকাগুলোর বাসিন্দাদেরকে তুলনামূলক উঁচু জায়গায় সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

 

সামনের দিনগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে এবং পার্ল নদীর অববাহিকায় পানির মাত্রা বাড়া অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় কর্মকর্তাদের।

চীনের আবহাওয়া কেন্দ্র জানিয়েছে, গুয়াংডং, ফুজিয়ান ও গুয়াংসিতে মে-র শুরু থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত গড় বৃষ্টিপাত পৌঁছেছে ৬২১ মিলিমিটারে, যা ১৯৬১ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ।

 

১৯৯৮ সালে ভয়াবহ বন্যার পর চীন বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করেছে। ওই বন্যায় দুই হাজারের বেশি মানুষ মারা যায় এবং লক্ষাধিক মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে।

 

বাংলাদেশ, চীন এবং ভারতের মতো দেশগুলোতে অনাকাঙ্খিত বৃষ্টিপাত ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এটি এশিয়ার দেশগুলোকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com