প্রস্রাব-বাতকর্মের চাপ নিয়ে কি নামাজ পড়া যাবে?

প্রস্রাব-পায়খানার বেগ নিয়ে সালাত আদায় করা হারাম, এ বক্তব্য শুদ্ধ নয়। এটি রাসুল (সা.) পছন্দ করেননি, এ জন্য ওলামায়ে কেরাম এটাকে মাকরুহ বলেছেন। মাকরুহ হলো অপছন্দীয়। মাকরুহ এবং হারামের মধ্যে বিশাল পার্থক্য রয়েছে।

 

প্রস্রাব-পায়খানা এবং বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ পড়া মাকরূহ। কেননা এতে নামাজের খুশু-খুজু (একাগ্রতা) বিঘ্নিত হয় এবং পরিপূর্ণ তৃপ্তির সঙ্গে হৃদয় মন নিবিষ্ট করে নামাজ আদায় হয় না। তাই এসব চাপ থেকে মুক্ত হয়ে পূর্ণ তৃপ্তি ও স্থীরতার সঙ্গে নামাজ আদায় করা কর্তব্য।

হাদিস ও ফেকাহের কিতাবে প্রস্রাব-পায়খানা ও বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আরকাম রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, যখন নামাজ দাঁড়িয়ে যায়- আর তোমাদের কারও প্রস্রাব-পায়খানার প্রয়োজন দেখা দেয়; সে যেন প্রথমে প্রয়োজন সেরে নেয়। (জামে তিরমিজি, হাদিস-১৪২)

 

হজরত সাওবান রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো ব্যক্তির জন্য হালাল নয় কারও গৃহাভ্যন্তরে অনুমতি ব্যতীত দৃষ্টিপাত করা… এবং কেউ যেন প্রস্রাব-পায়খানার চাপ নিয়ে নামাজ না পড়ে। (জামে তিরমিজি, হাদিস-৩৫৭; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস-৯১)

 

হজরত নাফে রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে জিজ্ঞাসা করা হল যে, এক ব্যক্তি পেটে বায়ুর চাপ বোধ করে। তিনি বললেন, বায়ুর চাপ বোধ করা অবস্থায় সে যেন নামাজ না পড়ে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস-৮০২২)

 

উপরোক্ত হাদিস ও বর্ণনার ওপর ভিত্তি করে ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, প্রস্রাব-পায়খানা এবং বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ আরম্ভ করা মাকরূহে তাহরিমি। আর স্বাভাবিক অবস্থায় নামাজ শুরু করার পর নামাজের মাঝে এমন চাপ সৃষ্টি হলে নামাজের পর্যাপ্ত ওয়াক্ত বাকি থাকা সত্ত্বেও এ অবস্থায় নামাজ চালিয়ে যাওয়া মাকরূহ। এ ধরনের ক্ষেত্রে নামাজ ছেড়ে দিয়ে প্রয়োজন শেষ করে পূর্ণ চাপমুক্ত হয়ে নামাজ আদায় করা কর্তব্য।

তবে হ্যাঁ, নামাজের ওয়াক্ত যদি এত কম থাকে, যাতে প্রয়োজন সারতে গেলে নামাজ কাজা হয়ে যাবে; তাহলে সম্ভব হলে এ অবস্থায়ই নামাজ পড়ে নিবে।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ

» রাজনৈতিক দলপন্থি না হয়ে আপনারা বাংলাদেশপন্থি পুলিশ হয়ে ওঠেন : হাসনা

» দেশের স্বার্থে সবচেয়ে বেশি ‘স্যাক্রিফাইস’ করেছে বিএনপি: তারেক রহমান

» রংপুরে ১৭ বছর পর ৪ জুলাই জামায়াতের সমাবেশ

» খুনিদের বিচার না হলে সব থানা পটিয়া হয়ে উঠবে: সারজিস

» ‘হাতপাখার সমাবেশ’ বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রমাণ : ফারুক

» নতুন বাংলাদেশে নতুন করে চাঁদাবাজ হতে দেওয়া যাবে না: হাসনাত

» কোনো স্বৈরাচার চিরকাল ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না: নাহিদ

» যখনই গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে, বিএনপি সোচ্চার হয়েছে: তারেক রহমান

» রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঠাল খেলেন নাহিদ-হাসনাত-সার্জিসরা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

প্রস্রাব-বাতকর্মের চাপ নিয়ে কি নামাজ পড়া যাবে?

প্রস্রাব-পায়খানার বেগ নিয়ে সালাত আদায় করা হারাম, এ বক্তব্য শুদ্ধ নয়। এটি রাসুল (সা.) পছন্দ করেননি, এ জন্য ওলামায়ে কেরাম এটাকে মাকরুহ বলেছেন। মাকরুহ হলো অপছন্দীয়। মাকরুহ এবং হারামের মধ্যে বিশাল পার্থক্য রয়েছে।

 

প্রস্রাব-পায়খানা এবং বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ পড়া মাকরূহ। কেননা এতে নামাজের খুশু-খুজু (একাগ্রতা) বিঘ্নিত হয় এবং পরিপূর্ণ তৃপ্তির সঙ্গে হৃদয় মন নিবিষ্ট করে নামাজ আদায় হয় না। তাই এসব চাপ থেকে মুক্ত হয়ে পূর্ণ তৃপ্তি ও স্থীরতার সঙ্গে নামাজ আদায় করা কর্তব্য।

হাদিস ও ফেকাহের কিতাবে প্রস্রাব-পায়খানা ও বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আরকাম রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, যখন নামাজ দাঁড়িয়ে যায়- আর তোমাদের কারও প্রস্রাব-পায়খানার প্রয়োজন দেখা দেয়; সে যেন প্রথমে প্রয়োজন সেরে নেয়। (জামে তিরমিজি, হাদিস-১৪২)

 

হজরত সাওবান রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো ব্যক্তির জন্য হালাল নয় কারও গৃহাভ্যন্তরে অনুমতি ব্যতীত দৃষ্টিপাত করা… এবং কেউ যেন প্রস্রাব-পায়খানার চাপ নিয়ে নামাজ না পড়ে। (জামে তিরমিজি, হাদিস-৩৫৭; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস-৯১)

 

হজরত নাফে রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে জিজ্ঞাসা করা হল যে, এক ব্যক্তি পেটে বায়ুর চাপ বোধ করে। তিনি বললেন, বায়ুর চাপ বোধ করা অবস্থায় সে যেন নামাজ না পড়ে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস-৮০২২)

 

উপরোক্ত হাদিস ও বর্ণনার ওপর ভিত্তি করে ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, প্রস্রাব-পায়খানা এবং বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ আরম্ভ করা মাকরূহে তাহরিমি। আর স্বাভাবিক অবস্থায় নামাজ শুরু করার পর নামাজের মাঝে এমন চাপ সৃষ্টি হলে নামাজের পর্যাপ্ত ওয়াক্ত বাকি থাকা সত্ত্বেও এ অবস্থায় নামাজ চালিয়ে যাওয়া মাকরূহ। এ ধরনের ক্ষেত্রে নামাজ ছেড়ে দিয়ে প্রয়োজন শেষ করে পূর্ণ চাপমুক্ত হয়ে নামাজ আদায় করা কর্তব্য।

তবে হ্যাঁ, নামাজের ওয়াক্ত যদি এত কম থাকে, যাতে প্রয়োজন সারতে গেলে নামাজ কাজা হয়ে যাবে; তাহলে সম্ভব হলে এ অবস্থায়ই নামাজ পড়ে নিবে।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com