সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক জেফরি এপস্টেইনের ফাইল প্রকাশের বিলে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন পার্লামেন্টের দুই কক্ষের অনুমোদনের পর ‘এপস্টেইন ফাইল ট্রান্সপারেন্সি অ্যাক্ট’ বিলটিতে সই করেন তিনি।
দুই দিন আগেই মাসের পর মাস ধরে বিরোধিতা করে আসার পর হঠাৎ করে এপস্টেইনের ফাইল প্রকাশের পক্ষে অবস্থান নেন ট্রাম্প।
বুধবার রাতে সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, ডেমোক্র্যাটরা তার প্রশাসনের সাফল্যগুলো থেকে দৃষ্টি সরাতে এই ইস্যুটিকে সামনে এনেছে।
তিনি লেখেন, ‘সম্ভবত ডেমোক্র্যাটদের সত্য এবং তাদের এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্ক খুব শিগগিরই প্রকাশ পাবে, কারণ আমি ইতোমধ্যে এপস্টেইন ফাইল প্রকাশের বিলটিতে স্বাক্ষর করেছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডি আগেই জানিয়েছিলেন, প্রশাসন আইনের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে এবং মামলার সর্বাধিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।
প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি ৪২৭-১ ভোটে পাস হয়। সিনেট এটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন দেয়।
ট্রাম্পের সঙ্গে এপস্টেইনের যোগাযোগ সম্পর্কিত তথ্য গত সপ্তাহে আবার খবরের শিরোনামে আসে। তখন ২০ হাজারের বেশি নথি প্রকাশিত হয়। এর কয়েকটিতে ট্রাম্পের নাম আছে। তবে হোয়াইট হাউস কোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ক্যাপিটল হিলে যারা নথি প্রকাশের পক্ষে, তাদের সমালোচনা থেকে ‘লুকানোর কিছু নেই- বলে সম্প্রতি ট্রাম্প এমন বক্তব্য দেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি এপস্টেইন–সংক্রান্ত নথি প্রকাশের ব্যাপারে অবস্থান বদল করলে ওয়াশিংটনের অনেকে বিস্মিত হন।
কয়েক সপ্তাহ ধরেই রিপাবলিকান নেতৃত্ব প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবস্থানের সঙ্গে নিজেদের অবস্থান মিলিয়ে নথি প্রকাশের বিরোধিতা করছিল। তাই তার আকস্মিক অবস্থান বদলে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে তারা।
প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন নথি প্রকাশের দাবিকে বারবার ‘ডেমোক্র্যাটদের প্রহসন’ বলে উল্লেখ করছিলেন। তবে গত মঙ্গলবার তিনিও বিলের পক্ষে ভোট দেন। পরে বিলটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টেবিলে যাওয়ার পর তিনি এতে স্বাক্ষর করেন।
ফাইল প্রকাশের পদক্ষেপ ঘোষণা করার সময় ট্রাম্প এপস্টেইনকে কেন্দ্র করে হওয়া বিতর্ককে ডেমোক্র্যাটদের জন্য ঝুঁকি হিসেবে তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, এপস্টেইন ছিলেন জীবনভর ডেমোক্র্যাট এবং তার উচ্চপদস্থ ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে সংযোগ ছিল, যার মধ্যে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও প্রাক্তন ট্রেজারি সচিব লরেন্স সামার্সও আছেন। ক্লিনটন বা সামার্সের সঙ্গে এপস্টেইনের সংযোগে কোনো অপরাধ প্রমাণিত হয়নি।
এপস্টেইনকে নিয়ে দুটি পৃথক তদন্তে হাজার হাজার নথি সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল ভুক্তভোগী ও সাক্ষীদের সাক্ষাৎকারের হুবহু প্রতিলিপি।
ট্রাম্প ও এপস্টেইন একসময় একই সার্কেলে মেলামেশা করতেন। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ২০০৮ সালে এপস্টেইন অভিযুক্ত হওয়ার অনেক আগেই তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন তিনি। ট্রাম্প দাবি করেন, এপস্টেইনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তিনি জানতেন না।
এপস্টেইনকে ২০০৮ সালে ফ্লোরিডায় ১৮ বছরের কম বয়সী একজন মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করার চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। যৌনবিষয়ক পণ্য পাচারের অন্য এক মামলায় বিচারের অপেক্ষায় থাকাকালে ২০১৯ সালে কারাগারে তার মরদেহ পাওয়া যায়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়। সূত্র: আল জাজিরা।







