ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫: ডিসঅ্যাবিলিটি-ইনক্লুসিভ (প্রতিবন্ধিতা অন্তর্ভুক্তিমূলক) বাংলাদেশ রূপান্তরকে ত্বরান্বিতকরার লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিজনেস অ্যান্ড ডিসঅ্যাবিলিটি নেটওয়ার্ক (বিবিডিএন)-এর সহযোগিতায় ‘এমপাওয়ারঅ্যাবিলিটি ২০২৫:
পাওয়ারিং এভরি অ্যাবিলিটি’ সম্মেলন আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
১১ নভেম্বর ২০২৫ ঢাকার লো মেরিডিয়েন হোটেলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ব্র্যাক ব্যাংকের ফ্ল্যাগশিপ সিএসআর উদ্যোগ ‘অপরাজেয় আমি’-এর আওতায় এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে নীতিনির্ধারক, বেসরকারি খাত ও উন্নয়ন সংস্থার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন। তাঁরা অঙ্গীকারকে বাস্তবে রূপ দিতে নীতিগত সহায়তা, কর্পোরেট প্রতিশ্রুতি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং জিআইজেড -এর সহযোগিতায় আয়োজিত এই কনফারেন্সে সবার জন্য ন্যায্য সুযোগ সৃষ্টিতে সরকারি, বেসরকারি, উন্নয়ন সংস্থাসহ সকল খাতের সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া,
ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান, বিবিডিএন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আরদাশির কবির, আইএলও গ্লোবাল বিজনেস অ্যান্ড ডিসঅ্যাবিলিটি নেটওয়ার্কের ডিসঅ্যাবিলিটি ইনক্লুসন স্পেশালিস্ট ইয়োর্গেন মেনযে এবং জিআইজেড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইয়োর্গেন শিলিং। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আইএলও, জিআইজেড, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা।
কনফারেন্সে ৫০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে, যেগুলোর মধ্যে ছিল ব্র্যাক, শিন শিন গ্রুপ, টিম গ্রুপ, এসিআই লজিস্টিকস, ব্র্যান্ড ফোরাম, বাটা, সাজিদা ফাউন্ডেশন, গ্রামীণফোন, আকিজ গ্রুপ, প্রাইম ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ইউএনডিপি এবং সেভ দ্য চিলড্রেন।
বিভিন্ন কর্পোরেট ও উন্নয়ন সংস্থার এই অংশগ্রহণ বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অগ্রযাত্রায় সম্মিলিত প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
অনুষ্ঠানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল বিবিডিএন-এর সঙ্গে বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ-এর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর। এই চুক্তির মাধ্যমে দেশের বৃহত্তম নিয়োগ খাত তৈরি পোশাকশিল্পে প্রতিবন্ধী অন্তর্ভুক্তিতার লক্ষ্যে সুষম কর্মপরিবেশ, নিয়োগ প্রক্রিয়া ও এই খাতে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
কনফারেন্সে তিনটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়, যেখানে প্রতিবন্ধী অন্তর্ভুক্তিতার ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এখানে কর্পোরেট সংস্কৃতিতে প্রবেশগম্যতা যুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থানের পথ তৈরি এবং সরকারি নীতিমালার সঙ্গে বেসরকারি খাতের উদ্যোগকে যুক্ত করা নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় বার্জার পেইন্টস, লো মেরিডিয়েন
হোটেলস অ্যান্ড রিসোর্টস, সমাজসেবা অধিদপ্তর, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি এবং উন্নয়ন সহযোগীরা প্রতিবন্ধিতা নিয়ে নিজেদের কার্যকর কৌশল ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, “অন্তর্ভুক্তি ব্র্যাক ব্যাংকের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। এটি কেবল আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর পরিধি আরও বিস্তৃত।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে জেন্ডার অন্তর্ভুক্তি, প্রতিবন্ধী অন্তর্ভুক্তি এবং সার্বিক সামাজিক অন্তর্ভুক্তি। আমাদের বুঝতে হবে, অন্তর্ভুক্তি কোনো চ্যারিটি নয়, এটি একটি টেকসই অর্থনীতির ভিত্তি। ব্র্যাক ব্যাংক ‘অপরাজেয় আমি’ উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যবসায় ও সমাজকল্যাণের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করছে। আমরা প্রমাণ করে চলছি, প্রতিটি সক্ষমতাকে ক্ষমতায়ন করা মানেই গোটা জাতিকে ক্ষমতায়ন করা।”
অনুষ্ঠানে আরদাশির কবির বলেন, “বেসরকারি খাতকে শুধু প্রতিশ্রুতি দিলেই হবে না, বাস্তবায়নও করতে হবে। প্রতিবন্ধিতাঅন্তর্ভুক্তিতা যাতে ব্যবসায়িক কৌশলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে, সে লক্ষ্যে বিবিডিএন শিল্পখাতের নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে একসাথে
কাজ করে যাবে।”







