স্ত্রী অসুস্থ হলে স্বামীর করণীয়

ছবি: সংগৃহীত

 

স্বামী-স্ত্রী একে অপরের পোশাকের মতো। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তারা তোমাদের পোষাকস্বরুপ এবং তোমরাও তাদের পোষাকস্বরুপ।’ (সূরা বাকারা, আয়াত, ১৮৭)

 

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সব থেকে নিবিড়

আয়াতে ‘পোষাক’ শব্দ ব্যবহার করে এ দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হবে একেবারে নিবিড় ও দৃঢ়, যা ঠুনকো কোনো কারণে ছিন্ন হয় না। যেমন পোশাক মানুষের প্রিয় বস্তু এবং শালীন ও অভিজাত শ্রেণীর মানুষজন কখনোই পোশাক থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চান না।

মুফাসসিরদের মতে, আয়াতে স্বামী-স্ত্রীকে একে অপরের পোশাক বলার মাধ্যমে আরেকটি বিষয় বোঝানো হয়েছে যে, তারা পরস্পরের সম্মান রক্ষাকারী, আশ্রয়স্থল এবং রস্পরের হৃদয়ের প্রশান্তি লাভের মাধ্যম। পোশাক পরার পর মানুষ যেভাবে স্বস্তি লাভ করে, ঠিক তেমনি স্বামী-স্ত্রী একে অপরের মাধ্যমে আত্মিক ও দৈহিক প্রশান্তি লাভ করেন।

 

সুখী সংসার গঠনে 

সুখী সংসার গঠনে স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই বিশেষ করণীয় আছে। কিন্তু পরিবারের দায়িত্বশীল হিসেবে এ ক্ষেত্রে স্বামীর দায়িত্ব বেশি। দাম্পত্য জীবন সুখকর, সুশৃঙ্খল করতে এবং স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন অটুট রাখার স্বার্থে ইসলাম জীবনসঙ্গী স্বামীর ওপর গুরুত্বপূর্ণ সব দায়িত্ব অর্পণ করেছে। আল্লাহ বলেন, ‘আর জন্মদাতা পিতার দায়িত্ব হল ন্যায়সঙ্গতভাবে প্রসূতি মায়েদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করা।’ (বাকারা, আয়াত, ২৩৩)।

 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আর তোমাদের উপর তাদের ন্যায়সঙ্গত ভরণ-পোষণের ও পোশাক-পরিচ্ছদের অধিকার রয়েছে।’ (মুসলিম, হাদিস, ১২১৮; মিশকাত, হাদিস, ২৫৫৫)।

 

অন্য হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সব থেকে ভালো মানুষ তারাই, যারা তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে।’ (সুনানে তিরমিজি, ১১৬২)

 

অসুস্থ স্ত্রীর পাশে…

স্বাভাবিক নিয়মে স্বামী অসুস্থ হলে স্ত্রীরা মনপ্রাণ দিয়ে স্বামীর সেবা করে থাকেন। এর বিপরীতে স্বামীদের পক্ষ থেকে স্ত্রীদের এমন সেবা করতে দেখা যায় না খুব একটা। তবে ইসলাম দুজনের প্রতি দুজনের দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে গুরুত্ব দিয়েছে। স্ত্রী অসুস্থ হলে তার সেবা করা ইসলামের শিক্ষা।

 

সাধ্যমতো অসুস্থ স্ত্রীর সেবা করা স্বামীর কর্তব্য। ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, ওসমান রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বদর যুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন। কারণ, তার স্ত্রী আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কন্যা অসুস্থ ছিলেন। তখন নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেন, বদর যুদ্ধে যোগদানকারীর সমপরিমাণ সওয়াব ও (গনিমতের) অংশ তুমি পাবে। (বুখারি, হাদিস, ৩১৩০ ।সূএ:   ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান তারেক রহমানের

» সরকারি চাকরি ফিরে পাচ্ছেন ডা. জুবাইদা রহমান

» জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি দায়িত্ব পালন করবেন এটিএম মা’ছুম

» পাকিস্তানকে ভয় পায় ভারত: ইলিয়াস

» ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা, পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ আইজিপির

» আপাতত গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়াবে না সরকার: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

» ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ: প্রেস সচিব

» র‍্যাব অফিসে এএসপি পলাশের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার, পাশে চিরকুট

» লক্ষ্মীপুরে বিআরটিএ বাড়তি টাকা আদায়ের সত্যতা পেয়েছে দুদক

» সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে প্রাইম ব্যাংকের চুক্তি স্বাক্ষর

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

স্ত্রী অসুস্থ হলে স্বামীর করণীয়

ছবি: সংগৃহীত

 

স্বামী-স্ত্রী একে অপরের পোশাকের মতো। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তারা তোমাদের পোষাকস্বরুপ এবং তোমরাও তাদের পোষাকস্বরুপ।’ (সূরা বাকারা, আয়াত, ১৮৭)

 

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সব থেকে নিবিড়

আয়াতে ‘পোষাক’ শব্দ ব্যবহার করে এ দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হবে একেবারে নিবিড় ও দৃঢ়, যা ঠুনকো কোনো কারণে ছিন্ন হয় না। যেমন পোশাক মানুষের প্রিয় বস্তু এবং শালীন ও অভিজাত শ্রেণীর মানুষজন কখনোই পোশাক থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চান না।

মুফাসসিরদের মতে, আয়াতে স্বামী-স্ত্রীকে একে অপরের পোশাক বলার মাধ্যমে আরেকটি বিষয় বোঝানো হয়েছে যে, তারা পরস্পরের সম্মান রক্ষাকারী, আশ্রয়স্থল এবং রস্পরের হৃদয়ের প্রশান্তি লাভের মাধ্যম। পোশাক পরার পর মানুষ যেভাবে স্বস্তি লাভ করে, ঠিক তেমনি স্বামী-স্ত্রী একে অপরের মাধ্যমে আত্মিক ও দৈহিক প্রশান্তি লাভ করেন।

 

সুখী সংসার গঠনে 

সুখী সংসার গঠনে স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই বিশেষ করণীয় আছে। কিন্তু পরিবারের দায়িত্বশীল হিসেবে এ ক্ষেত্রে স্বামীর দায়িত্ব বেশি। দাম্পত্য জীবন সুখকর, সুশৃঙ্খল করতে এবং স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন অটুট রাখার স্বার্থে ইসলাম জীবনসঙ্গী স্বামীর ওপর গুরুত্বপূর্ণ সব দায়িত্ব অর্পণ করেছে। আল্লাহ বলেন, ‘আর জন্মদাতা পিতার দায়িত্ব হল ন্যায়সঙ্গতভাবে প্রসূতি মায়েদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করা।’ (বাকারা, আয়াত, ২৩৩)।

 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আর তোমাদের উপর তাদের ন্যায়সঙ্গত ভরণ-পোষণের ও পোশাক-পরিচ্ছদের অধিকার রয়েছে।’ (মুসলিম, হাদিস, ১২১৮; মিশকাত, হাদিস, ২৫৫৫)।

 

অন্য হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সব থেকে ভালো মানুষ তারাই, যারা তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে।’ (সুনানে তিরমিজি, ১১৬২)

 

অসুস্থ স্ত্রীর পাশে…

স্বাভাবিক নিয়মে স্বামী অসুস্থ হলে স্ত্রীরা মনপ্রাণ দিয়ে স্বামীর সেবা করে থাকেন। এর বিপরীতে স্বামীদের পক্ষ থেকে স্ত্রীদের এমন সেবা করতে দেখা যায় না খুব একটা। তবে ইসলাম দুজনের প্রতি দুজনের দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে গুরুত্ব দিয়েছে। স্ত্রী অসুস্থ হলে তার সেবা করা ইসলামের শিক্ষা।

 

সাধ্যমতো অসুস্থ স্ত্রীর সেবা করা স্বামীর কর্তব্য। ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, ওসমান রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বদর যুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন। কারণ, তার স্ত্রী আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কন্যা অসুস্থ ছিলেন। তখন নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেন, বদর যুদ্ধে যোগদানকারীর সমপরিমাণ সওয়াব ও (গনিমতের) অংশ তুমি পাবে। (বুখারি, হাদিস, ৩১৩০ ।সূএ:   ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com