ছবি: সংগৃহীত
আমাদের প্রায় সবার ঘরেই কমবেশি আসবাবপত্র থাকে। কারণ ঘরের সৌন্দর্য বর্ধনে আসবাবপত্রের বিকল্প নেই। নিয়মিত এসবের যত্ন না নিলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে বর্ষায় স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশের কারণে আসবাবপত্রে পোকামাকড়ের উপদ্রব, ছত্রাকের উপস্থিতি দেখা দেয়।
আপনি কখনো কি খেয়াল করে দেখেছেন, বর্ষায় দামি কাঠের আসবাবপত্রও নিস্তেজ ও বিবর্ণ রূপ ধারণ করে? আর তাই বিশেষ করে বর্ষায় কাঠের আসবাবপত্রের যত্ন নেওয়া জরুরি। না হলে সেগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
আর তাই বর্ষায় ঘরের আসবাবপত্র ভালো রাখর উপায় জেনে নিন-
> আসবাবপত্র ফাটল ঠিক করুন: কাঠের আসবাবপত্রের ফাটল, জয়েন্ট ও কোণগুলোতে যতি ফাটল দেখা যায় তাহলে সেগুলো ভরাট করার ব্যবস্থা করুন। না হলে সেখান থেকে নষ্ট হওয়া শুরু হবে আসবাব।
> কর্পূর ট্যাবলেট ও ন্যাপথলিন বল: কীটনাশক ডিওডোরেন্ট হিসেবে কর্পূর ট্যাবলেট ও ন্যাপথলিন বল ব্যবহার করুন। এগুলো আর্দ্রতা শোষণকারী ও কীটপতঙ্গকে দূরে রাখে। এছাড়া নিমপাতা ও লবঙ্গও কার্যকরী প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্ট হিসেবে কাজ করে ও দ্রুত আর্দ্রতা শোষণ করতে পারে।
> আসবাবপত্র প্রাচীর থেকে দূরে রাখুন: বৃষ্টির হাত থেকে আসবাবপত্র রক্ষা করতে কাঠের আসবাবপত্র দেওয়াল থেকে অন্তত ৬ ইঞ্চি দূরে সরিয়ে নিন। বর্ষায় দেওয়াল আর্দ্রতা সঞ্চয় করে ও এটি কাঠের আসবাবপত্রের ক্ষতি করতে পারে। এটি দেওয়ালে ডাম্প ধরে না ও কংক্রিটের কাঠামো শ্বাস নেওয়ার জায়গা পায়। ফলে আর্দ্রতা থেকে মুক্তি পায়।
> দরজা ও জানালা খোলা রাখুন: ঘরের আসবাবপত্র ভালো রাখতে হলে দরজা-জানালা খোলা রাখতে হবে। ঘরের ভেতরে যাতে হাওয়া-বাতাস চলাফেরা করতে পারে সে ব্যবস্থা করুন। এটি ঘরের ভেতরে জমাট বাঁধা, আর্দ্রতা ও দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।
শুকনো কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করুন: কাঠের আসবাবপত্র ভালো রাখতে এর পরিচর্যা করুন পরিষ্কার কাপড় দিয়ে। ভেজা বা আর্দ্র কাপড় দিয়ে কখনো আসবাবপত্র পরিষ্কার করবেন না।
দরজা ও জানালার কব্জায় তেল বা মোমযুক্ত করুন: বর্ষায় আসবাবপত্রের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি ওয়ারড্রোব, দরজা এমনকি জানালাও পরিষ্কার করতে হবে নিয়মিত। এসময় এগুলোতে জ্যাম ধরতে পারে, তাই অতিরিক্ত চাপ দেবেন না! ঝামেলা এড়াতে বর্ষা শুরুতেই দরজা ও জানালার কব্জায় তেল দিন বা মোম লাগিয়ে নিন।
> এ সময় কাঠের আসবাব কিনবেন না: বর্ষাকালে কাঠের জিনিসপত্র কিনবেন না। বর্ষার আগে বা বর্ষা শেষ হওয়ার পরে সেগুলো কিনুন।
সংস্কারের পরিবর্তে রক্ষণাবেক্ষণ: বর্ষায় কাঠের আসবাবপত্র সংস্কার করবেন না। কারণ ছুতার কাজ, পেইন্টিং ও বার্নিশের কাজ টেকসই করতে শুষ্ক আবহাওয়া প্রয়োজন। তাই এ সময় রক্ষণাবেক্ষণ করুন সংস্কার না করে।
আসবাবপত্র আনা-নেওয়া করবেন না: বর্ষাকালে আসবাবপত্র পরিবহন করবেন না, বিশেষ করে কাঠেরগুলো। পরিবহনকালে স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ার কারণে আসবাবপত্রগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যদি করতেই হয় তাহলে নিশ্চিত করুন সেগুলো ভালোভাবে প্যাক করা হয়েছে কি না।
বার্নিশিং: বর্ষায় আসবাবপত্রের যত্নের জন্য বার্নিশিং একটি কার্যকর প্রক্রিয়া। অন্তত বর্ষার এক মাস আগে কাঠের আসবাবপত্রে বার্নিশের ছোঁয়া দিতে পারেন।
এটি আসবাবপত্রকে আর্দ্রতা থেকে বাঁচাবে ও চকচকে রূপ ধরে রাখবে। বার্নিশ উইপোকা ও পিঁপড়ার বিরুদ্ধে সুরক্ষার ঢাল হিসেবে কাজ করে। একইভাবে কাঠের সম্পদ টেকসইও করে।
আসবাবপত্রের ওপর কাপড় শুকাবেন না: অনেকেই বৃষ্টির দিনে বাইরে কাপড় শুকাতে না পেরে কাঠের আসবাবপত্রের ওপর সেগুলো মেলে রাখেন। এতে কিছু আসবাবপত্রের ক্ষতি হয়।
এজন্য এই কাজ আর করবেন না ও ঘরে ভেজা কাপড় মেলে রেখে শুকানোর চেষ্টা করবেন না। এতে ঘর আরও স্যাঁস্যাঁতে হয়ে উঠবে।
হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন: এ সময় ঘরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন। এটি ঘরের আর্দ্রতা পরীক্ষা করতে পারে ও পরিবারের শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করলে স্যাঁতসেঁতে দুর্গন্ধ দূর হয় ও আসবাবপত্র ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
সূএ: ডেইলি-বাংলাদেশ