ইতালি লাম্পেদুসায় ধারণক্ষমতার ৮ গুণ অভিবাসী

ছবি সংগৃহীত

 

সপ্তাহান্তে হাজারো অভিবাসনপ্রত্যাশী ভিড় জমিয়েছেন ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ লাম্পেদুসায়। অভিবাসীদের সিসিলি এবং ইতালির মূল ভূখণ্ডে স্থানান্তরের পরও লাম্পেদুসার ‘হটস্পট’ বা প্রথম অভ্যর্থনা কেন্দ্রটিতে অভিবাসীদের সংখ্যা ছিল ধারণক্ষমতার আট গুণ।

 

সপ্তাহান্তে, লাম্পেদুসার প্রথম অভ্যর্থনা কেন্দ্র বা ‘হটস্পট’-এ তিন হাজার ২৭৯ অভিবাসী ছিলেন বলে জানা গেছে। ইউরোপীয় গণমাধ্যম ইউরোনিউজ জানিয়েছে, এই সংখ্যাটি কেন্দ্রটির ধারণক্ষমতার আট গুণ। হাজারো অভিবাসী আগমনের ভিডিওচিত্রও প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমটি।

অন্যদিকে, ইতালির সংবাদপত্র ফ্যানপেজ দাবি করেছে, ওই কেন্দ্রটিতে এমন উপচেপড়া ভিড় এর আগে কখনও দেখা যায়নি৷ শুক্রবার (৩০ জুন) পর্যন্ত কয়েক দিনের ব্যবধানে দুই হাজারেরও বেশি অভিবাসী সেখানে এসেছেন বলে জানা গেছে৷ সপ্তাহান্তে সেই সংখ্যাটি আরও বেড়েছে।

 

ইউরোনিউজ বলছে, ইতালি কর্তৃপক্ষ মোট ৬৯৭ জনকে ফেরিতে করে সিসিলিতে নিয়ে গেছেন। কিন্তু তখনও হাজারো মানুষ উপচেপড়া অভ্যর্থনা কেন্দ্রটিতে অপেক্ষমাণ ছিলেন। অসংখ্য ছবি এবং ভিডিওতে তার সত্যতা প্রমাণ হয়েছে। এতে দেখা গেছে, অভিবাসীদের কেউ মেঝেতে ঘুমাচ্ছেন, কেউ বাইরের উঠানে।

 

কয়েক সপ্তাহ আগে, ইতালীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, তারা প্রতি সপ্তাহে দুই হাজার আটশ অভিবাসীকে স্থানান্তর করতে পারবেন। সেই লক্ষ্য তারা পূরণ করতে পেরেছেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কয়েক সপ্তাহ আগে, অন্যান্য ইইউ রাজনীতিকরাও কেন্দ্রটি ঘুরে দেখেছেন। তখনও সেখানে উপচেপড়া ভিড় ছিল।

থেমে নেই অভিবাসী আগমন

বেসরকারি মিডিয়া চ্যানেল মিডিয়াসেটের টিজি২৪ নিউজ জানিয়েছে, ২৯ জুন ১৪টি নৌকায় ৬৯৬ জন অভিবাসী লাম্পেদুসায় পৌঁছান। একেকটি নৌকায় সর্বনিম্ন ২৭ জন থেকে সর্বোচ্চ ১৩৩ পর্যন্ত ছিলেন। তাদের কেউ কেউ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দ্বীপে পৌঁছাতে পেরেছিলেন। আর অন্যদের ইতালীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার অঞ্চল থেকে উপকূলরক্ষীরা উদ্ধার করেন।

২৮ জুন সেখানে আসেন আরও এক হাজার ১৯২ অভিবাসী। তখন চ্যানেলটি জানিয়েছিল, সিসিলি ও ইতালির মূল ভূখণ্ডে স্থানান্তরের পরেও সেখানে দুই হাজার ৬৯ জন অভিবাসী অবস্থান করছেন।

নৌকা এসেছে তিউনিশিয়া থেকে

বৃহস্পতিবার রাতে অভিবাসীদের নিয়ে আসা নৌকাগুলোর মধ্যে একটি জানিয়েছে, আসার পথে তাদের কয়েকজন সঙ্গী সমুদ্রে পড়ে গেছেন এবং নিখোঁজ হয়েছেন। টিজি২৪ জানিয়েছে, রাতে উদ্ধারের কারণে কতজন নিখোঁজ হয়েছিলেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা ইতালির পুলিশকে জানিয়েছেন, টিউনিশিয়ার স্ফ্যাক্স থেকে প্রায় সাত মিটার একটি নৌকায় চেপে তারা রওনা হয়েছিলেন।

ইতালিতে আগমন

ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বছর ৩০ জুন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৯৩০ জন অভিবাসী দেশটির উপকূলে এসেছেন। এর মধ্যে ২৯ জুন রেকর্ডসংখ্যক দুই হাজার ৩০৭ জন অভিবাসী এসেছেন। আর ২৮ জুন ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, সেদিন এসেছিলেন এক হাজার ৩৬২ জন অভিবাসী।

২০২৩ সালে ইতালিতে আসা অভিবাসীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় প্রতি মাসেই বেড়েছে। শুধু মে মাসে কম হয়েছে। এ বছরে মে মাসে এসেছেন আট হাজার ১৫৪ জন অভিবাসী। আর গত বছর একই মাসে সংখ্যাটি ছিল আট হাজার ৭২০। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত এপ্রিলে দেশজুড়ে ছয় মাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে ইতালি।   সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ধমক দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত করতে চাইলে বিএনপি সহ্য করবে না : ফারুক

» পিআর ইস্যুতে যা বললেন মঈন খান

» ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার পরিসর বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

» আসিফের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» দেশের স্বার্থে বন্দর ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

» বিশেষ অভিযানে মোট ১ হাজার ৩৫৩ জন গ্রেফতার

» হজ শেষে ফিরেছেন ৬০ হাজার ৫১৩ হাজি

» জামালপুরে নারী এগিয়ে চলা প্রকল্পের সভা অনুষ্ঠিত

» জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে  মোরেলগঞ্জে বিএনপির বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি

» ইসলামপুরে রহিম মেম্বার হত্যা সন্দেহে দুইজন আটক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ইতালি লাম্পেদুসায় ধারণক্ষমতার ৮ গুণ অভিবাসী

ছবি সংগৃহীত

 

সপ্তাহান্তে হাজারো অভিবাসনপ্রত্যাশী ভিড় জমিয়েছেন ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ লাম্পেদুসায়। অভিবাসীদের সিসিলি এবং ইতালির মূল ভূখণ্ডে স্থানান্তরের পরও লাম্পেদুসার ‘হটস্পট’ বা প্রথম অভ্যর্থনা কেন্দ্রটিতে অভিবাসীদের সংখ্যা ছিল ধারণক্ষমতার আট গুণ।

 

সপ্তাহান্তে, লাম্পেদুসার প্রথম অভ্যর্থনা কেন্দ্র বা ‘হটস্পট’-এ তিন হাজার ২৭৯ অভিবাসী ছিলেন বলে জানা গেছে। ইউরোপীয় গণমাধ্যম ইউরোনিউজ জানিয়েছে, এই সংখ্যাটি কেন্দ্রটির ধারণক্ষমতার আট গুণ। হাজারো অভিবাসী আগমনের ভিডিওচিত্রও প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমটি।

অন্যদিকে, ইতালির সংবাদপত্র ফ্যানপেজ দাবি করেছে, ওই কেন্দ্রটিতে এমন উপচেপড়া ভিড় এর আগে কখনও দেখা যায়নি৷ শুক্রবার (৩০ জুন) পর্যন্ত কয়েক দিনের ব্যবধানে দুই হাজারেরও বেশি অভিবাসী সেখানে এসেছেন বলে জানা গেছে৷ সপ্তাহান্তে সেই সংখ্যাটি আরও বেড়েছে।

 

ইউরোনিউজ বলছে, ইতালি কর্তৃপক্ষ মোট ৬৯৭ জনকে ফেরিতে করে সিসিলিতে নিয়ে গেছেন। কিন্তু তখনও হাজারো মানুষ উপচেপড়া অভ্যর্থনা কেন্দ্রটিতে অপেক্ষমাণ ছিলেন। অসংখ্য ছবি এবং ভিডিওতে তার সত্যতা প্রমাণ হয়েছে। এতে দেখা গেছে, অভিবাসীদের কেউ মেঝেতে ঘুমাচ্ছেন, কেউ বাইরের উঠানে।

 

কয়েক সপ্তাহ আগে, ইতালীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, তারা প্রতি সপ্তাহে দুই হাজার আটশ অভিবাসীকে স্থানান্তর করতে পারবেন। সেই লক্ষ্য তারা পূরণ করতে পেরেছেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কয়েক সপ্তাহ আগে, অন্যান্য ইইউ রাজনীতিকরাও কেন্দ্রটি ঘুরে দেখেছেন। তখনও সেখানে উপচেপড়া ভিড় ছিল।

থেমে নেই অভিবাসী আগমন

বেসরকারি মিডিয়া চ্যানেল মিডিয়াসেটের টিজি২৪ নিউজ জানিয়েছে, ২৯ জুন ১৪টি নৌকায় ৬৯৬ জন অভিবাসী লাম্পেদুসায় পৌঁছান। একেকটি নৌকায় সর্বনিম্ন ২৭ জন থেকে সর্বোচ্চ ১৩৩ পর্যন্ত ছিলেন। তাদের কেউ কেউ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দ্বীপে পৌঁছাতে পেরেছিলেন। আর অন্যদের ইতালীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার অঞ্চল থেকে উপকূলরক্ষীরা উদ্ধার করেন।

২৮ জুন সেখানে আসেন আরও এক হাজার ১৯২ অভিবাসী। তখন চ্যানেলটি জানিয়েছিল, সিসিলি ও ইতালির মূল ভূখণ্ডে স্থানান্তরের পরেও সেখানে দুই হাজার ৬৯ জন অভিবাসী অবস্থান করছেন।

নৌকা এসেছে তিউনিশিয়া থেকে

বৃহস্পতিবার রাতে অভিবাসীদের নিয়ে আসা নৌকাগুলোর মধ্যে একটি জানিয়েছে, আসার পথে তাদের কয়েকজন সঙ্গী সমুদ্রে পড়ে গেছেন এবং নিখোঁজ হয়েছেন। টিজি২৪ জানিয়েছে, রাতে উদ্ধারের কারণে কতজন নিখোঁজ হয়েছিলেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা ইতালির পুলিশকে জানিয়েছেন, টিউনিশিয়ার স্ফ্যাক্স থেকে প্রায় সাত মিটার একটি নৌকায় চেপে তারা রওনা হয়েছিলেন।

ইতালিতে আগমন

ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বছর ৩০ জুন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৯৩০ জন অভিবাসী দেশটির উপকূলে এসেছেন। এর মধ্যে ২৯ জুন রেকর্ডসংখ্যক দুই হাজার ৩০৭ জন অভিবাসী এসেছেন। আর ২৮ জুন ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, সেদিন এসেছিলেন এক হাজার ৩৬২ জন অভিবাসী।

২০২৩ সালে ইতালিতে আসা অভিবাসীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় প্রতি মাসেই বেড়েছে। শুধু মে মাসে কম হয়েছে। এ বছরে মে মাসে এসেছেন আট হাজার ১৫৪ জন অভিবাসী। আর গত বছর একই মাসে সংখ্যাটি ছিল আট হাজার ৭২০। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত এপ্রিলে দেশজুড়ে ছয় মাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে ইতালি।   সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com