টাকা ধার করে কোরবানি করা যাবে?

ছবি সংগৃহীত

 

কেউ যদি টাকা ধার করে কোরবানি করেন, তাহলে তা বিশুদ্ধ হবে কি-না; এই প্রশ্ন অনেকেরই। এমনকি অনেকেই আছেন যারা আগে থেকে কেউ ঋণগ্রস্ত রয়েছেন, তাদের কোরবানি ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য হবে কি-না এ বিষয়েও জানতে চান।

বিশিষ্ট ইসলামিক ব্যক্তিত্ব শায়খ আহমাদুল্লাহ জানান, এই দুটি মাসলার প্রথমটির উত্তর হলো, কেউ চাইলে ধার করে, ঋণ করে কোরবানি করতে পারেন যদি পরবর্তীতে এই ঋণ শোধ করার সৎ উদ্দেশ্য তার থাকে তাহলে তিনি ঋণ করে কোরবানি করতে পারেন।

জাগতিক যেকোনো কাজ যেমন আমরা ঋণ করে লোন করে করতে পারি; রাসুলে কারিম (সা.) নিজের জীবনেও তিনি লোন করেছেন, সাহাবায়ে ইকরামের অনেকে লোন করেছেন; অতএব লোন করে তিনি কোরবানি করতে পারেন।

যেকোনো ভালো কাজ এমন কি দান-সাদকাহ, হজ-উমরাহ করার জন্যও যদি কেউ ঋণ করেন এবং তার ঋণ পরিশোধ করার সৎ উদ্দেশ্য রয়েছে, ব্যবস্থা রয়েছে তাহলে তিনি ঋণ করে ভালো কাজ করতে পারেন কোরবানিটাও একই রকম। তবে, ঋণ করে কোরবানি করা তার জন্য আবশ্যক নয়। সামর্থ্য না থাকলে ইসলামি শরিয়া তাকে ঋণ করে কোরবানি করতে বাধ্য করে না।

দ্বিতীয় মাসালাটি হলো, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি কোরবানি না করে ঋণ পরিশোধ করলে যদি তার ঋণ কমে, অর্থাৎ ঋণ পরিশোধ করার বিষয়টিকে তিনি যদি অগ্রাধিকার দেন তাহলে সেটি তার জন্য উত্তম হবে। এ বিষয়ে কারও কোনো দ্বিমত নেই।

ঋণ থাকা অবস্থায় কোরবানি করা তার জন্য সঠিক হবে কি-না এর উত্তর হলো, ঋণ দুই প্রকার কিছু ঋণ আছে যেগুলোকে ইসলামি শরিয়ার পরিভাষায় বলা হয় দাইনে মোয়াজ্জেল (স্বল্প মেয়াদি ঋণ), অর্থাৎ যে ঋণ দ্রুত পরিশোধ করার প্রেশার রয়েছে বা প্রাপকের দাবি রয়েছে সেক্ষেত্রে এই ধরনের ঋণ দ্রুত শোধ করার স্বার্থে কোরবানি না করে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আর যদি দাইনে মউয়াজ্জেল (দীর্ঘমেয়াদি ঋণ) হয়, তাহলে সেই ঋণ থাকা অবস্থায় কোরবানি করা যাবে।

যেমন একজন ব্যক্তির তার স্ত্রীর কাছে মোহারানার ঋণ রয়েছে। আরও এই রকম সিস্টেম্যাটিক ঋণ রয়েছে যেগুলো হয়ত তিনি ধারবাহিকভাবে কিস্তিতে শোধ করছেন, সেক্ষেত্রে তিনি কোরবানি করতে পারেন।

আমাদের সমাজে অনেক ব্যক্তি আছেন যারা অধীনস্থ কর্মকর্তা, কর্মচারী এমনকি কাজের লোকের পাওনাকে আটকে রেখে তারা বড় বড় গরু কোরবানি করেন, ইসলামি শরিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে এটি জঘন্য অপরাধ। অন্যের হক না দিয়ে কোরবানি করলে তাতে আল্লাহ সুবানাহুতা’লা মোটেও সন্তুষ্ট হবেন না। অতএব, আমাদের কারো এ ধরনের ঋণ থাকলে আমরা কোরবানির উপরে ঋণ পরিশোধকে অগ্রাধিকার দেবো।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধে প্রধান উপদেষ্টাকে বার বার পত্র দিয়েছে বিএনপি’

» রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আ. লীগকে নিষিদ্ধ করলে ভালো হতো : জামায়াত আমির

» গাজায় মৃত্যু ঝুঁকিতে ৬৫ হাজার শিশু

» ব্যক্তি বা সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিধান যুক্ত করে সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন

» জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছোঁয়া ক্রীড়াঙ্গনেও লেগেছিল : যুব ও ক্রীড়া উ পদেষ্টা

» ফেসবুক-ইউটিউব-গণমাধ্যমে আওয়ামী লীগের প্রচারণা নিষিদ্ধ

» ওয়ানশুটার গান ও দেশীয় অস্ত্রসহ তিনজন আটক

» রাজনৈতিক দলের বিচারে ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ

» নিজের আকিকা করা যাবে?

» যুবককে কুপিয়ে হত্যা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

টাকা ধার করে কোরবানি করা যাবে?

ছবি সংগৃহীত

 

কেউ যদি টাকা ধার করে কোরবানি করেন, তাহলে তা বিশুদ্ধ হবে কি-না; এই প্রশ্ন অনেকেরই। এমনকি অনেকেই আছেন যারা আগে থেকে কেউ ঋণগ্রস্ত রয়েছেন, তাদের কোরবানি ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য হবে কি-না এ বিষয়েও জানতে চান।

বিশিষ্ট ইসলামিক ব্যক্তিত্ব শায়খ আহমাদুল্লাহ জানান, এই দুটি মাসলার প্রথমটির উত্তর হলো, কেউ চাইলে ধার করে, ঋণ করে কোরবানি করতে পারেন যদি পরবর্তীতে এই ঋণ শোধ করার সৎ উদ্দেশ্য তার থাকে তাহলে তিনি ঋণ করে কোরবানি করতে পারেন।

জাগতিক যেকোনো কাজ যেমন আমরা ঋণ করে লোন করে করতে পারি; রাসুলে কারিম (সা.) নিজের জীবনেও তিনি লোন করেছেন, সাহাবায়ে ইকরামের অনেকে লোন করেছেন; অতএব লোন করে তিনি কোরবানি করতে পারেন।

যেকোনো ভালো কাজ এমন কি দান-সাদকাহ, হজ-উমরাহ করার জন্যও যদি কেউ ঋণ করেন এবং তার ঋণ পরিশোধ করার সৎ উদ্দেশ্য রয়েছে, ব্যবস্থা রয়েছে তাহলে তিনি ঋণ করে ভালো কাজ করতে পারেন কোরবানিটাও একই রকম। তবে, ঋণ করে কোরবানি করা তার জন্য আবশ্যক নয়। সামর্থ্য না থাকলে ইসলামি শরিয়া তাকে ঋণ করে কোরবানি করতে বাধ্য করে না।

দ্বিতীয় মাসালাটি হলো, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি কোরবানি না করে ঋণ পরিশোধ করলে যদি তার ঋণ কমে, অর্থাৎ ঋণ পরিশোধ করার বিষয়টিকে তিনি যদি অগ্রাধিকার দেন তাহলে সেটি তার জন্য উত্তম হবে। এ বিষয়ে কারও কোনো দ্বিমত নেই।

ঋণ থাকা অবস্থায় কোরবানি করা তার জন্য সঠিক হবে কি-না এর উত্তর হলো, ঋণ দুই প্রকার কিছু ঋণ আছে যেগুলোকে ইসলামি শরিয়ার পরিভাষায় বলা হয় দাইনে মোয়াজ্জেল (স্বল্প মেয়াদি ঋণ), অর্থাৎ যে ঋণ দ্রুত পরিশোধ করার প্রেশার রয়েছে বা প্রাপকের দাবি রয়েছে সেক্ষেত্রে এই ধরনের ঋণ দ্রুত শোধ করার স্বার্থে কোরবানি না করে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আর যদি দাইনে মউয়াজ্জেল (দীর্ঘমেয়াদি ঋণ) হয়, তাহলে সেই ঋণ থাকা অবস্থায় কোরবানি করা যাবে।

যেমন একজন ব্যক্তির তার স্ত্রীর কাছে মোহারানার ঋণ রয়েছে। আরও এই রকম সিস্টেম্যাটিক ঋণ রয়েছে যেগুলো হয়ত তিনি ধারবাহিকভাবে কিস্তিতে শোধ করছেন, সেক্ষেত্রে তিনি কোরবানি করতে পারেন।

আমাদের সমাজে অনেক ব্যক্তি আছেন যারা অধীনস্থ কর্মকর্তা, কর্মচারী এমনকি কাজের লোকের পাওনাকে আটকে রেখে তারা বড় বড় গরু কোরবানি করেন, ইসলামি শরিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে এটি জঘন্য অপরাধ। অন্যের হক না দিয়ে কোরবানি করলে তাতে আল্লাহ সুবানাহুতা’লা মোটেও সন্তুষ্ট হবেন না। অতএব, আমাদের কারো এ ধরনের ঋণ থাকলে আমরা কোরবানির উপরে ঋণ পরিশোধকে অগ্রাধিকার দেবো।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com