নারীদের জুমার নামাজের বিধান

সংগৃহীত ছবি

 

جُمُعَة (জুমুআহ) শব্দটি আরবি, এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া। যেহেতু, সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন-মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামাতের সঙ্গে সে দিনের জোহরের নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ ফরজরূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাজকে ‘জুমার নামাজ’ বলা হয়।

 

তবে জুমার নামাজ পুরুষদের জন্য ফরজ; নারীদের জন্য নয়। তাই নারীরা বাড়িতে জুমার সময়ে যথা নিয়মে জোহরের নামাজ পড়বে। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের দিকনির্দেশনাও এমনই। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত তারিক ইবনে শিহাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‏ الْجُمُعَةُ حَقٌّ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ فِي جَمَاعَةٍ إِلاَّ أَرْبَعَةً عَبْدٌ مَمْلُوكٌ أَوِ امْرَأَةٌ أَوْ صَبِيٌّ أَوْ مَرِيضٌ ‏


অর্থ: ‘জুমার নামাজ প্রত্যেক মুসলমানের ওপর জামাতের সঙ্গে আদায় করা ওয়াজিব (অবশ্যক কর্তব্য)। কিন্তু তা চার প্রকার লোকের ওপর ওয়াজিব নয়। (তারা হলো)- ১. ক্রীতদাস, ২. নারী, ৩. শিশু ও ৪. রুগ্ন ব্যক্তি।’ (আবু দাউদ ১০৬৭)

 

উল্লেখিত হাদিসের আলোকে এটা সুস্পষ্ট যে, নারীর জন্য জুমার নামাজ পড়া আবশ্যক নয়। তারা জুমার সময় জোহরের নামাজ আদায় করবে। তবে কোনো নারী যদি বাড়ির সন্নিকটে অবস্থিত তাদের জন্য আলাদা নিরাপদ নামাজের ব্যবস্থা থাকে তবে এমন মসজিদে জুমা আদায় করতে পারবে। তারা সেখানে স্বামী বা মাহরাম পুরুষ (তথা পিতা, ভাই, সন্তান, দাদা, চাচা) এর সঙ্গে জুমা সমজিদে যায় তাহলে সেখানে পুরুষের সঙ্গে আলাদা ব্যবস্থাপনায় একই সময়ে জুমার নামাজ পড়বে। যদিও নারীদের জন্য মসজিদে না গিয়ে বাড়িতে নামাজ পড়াই অধিক উত্তম।

নারীরা যদি জুমা মসজিদে যায় তবে তারা অবশ্যই পূর্ণ পর্দা সহকারে যাবে, পরপুরুষদের থেকে দূরে অবস্থান করবে এবং আতর-সুগন্ধি ব্যবহার করবে না। হাদিসের দিকনির্দেশনা এমনই।

 

হজরত আবু হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- لاَ تَمْنَعُوْا إِمَاءَ اللهِ مَسَاجِدَ اللهِ ، وَلَكِنْ لِيَخْرُجْنَ وَهُنَّ تَفِلاَتٌ

অর্থ: ‘তোমরা আল্লাহর বান্দিদের মসজিদে যেতে নিষেধ করো না। তবে তারা যেনকোনো রকম সাজ-সজ্জা ও সুবাস-সুগন্ধ না লাগিয়ে বের হয়।’ (আবু দাউদ ৫৬৫, মুসনাদে আহমাদ ২/৪৩৮)

 

উল্লেখ্য, বাড়িতে শুধু নারীদের নিয়ে আলাদাভাবে জুমার নামাজ অথবা এককভাবে জুমার নামাজ বৈধ নয়। সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটির ফতোয়ায়ও তা বলা হয়েছে-
إذا صلت المرأة الجمعة مع إمام الجمعة كَفَتهَا عن الظهر ، فلا يجوز لها أن تصليَ ظهر ذلك اليوم ، أما إن صلت وحدها فليس لها أن تصلي إلا ظهرا ، وليس لها أن تصلي جمعة ” انتهى

অর্থ: ‘যদি কোনো নারী ইমামের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করে তাহলে তা জোহর নামাজের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে। (অর্থাৎ পরে পুনরায় তার জোহর নামাজ পড়ার প্রয়োজন নাই)। আর সে যদি একাকি নামাজ পড়ে তাহলে সে কেবল জোহর পড়বে। এককভাবে তার জন্য জুমা পড়া বৈধ নয়।’ (ফাতাওয়া লাজনাহ দায়েমা/৭৩৩৭)   সূএ : ডেইলি-বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আমাদের আন্দোলন দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে : নাহিদ ইসলাম

» সাফে শ্রীলঙ্কাকে ৯ গোলে বিধ্বস্ত করলো বাংলাদেশ

» বিএনপি দেশে দ্রুত গণতান্ত্রিক উত্তরণ চায় : গয়েশ্বর

» আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদকে অপবিত্র করেছে : আলাল

» কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানি হামলা, স্যাটেলাইট চিত্রে যা দেখা গেলো

» ১১ জুলাইকে ‘প্রথম প্রতিরোধ দিবস’ ঘোষণা উপদেষ্টা আসিফের

» তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জয়পুরহাটে বিএনপি নেতা ফয়সল আলীমের গণসংযোগ  

» বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলের বসতবাড়ি থেকে ৬ ফুট লম্বা পদ্মগোখরা উদ্ধার, এলাকায় চাঞ্চল্য

» মোরেলগঞ্জে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসএসসি সমমান পরীক্ষায় শতভাগ ফেল

» দুর্বৃত্তদের গুলিতে যুবদল নেতা নিহত

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নারীদের জুমার নামাজের বিধান

সংগৃহীত ছবি

 

جُمُعَة (জুমুআহ) শব্দটি আরবি, এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া। যেহেতু, সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন-মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামাতের সঙ্গে সে দিনের জোহরের নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ ফরজরূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাজকে ‘জুমার নামাজ’ বলা হয়।

 

তবে জুমার নামাজ পুরুষদের জন্য ফরজ; নারীদের জন্য নয়। তাই নারীরা বাড়িতে জুমার সময়ে যথা নিয়মে জোহরের নামাজ পড়বে। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের দিকনির্দেশনাও এমনই। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত তারিক ইবনে শিহাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‏ الْجُمُعَةُ حَقٌّ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ فِي جَمَاعَةٍ إِلاَّ أَرْبَعَةً عَبْدٌ مَمْلُوكٌ أَوِ امْرَأَةٌ أَوْ صَبِيٌّ أَوْ مَرِيضٌ ‏


অর্থ: ‘জুমার নামাজ প্রত্যেক মুসলমানের ওপর জামাতের সঙ্গে আদায় করা ওয়াজিব (অবশ্যক কর্তব্য)। কিন্তু তা চার প্রকার লোকের ওপর ওয়াজিব নয়। (তারা হলো)- ১. ক্রীতদাস, ২. নারী, ৩. শিশু ও ৪. রুগ্ন ব্যক্তি।’ (আবু দাউদ ১০৬৭)

 

উল্লেখিত হাদিসের আলোকে এটা সুস্পষ্ট যে, নারীর জন্য জুমার নামাজ পড়া আবশ্যক নয়। তারা জুমার সময় জোহরের নামাজ আদায় করবে। তবে কোনো নারী যদি বাড়ির সন্নিকটে অবস্থিত তাদের জন্য আলাদা নিরাপদ নামাজের ব্যবস্থা থাকে তবে এমন মসজিদে জুমা আদায় করতে পারবে। তারা সেখানে স্বামী বা মাহরাম পুরুষ (তথা পিতা, ভাই, সন্তান, দাদা, চাচা) এর সঙ্গে জুমা সমজিদে যায় তাহলে সেখানে পুরুষের সঙ্গে আলাদা ব্যবস্থাপনায় একই সময়ে জুমার নামাজ পড়বে। যদিও নারীদের জন্য মসজিদে না গিয়ে বাড়িতে নামাজ পড়াই অধিক উত্তম।

নারীরা যদি জুমা মসজিদে যায় তবে তারা অবশ্যই পূর্ণ পর্দা সহকারে যাবে, পরপুরুষদের থেকে দূরে অবস্থান করবে এবং আতর-সুগন্ধি ব্যবহার করবে না। হাদিসের দিকনির্দেশনা এমনই।

 

হজরত আবু হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- لاَ تَمْنَعُوْا إِمَاءَ اللهِ مَسَاجِدَ اللهِ ، وَلَكِنْ لِيَخْرُجْنَ وَهُنَّ تَفِلاَتٌ

অর্থ: ‘তোমরা আল্লাহর বান্দিদের মসজিদে যেতে নিষেধ করো না। তবে তারা যেনকোনো রকম সাজ-সজ্জা ও সুবাস-সুগন্ধ না লাগিয়ে বের হয়।’ (আবু দাউদ ৫৬৫, মুসনাদে আহমাদ ২/৪৩৮)

 

উল্লেখ্য, বাড়িতে শুধু নারীদের নিয়ে আলাদাভাবে জুমার নামাজ অথবা এককভাবে জুমার নামাজ বৈধ নয়। সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটির ফতোয়ায়ও তা বলা হয়েছে-
إذا صلت المرأة الجمعة مع إمام الجمعة كَفَتهَا عن الظهر ، فلا يجوز لها أن تصليَ ظهر ذلك اليوم ، أما إن صلت وحدها فليس لها أن تصلي إلا ظهرا ، وليس لها أن تصلي جمعة ” انتهى

অর্থ: ‘যদি কোনো নারী ইমামের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করে তাহলে তা জোহর নামাজের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে। (অর্থাৎ পরে পুনরায় তার জোহর নামাজ পড়ার প্রয়োজন নাই)। আর সে যদি একাকি নামাজ পড়ে তাহলে সে কেবল জোহর পড়বে। এককভাবে তার জন্য জুমা পড়া বৈধ নয়।’ (ফাতাওয়া লাজনাহ দায়েমা/৭৩৩৭)   সূএ : ডেইলি-বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com