রান্নায় যে তেল ব্যবহার করছেন, জেনে নিন তার স্বাস্থ্য উপকারিতা

সংগৃহীত ছবি

 

তেল হলো রান্নার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। মসলা এবং তেল দিয়ে রান্না না করলে অনেকেরই স্বাদ মিটে না সেই খাবারে। যদিও এর প্রভাব শরীরের ওপর যথেষ্ট পড়ে।

 

চিকিৎসকরা বহু রোগীকেই অতিরিক্ত তেল না খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। তেলের মধ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাট অতিরিক্ত মাত্রায় থাকে। সেই তেল নিয়মিত সেবন করলে তার রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়তে থাকে।

রান্নার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর তেল কোনটি? এ নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন আছে। রান্নায় যে তেল ব্যবহার করছেন, সেই তেলের পুষ্টিগুণ কী, সেই তেলের ক্ষতিকারক প্রভাব কী এই সম্পর্কে আগেভাগে জেনে রাখা ভালো। আর তাই; আজ রান্না করার আগে জেনে নিন রান্নার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ তেল সম্পর্কে।

রান্নার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ তেল

রান্নার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ তেল

কারণ তেল আপনার স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ওজনের ওপর একটি বড় প্রভাব ফেলে।

সূর্যমুখীর তেল: সূর্যমুখী তেলে অলিক অ্যাসিড বেশি থাকে। এই তেল ভাজাপোড়ার জন্য ভালো বলে মনে করা হয়। তবে যেকোনো ধরনের উদ্ভিজ্জ তেল বারবার গরম করার ফলে এর গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায় এবং ট্রান্স ফ্যাট তৈরি হয়। এতে হালকা এক ধরনের গন্ধ আছে, তবে সব ধরনের রান্নায় এই তেল ব্যবহার করা যায়।

আমেরিকান ডায়েটিক্স অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ তেলের পরিবর্তে রান্নায় সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করলে রক্তে এলডিএল  বা খারাপ কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে।

 

নারকেল তেল: নারকেল তেল স্বাস্থ্যকর রান্নার তেল। এতে মাঝারি-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এটি শরীরের ফ্যাট ঝরিয়ে দ্রুত শক্তি উৎপাদন করে। রান্নায় এই তেল ব্যবহার করলে খাবার সহজে হজম হয়। সেই সঙ্গে নারকেল তেল বিপাক ক্রিয়া উন্নত করে। চুল এবং ত্বকের জন্যও এই তেল উপকারী।

সরিষার তেল: মূলত সরিষার বীজকে পিষে তার নির্যাস থেকে গাঢ় হলুদ রঙের এই সর্ষের তেলটি তৈরি করা হয়। সুস্বাদু খাবার থেকে শুরু করে শরীর ম্যাসেজ সব কিছুতেই এই তেল ব্যবহার করা যায়। এতে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে এবং এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম থাকে। সরিষার তেল শুধু খাবারের স্বাদ ও গন্ধই বাড়ায় না বরং এটি ত্বক, জয়েন্ট, পেশি এবং হৃদরোগজনিত অনেক রোগ নিরাময় করে। রান্নার জন্য এই তেল খুবই ভালো।

 

অলিভ অয়েল: অনেক জায়গাতেই রান্নায় অলিভ অয়েল ব্যবহার করা হয়। এই তেল ওজন কমানোর জন্য বেশ উপকারী। অলিভ অয়েলে থাকা পলিফেনল উপাদান ক্যান্সার এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল সালাদ, স্যুপ বা রুটি তৈরিতে ব্যবহার করলে স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়।

বাদামের তেল: বাদাম তেলে উপকারী ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা হৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তবে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের এই তেল এড়ানো উচিত।

 

রাইস ব্রান অয়েল: এই তেলে প্রচুর পরিমাণে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। ধানের তুষ থেকে তৈরি রাইস ব্রান অয়েল কোলেস্টেরল হ্রাসে ভূমিকা রাখে।

তিলের তেল: তিলের তেল ভাজাভাজির জন্য আদর্শ। এতে প্রায় সম পরিমাণে পলিউনস্যাচুরেটেড বং মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড আছে যা স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী।   সূত্র: এনডিটিভি,হেলথসটস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» গণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতায় আসতে বাধা দিচ্ছে সরকারের ভেতরের মহল : ফখরুল

» কাজী নজরুলের কবিতা দেশের মুক্তিকামী মানুষকে সাহস যুগিয়েছে : তারেক রহমান

» ডাকসু নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করলেন সানজিদা আহমেদ তন্বি

» মানুষ আর হাসিনা মার্কা নির্বাচন হতে দেবে না: সেলিম উদ্দিন

» প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে পুলিশের ধাওয়া, টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

» প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা দাবি-দাওয়ার প্রস্তাব দিলে সমাধান করে দেবো: জনপ্রশাসন সচিব

» কেউ ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করলে বরদাশত করা হবে না: প্রেস সচিব

» কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

» হত্যাচেষ্টা মামলায় ডাকসু ভিপি প্রার্থী জালাল গ্রেফতার

» তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

রান্নায় যে তেল ব্যবহার করছেন, জেনে নিন তার স্বাস্থ্য উপকারিতা

সংগৃহীত ছবি

 

তেল হলো রান্নার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। মসলা এবং তেল দিয়ে রান্না না করলে অনেকেরই স্বাদ মিটে না সেই খাবারে। যদিও এর প্রভাব শরীরের ওপর যথেষ্ট পড়ে।

 

চিকিৎসকরা বহু রোগীকেই অতিরিক্ত তেল না খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। তেলের মধ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাট অতিরিক্ত মাত্রায় থাকে। সেই তেল নিয়মিত সেবন করলে তার রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়তে থাকে।

রান্নার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর তেল কোনটি? এ নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন আছে। রান্নায় যে তেল ব্যবহার করছেন, সেই তেলের পুষ্টিগুণ কী, সেই তেলের ক্ষতিকারক প্রভাব কী এই সম্পর্কে আগেভাগে জেনে রাখা ভালো। আর তাই; আজ রান্না করার আগে জেনে নিন রান্নার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ তেল সম্পর্কে।

রান্নার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ তেল

রান্নার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ তেল

কারণ তেল আপনার স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ওজনের ওপর একটি বড় প্রভাব ফেলে।

সূর্যমুখীর তেল: সূর্যমুখী তেলে অলিক অ্যাসিড বেশি থাকে। এই তেল ভাজাপোড়ার জন্য ভালো বলে মনে করা হয়। তবে যেকোনো ধরনের উদ্ভিজ্জ তেল বারবার গরম করার ফলে এর গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায় এবং ট্রান্স ফ্যাট তৈরি হয়। এতে হালকা এক ধরনের গন্ধ আছে, তবে সব ধরনের রান্নায় এই তেল ব্যবহার করা যায়।

আমেরিকান ডায়েটিক্স অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ তেলের পরিবর্তে রান্নায় সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করলে রক্তে এলডিএল  বা খারাপ কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে।

 

নারকেল তেল: নারকেল তেল স্বাস্থ্যকর রান্নার তেল। এতে মাঝারি-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এটি শরীরের ফ্যাট ঝরিয়ে দ্রুত শক্তি উৎপাদন করে। রান্নায় এই তেল ব্যবহার করলে খাবার সহজে হজম হয়। সেই সঙ্গে নারকেল তেল বিপাক ক্রিয়া উন্নত করে। চুল এবং ত্বকের জন্যও এই তেল উপকারী।

সরিষার তেল: মূলত সরিষার বীজকে পিষে তার নির্যাস থেকে গাঢ় হলুদ রঙের এই সর্ষের তেলটি তৈরি করা হয়। সুস্বাদু খাবার থেকে শুরু করে শরীর ম্যাসেজ সব কিছুতেই এই তেল ব্যবহার করা যায়। এতে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে এবং এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম থাকে। সরিষার তেল শুধু খাবারের স্বাদ ও গন্ধই বাড়ায় না বরং এটি ত্বক, জয়েন্ট, পেশি এবং হৃদরোগজনিত অনেক রোগ নিরাময় করে। রান্নার জন্য এই তেল খুবই ভালো।

 

অলিভ অয়েল: অনেক জায়গাতেই রান্নায় অলিভ অয়েল ব্যবহার করা হয়। এই তেল ওজন কমানোর জন্য বেশ উপকারী। অলিভ অয়েলে থাকা পলিফেনল উপাদান ক্যান্সার এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল সালাদ, স্যুপ বা রুটি তৈরিতে ব্যবহার করলে স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়।

বাদামের তেল: বাদাম তেলে উপকারী ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা হৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তবে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের এই তেল এড়ানো উচিত।

 

রাইস ব্রান অয়েল: এই তেলে প্রচুর পরিমাণে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। ধানের তুষ থেকে তৈরি রাইস ব্রান অয়েল কোলেস্টেরল হ্রাসে ভূমিকা রাখে।

তিলের তেল: তিলের তেল ভাজাভাজির জন্য আদর্শ। এতে প্রায় সম পরিমাণে পলিউনস্যাচুরেটেড বং মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড আছে যা স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী।   সূত্র: এনডিটিভি,হেলথসটস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com