তপ্ত গরমে হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা, লক্ষণ ও বাঁচার উপায়

সংগৃহীত

 

রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির জন্য হাহাকার করছে সারা দেশের মানুষ। বৈশাখের প্রথম দিনেও ভয়াবহ দাবদাহে অস্থির হয়ে উঠেছে জনজীবন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাথার ওপর গনগনে সূর্য এমন দাপট দেখাচ্ছে যে, মানুষ তো বটেই, ভুগছে প্রাণপ্রকৃতিও। বৈরী আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। সাধারণত এসময় শারীরিক নানা অসুস্থতার সাথে হিট স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এক্ষেত্রে দেহের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে দেখা দেয় শারীরিক জটিলতা। এক্ষেত্রে শরীর একবারেই পানিশূন্য হয়ে পড়ে। হিট স্ট্রোকের কিছু লক্ষণ রয়েছে। সেগুলো জানা থাকলে নিজে যেমন সচেতন থাকা যায়, অন্যদের দিকেও খেয়াল রাখা যায়।

 

হিট স্ট্রোক কী?

গরমের সময়ের একটি মারাত্মক স্বাস্থ্যগত সমস্যার নাম হিট স্ট্রোক। চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী, প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ায় শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে তাকে হিট স্ট্রোক বলে। স্বাভাবিক অবস্থায় রক্ত দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। কোনো কারণে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ত্বকের রক্তনালি প্রসারিত হয় এবং অতিরিক্ত তাপ পরিবেশে ছড়িয়ে দেয়। প্রয়োজনে ঘামের মাধ্যমেও শরীরের তাপ কমে যায়। কিন্তু প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্র পরিবেশে বেশি সময় অবস্থান বা পরিশ্রম করলে তাপ নিয়ন্ত্রণ আর সম্ভব হয় না। এতে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যায় এবং হিট স্ট্রোক হয়।

হিট স্ট্রোকের লক্ষণ

১. তীব্র মাথাব্যথা

প্রচণ্ড গরমে মাথাব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া গরমে মানুষের মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে। এটি হিট স্ট্রোকের একটি লক্ষণ হতে পারে।

২. প্রচণ্ড তৃষ্ণা, পানিশূন্যতা, ঘাম

হিট স্ট্রোকের আগে ব্যক্তি চরম তৃষ্ণা অনুভব করতে পারে, সেইসঙ্গে ডিহাইড্রেটেড এবং আড়ষ্টতা অনুভব করতে পারে। শরীর নিজেকে ঠান্ডা করার জন্য অতিরিক্ত ঘাম তৈরি করতে পারে।

৩. কথা জড়িয়ে যাওয়া

হিট স্ট্রোকের আরেকটি লক্ষণ কথা জড়িয়ে যাওয়া। ব্যক্তি অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করতে পারে।

৪. দুর্বলতা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

অতিরিক্ত উত্তাপের শরীর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাজ করে। শরীরে আরও ক্লান্তি ও দুর্বলতা তৈরি হয়। ব্যক্তি অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে। এগুলো হিট স্ট্রোকের লক্ষণ।

৫. ঘাম না হওয়া

হিট স্ট্রোকের একটি লক্ষণ হল প্রচণ্ড গরমেও ঘাম না হওয়া। সাধারণত এর মানে হচ্ছে, শরীরে ঘাম হওয়ার মতো পানি আর নেই বা শরীরের প্রাকৃতিক শীতল প্রক্রিয়াটি কাজ করছে না।

বাঁচার উপায়

হিট স্ট্রোক হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধ করা উচিত। ঘরোয়া উপায়েই হিট স্ট্রোকের ঝুঁকে এড়ানো সম্ভব। এজন্য পুষ্টিকর কিছু খাবার খেতে পারেন। বিশেষ করে কিছু পানীয় আছে, যেগুলো পান করলে গরমে শরীর ঠান্ডা থাকবে ও হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমবে। বাটার মিল্কে থাকে প্রোবায়োটিক, প্রোটিন এবং ভিটামিন। যা আপনার দেশের তাপমাত্রাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। তাই গরমে বাইরে থেকে ঘরে ফিরেই পান করুন বাটার মিল্ক।

 

আয়ুর্বেদ অনুসারে বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর সামান্য মধুর সঙ্গে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে পান করার উপকারিতা অনেক। এতে দেহের তাপমাত্রা ও হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে। কাঁচা আমের জুস পান করলেও শরীর হবে ঠান্ডা। কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। একইসঙ্গে ডায়রিয়াও প্রতিরোধ করে।  সূএ:বিডি২৪লাইভ ডট কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি, দুদিনের মধ্যে অভিযান: ডিএমপি কমিশনার

» গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করে শেষ মুহূর্তে ‘শাটডাউন’ এড়ালো যুক্তরাষ্ট্র

» বাসে তল্লাশি চালিয়ে দেশীয় তৈরি পাইপ গানসহ দুই যাত্রী গ্রেপ্তার

» সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাসান আরিফের জানাজা সম্পন্ন

» উত্তর ভারতের প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামানো হচ্ছে ‘পুষ্পা-২’

» ‘স্পিরিটস অব জুলাই’ কনসার্ট ঘিরে যান চলাচলে নির্দেশনা

» সাগরে নিম্নচাপ, দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি শুরু

» বেইলি ব্রিজ ভেঙে তুরাগ ন‌দে ট্রাক, বিকল্প পথে চলার অনুরোধ

» সড়ক ও পরিবহন খাতে দুর্নীতি বন্ধ হয়নি: তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা

» ক‍্যানবেরায় ১২ প্রবাসীকে বাংলাদেশ হাইকমিশনের অ‍্যাওয়ার্ড প্রদান

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

তপ্ত গরমে হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা, লক্ষণ ও বাঁচার উপায়

সংগৃহীত

 

রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির জন্য হাহাকার করছে সারা দেশের মানুষ। বৈশাখের প্রথম দিনেও ভয়াবহ দাবদাহে অস্থির হয়ে উঠেছে জনজীবন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাথার ওপর গনগনে সূর্য এমন দাপট দেখাচ্ছে যে, মানুষ তো বটেই, ভুগছে প্রাণপ্রকৃতিও। বৈরী আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। সাধারণত এসময় শারীরিক নানা অসুস্থতার সাথে হিট স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এক্ষেত্রে দেহের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে দেখা দেয় শারীরিক জটিলতা। এক্ষেত্রে শরীর একবারেই পানিশূন্য হয়ে পড়ে। হিট স্ট্রোকের কিছু লক্ষণ রয়েছে। সেগুলো জানা থাকলে নিজে যেমন সচেতন থাকা যায়, অন্যদের দিকেও খেয়াল রাখা যায়।

 

হিট স্ট্রোক কী?

গরমের সময়ের একটি মারাত্মক স্বাস্থ্যগত সমস্যার নাম হিট স্ট্রোক। চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী, প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ায় শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে তাকে হিট স্ট্রোক বলে। স্বাভাবিক অবস্থায় রক্ত দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। কোনো কারণে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ত্বকের রক্তনালি প্রসারিত হয় এবং অতিরিক্ত তাপ পরিবেশে ছড়িয়ে দেয়। প্রয়োজনে ঘামের মাধ্যমেও শরীরের তাপ কমে যায়। কিন্তু প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্র পরিবেশে বেশি সময় অবস্থান বা পরিশ্রম করলে তাপ নিয়ন্ত্রণ আর সম্ভব হয় না। এতে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যায় এবং হিট স্ট্রোক হয়।

হিট স্ট্রোকের লক্ষণ

১. তীব্র মাথাব্যথা

প্রচণ্ড গরমে মাথাব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া গরমে মানুষের মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে। এটি হিট স্ট্রোকের একটি লক্ষণ হতে পারে।

২. প্রচণ্ড তৃষ্ণা, পানিশূন্যতা, ঘাম

হিট স্ট্রোকের আগে ব্যক্তি চরম তৃষ্ণা অনুভব করতে পারে, সেইসঙ্গে ডিহাইড্রেটেড এবং আড়ষ্টতা অনুভব করতে পারে। শরীর নিজেকে ঠান্ডা করার জন্য অতিরিক্ত ঘাম তৈরি করতে পারে।

৩. কথা জড়িয়ে যাওয়া

হিট স্ট্রোকের আরেকটি লক্ষণ কথা জড়িয়ে যাওয়া। ব্যক্তি অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করতে পারে।

৪. দুর্বলতা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

অতিরিক্ত উত্তাপের শরীর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাজ করে। শরীরে আরও ক্লান্তি ও দুর্বলতা তৈরি হয়। ব্যক্তি অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে। এগুলো হিট স্ট্রোকের লক্ষণ।

৫. ঘাম না হওয়া

হিট স্ট্রোকের একটি লক্ষণ হল প্রচণ্ড গরমেও ঘাম না হওয়া। সাধারণত এর মানে হচ্ছে, শরীরে ঘাম হওয়ার মতো পানি আর নেই বা শরীরের প্রাকৃতিক শীতল প্রক্রিয়াটি কাজ করছে না।

বাঁচার উপায়

হিট স্ট্রোক হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধ করা উচিত। ঘরোয়া উপায়েই হিট স্ট্রোকের ঝুঁকে এড়ানো সম্ভব। এজন্য পুষ্টিকর কিছু খাবার খেতে পারেন। বিশেষ করে কিছু পানীয় আছে, যেগুলো পান করলে গরমে শরীর ঠান্ডা থাকবে ও হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমবে। বাটার মিল্কে থাকে প্রোবায়োটিক, প্রোটিন এবং ভিটামিন। যা আপনার দেশের তাপমাত্রাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। তাই গরমে বাইরে থেকে ঘরে ফিরেই পান করুন বাটার মিল্ক।

 

আয়ুর্বেদ অনুসারে বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর সামান্য মধুর সঙ্গে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে পান করার উপকারিতা অনেক। এতে দেহের তাপমাত্রা ও হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে। কাঁচা আমের জুস পান করলেও শরীর হবে ঠান্ডা। কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। একইসঙ্গে ডায়রিয়াও প্রতিরোধ করে।  সূএ:বিডি২৪লাইভ ডট কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com