[ঢাকা, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫] যুক্তরাজ্য এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোরমধ্যে অংশীদারিত্ব ও সৃজনশীল সহযোগিতার ভিত্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে আয়োজিত ‘কানেকশনস থ্রু কালচার গ্রান্ট প্রোগ্রাম ২০২৫’-এর বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল।
ব্রিটিশ কাউন্সিল অনলাইনে প্রস্তাবনার উন্মুক্ত আহ্বানের মাধ্যমে নির্বাচিত ১৯টি দেশে মোট ১২৭টিঅনুদান প্রদান করেছে, যার মধ্যে বাংলাদেশে এই বছর ৭টি অনুদান প্রদান করা হয়েছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু হওয়া এই গ্রান্ট প্রোগ্রামের আবেদন এবং অনুদান সংখ্যা দুটোই এই বছর প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, যা এই উদ্যোগের প্রতি শিল্পীদের এবং সাংস্কৃতিক পেশাজীবীদের আগ্রহ ও অংশগ্রহণকে তুলে ধরে।
এই গ্রান্ট প্রোগ্রাম যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের শিল্পক্ষেত্রের মধ্যবর্তী সৃজনশীল সংযোগ,
জ্ঞান বিনিময় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সাংস্কৃতিক উন্নয়নের সম্ভাবনাকে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করছে।
এ গ্র্যান্ট নিয়ে বাংলাদেশ থেকে কেহকাশা সাবাহ ও যুক্তরাজ্যের বেনজামিন কুক ‘মিডনাইটস থার্ড চাইল্ড’ প্রকল্পে যৌথভাবে কাজ করবেন। আর বাংলাদেশের পাঠশালা ইনস্টিটিউট ও যুক্তরাজ্যের গ্রেইন প্রজেক্টস সিআইসি’র আলোকচিত্রীরা ‘রেজিস্টেন্স, রি-ইমাজিন: ইন্টারন্যাশনাল ফটোগ্রাফি রেসিডেন্সি’ প্রকল্পে কাজ করবেন।
বাংলাদেশের জিহান করিম ও যুক্তরাজ্যের প্লে অফিসের থমাস বাকলি একসঙ্গে কাজ করবেন ‘এ শেয়ারডজার্নি অব লার্নিং অ্যান্ড ক্রিয়েশন’ নিয়ে। এ প্রকল্পে তারা এক্সআর, ইমারসিভ স্টোরিটেলিং ও মৌখিক ইতিহাস ব্যবহার করে স্মৃতি, প্রবাস ও পরিচয় নিয়ে কাজ করবেন।
একইভাবে, বাংলাদেশের ব্যাক আর্ট ফাউন্ডেশনের শুভ ও সাহা এবং যুক্তরাজ্যের স্টেট অব দ্য [আর্ট] -এর মুনোটিদা চিনইয়াঙ্গা শব্দের ব্যবহার ও গল্প বলার বয়ানভঙ্গি ব্যবহার করে ‘টু প্লেসেস অ্যাট ওয়ান্স’ প্রকল্প নিয়ে কাজ করবেন। এ প্রকল্পে জলবায়ু, অভিবাসন ও আত্ম-পরিচয়কে গুরুত্ব দেয়া হবে।
এছাড়াও, বাংলাদেশের সুন্দরম ও যুক্তরাজ্যের বার্ডস অব প্যারাডাইস থিয়েটার কোম্পানি একসাথে ‘দ্য স্পেস বিটুইন আস: থিয়েটার, অ্যাক্সেস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ’ প্রকল্প নিয়ে কাজ করবে। এ প্রকল্পে যৌথ কর্মশালা ও মেন্টরশিপের মাধ্যমে বিশেষভাবে সক্ষম শিল্পীদের নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক পারফরমেন্স করা হবে।
বাংলাদেশের সুরকার নীল কামরুল ও বার্মিংহাম কনটেম্পোরারি মিউজিক গ্রুপ (বিসিএমজি) যৌথভাবে উপস্থাপন করবে ‘দ্য স্টোরি অব মায়া: হোমকামিং।’ এ প্রকল্প বিসিএমজি -এর ‘মিউজিক ইন ডায়লগ’ সিরিজের অংশ।
বাংলাদেশের দৃক পিকচার লাইব্রেরি ও যুক্ত্ররাজ্যের বুক ওয়ার্কস কাজ করবে ‘আনবাইন্ডিং বুকবাইন্ডিং’ প্রকল্প নিয়ে। এটি একটি গবেষণা ও উন্নয়নমূলক প্রকল্প, যেখানে বাংলাদেশের হাতে তৈরি বই বাঁধাইয়ের ঐতিহ্যবাহী কৌশলকে ‘বুক ওয়ার্কস’ -এর বিশেষ নকশা ও প্রযুক্তির সাথে সমন্বয় করা হয়।
এই গ্রান্ট প্রোগ্রাম নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের হেড অফ আর্টস সাদিয়া রহমান বলেছেন, “এইসাতটি সফল প্রস্তাবনার প্রতিটিই একটি শক্তিশালী ও অনুপ্রাণিত দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে, যাযুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের শিল্পী ও সংগঠনগুলোর মধ্যে যৌথ সৃজন, সহ-উৎপাদন এবং সমসাময়িকগুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও বিষয়ের প্রতিক্রিয়া প্রকাশের সুযোগ তৈরি করে—নতুন, উদ্ভাবনী, আকর্ষণীয় এবংসহজবোধ্য উপায়ে। এই উদ্যোগগুলিই প্রমাণ করে যে শিল্পের অসাধারণ শক্তি রয়েছে উদ্ভাবন, সংলাপ এবংসংযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে।”
“কানেকশন্স থ্রু কালচার প্রোগ্রামটিকে অনন্য করে তোলে এর বৈচিত্র্য—যেখানে বিভিন্ন ঐতিহ্য, চিন্তা ওশিল্পচর্চা একত্রিত হয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করছে,” বলেছেন রুথ ম্যাকেঞ্জি সিবিই, আর্টস ডিরেক্টর, ব্রিটিশকাউন্সিল।
তিনি আরও বলেন, “এই গ্রান্ট প্রোগ্রাম সম্প্রসারণের মাধ্যমে বৈচিত্রময় কণ্ঠস্বর ওকমিউনিটিকে যুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে, যা সীমান্ত পেরিয়ে শান্তি, আস্থা ও সমৃদ্ধি আনয়নে শিল্পের ভূমিকা
আরও দৃঢ় করছে।
এই পর্বে ব্রিটিশ কাউন্সিল দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব এশিয়া এবং বিস্তৃত ইউরোপজুড়ে অনুদানপ্রাপ্তদের জন্য
বিশ্বব্যাপী প্রায় ১১ লক্ষ ৯৬হাজার ২৩৩ ব্রিটিশ পাউন্ড সমমূল্যের অনুদান প্রদান করছে।







