ন্যাচারাল হেয়ার হাইলাইট

একদম সাদামাটা চুল এখন ফ্যাশন ট্রেন্ডে গত হয়েছে। এর বদলে চুলে রঙের ঝলকানিতে রমণীদের চোখে-মুখে তৃপ্তির হাসি। আর সবকিছুই মেলে হেয়ার কালার হাইলাইটারে। তবে নিখুঁতভাবে হেয়ার হাইলাইটারে দরকার বিশেষ যত্ন…

 

আধুনিক তবে হাজার বছরের পুরনো। মেয়েদের চুল রং করার প্রচলন শুরু হয়েছে হাজার বছর আগে থেকে। গ্রিসের রমণীরা হেনা ব্যবহার করে চুল লাল করতেন এবং তা হাইলাইট করার জন্য সোনার গুঁড়া ছড়িয়ে দিতেন। কিন্তু সেসব গল্প পুরনো। এখন রমণীদের হেয়ার কালারের চেয়ে হাইলাইটকেই বেশি প্রাধান্য দেয়। মূলত মাথার কিছু চুল গোছা করে পছন্দের রঙে রাঙিয়ে নেওয়াকে হাইলাইট বলে।

 

অনেকেই ভাবেন হাইলাইট মানেই পারলারের ক্ষতিকর উপাদান! চুলের ক্ষতির ভয়ে অনেকেই হাইলাইট করাতে চান না? কিন্তু সেই দিন গত হয়েছে। এখন পারলারগুলোয় তো বটেই, চাইলে নিজেই নিজের হেয়ার হাইলাইট করাতে পারেন। সেক্ষেত্রে যদি আগে কখনো চুলে রং করা না হয়ে থাকে, তবে প্রথমেই আপনাকে ত্বকের ওপর একটি পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে। আপনার স্ক্যাল্প যদি খুব সেনসিটিভ হয়, তবে জ্বালা করবে। তখন আপনি বুঝতে পারবেন চুলে রং করা আপনার সহ্য হবে না। যারা নতুন কালার করাতে চাচ্ছেন তাদের জন্য হেয়ার হাইলাইট করানো ভালো হবে। ফলে স্টাইলও হলো এবং ত্বকের কোনো প্রকার ক্ষতিও হলো না। হেয়ার হাইলাইটসের কাজগুলো সাধারণত পারলারে করানো হয়। আর এর প্রসাধনে বেশির ভাগই থাকে রাসায়নিকযুক্ত। এক্ষেত্রে আপনি যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে হেয়ার হাইলাইট করাতে চান তবে প্রাকৃতিক উপাদান হবে বেস্ট অপশন। ক্ষতির আশঙ্কা থাকে না এবং ইচ্ছামতো হেয়ার হাইলাইট করানো যায় খুব সহজেই। চুল হাইলাইট করার আছে প্রাকৃতিক পদ্ধতিও। হ্যাঁ, তাও মিলবে ঘরেই।

♦ ভালো মানের কন্ডিশনার এবং দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে হেয়ার হাইলাইটার বানাতে পারেন। মিশ্রণটি ঠিক যতটুকু চুল হাইলাইটস করতে চান ততটুকু চুলে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত লাগিয়ে নিন। একটি চিরুনি দিয়ে চুল ভালো করে আঁচড়িয়ে নিন। তারপর চুলগুলো খোঁপা করে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে পেঁচিয়ে রাখুন সারা রাত। সকালে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

♦ ক্যামোমাইল টিব্যাগ চুল হাইলাইট করতে বেশ কার্যকর। ক্যামোমাইল টি ব্যাগ ছাড়া রং চা দিয়ে হেয়ার হাইলাইট করা যায়। একটি টিব্যাগ কমপক্ষে ১০ মিনিট পানিতে ফুটিয়ে নিন। টি ব্যাগ থেকে রং ছড়ালে এই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন এবং অন্তত ১৫ মিনিট রাখুন। এভাবে ২-৩ বার করতে হবে। তারপর চুল শ্যাম্পু করে ফেলুন।

♦ অলিভ অয়েল চুলের ময়েশ্চরাইজার হিসেবে অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু চুলের ঘরোয়া হাইলাইটের জন্য অলিভ অয়েলের ব্যবহার সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। চুলের যে যে অংশ হাইলাইট করতে চান সে অংশে ভালো করে অলিভ অয়েল মাখিয়ে রোদে বসে থাকুন। অলিভ অয়েল আলোর সঙ্গে রিঅ্যাকশনের মাধ্যমে চুলের রং পরিবর্তন করে ফেলে। পছন্দ অনুযায়ী চুল হাইলাইট করা যাবে।

♦ দুই কাপ ভিনেগার, এক কাপ বিশুদ্ধ মধু, এক টেবিল চামচ বিশুদ্ধ অলিভ অয়েল, এক টেবিল চামচ দারুচিনি অথবা এলাচ গুঁড়া। সব উপাদান ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার একটি ব্রাশ বা চিরুনি দিয়ে যে চুলগুলো হাইলাইট করতে চান, সেখানে এই মিশ্রণটি লাগিয়ে নিন। এবার একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ বা তোয়ালে দিয়ে চুলগুলো পেঁচিয়ে রাখুন সারা রাত। হাইলাইট করাতে সাধারণত রোদে বসে থাকতে হয়, কিন্তু এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে রোদে বসার প্রয়োজন পড়ে না। মধু হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের মতো চুলের রং পরিবর্তন করে।

হাইলাইট চুলের যত্ন

হাইলাইট চুলের যত্নে সোডিয়াম লরেল সালফেট মুক্ত শ্যাম্পুই ব্যবহার করুন। হাইলাইট করা চুলের জন্য এ ধরনের শ্যাম্পু খুবই কার্যকরী। এই শ্যাম্পু ব্যবহার করলে চুলের কালার অনেকদিন পর্যন্ত থাকবে। বিকল্প হিসেবে কালার স্পেসিফিক শ্যাম্পুও ব্যবহার করতে পারেন, এটি চুলের সঠিক রং ধরে রাখে।

♦ চুলের কালার বজায় রাখার জন্য সালফেট মুক্ত হেয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত।

♦ যাদের চুলের রং গাঢ় তাদের শাইন এনহ্যান্সিং স্টাইলিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়।

♦ যারা চুল কালার অথবা হাইলাইট করাচ্ছেন তাদের এটাও জেনে রাখা জরুরি যে, চুলের এই শাইন এবং স্বাস্থ্য কতদিন পর্যন্ত বজায় থাকবে। তা নির্ভর করে চুলের যত্নের ওপর।

লেখা : নূরজাহান জেবিন সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জামায়াতে ইসলামী কোনো চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীর সঙ্গে জোট করবে না

» নতুন বন্দোবস্ত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না: আখতার হোসেন

» ইতিহাসের বিশেষ সময় অতিবাহিত করছি: জামায়াত সেক্রেটারি

» আমাদের আন্দোলন দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে : নাহিদ ইসলাম

» সাফে শ্রীলঙ্কাকে ৯ গোলে বিধ্বস্ত করলো বাংলাদেশ

» বিএনপি দেশে দ্রুত গণতান্ত্রিক উত্তরণ চায় : গয়েশ্বর

» আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদকে অপবিত্র করেছে : আলাল

» কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানি হামলা, স্যাটেলাইট চিত্রে যা দেখা গেলো

» ১১ জুলাইকে ‘প্রথম প্রতিরোধ দিবস’ ঘোষণা উপদেষ্টা আসিফের

» তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জয়পুরহাটে বিএনপি নেতা ফয়সল আলীমের গণসংযোগ  

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ন্যাচারাল হেয়ার হাইলাইট

একদম সাদামাটা চুল এখন ফ্যাশন ট্রেন্ডে গত হয়েছে। এর বদলে চুলে রঙের ঝলকানিতে রমণীদের চোখে-মুখে তৃপ্তির হাসি। আর সবকিছুই মেলে হেয়ার কালার হাইলাইটারে। তবে নিখুঁতভাবে হেয়ার হাইলাইটারে দরকার বিশেষ যত্ন…

 

আধুনিক তবে হাজার বছরের পুরনো। মেয়েদের চুল রং করার প্রচলন শুরু হয়েছে হাজার বছর আগে থেকে। গ্রিসের রমণীরা হেনা ব্যবহার করে চুল লাল করতেন এবং তা হাইলাইট করার জন্য সোনার গুঁড়া ছড়িয়ে দিতেন। কিন্তু সেসব গল্প পুরনো। এখন রমণীদের হেয়ার কালারের চেয়ে হাইলাইটকেই বেশি প্রাধান্য দেয়। মূলত মাথার কিছু চুল গোছা করে পছন্দের রঙে রাঙিয়ে নেওয়াকে হাইলাইট বলে।

 

অনেকেই ভাবেন হাইলাইট মানেই পারলারের ক্ষতিকর উপাদান! চুলের ক্ষতির ভয়ে অনেকেই হাইলাইট করাতে চান না? কিন্তু সেই দিন গত হয়েছে। এখন পারলারগুলোয় তো বটেই, চাইলে নিজেই নিজের হেয়ার হাইলাইট করাতে পারেন। সেক্ষেত্রে যদি আগে কখনো চুলে রং করা না হয়ে থাকে, তবে প্রথমেই আপনাকে ত্বকের ওপর একটি পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে। আপনার স্ক্যাল্প যদি খুব সেনসিটিভ হয়, তবে জ্বালা করবে। তখন আপনি বুঝতে পারবেন চুলে রং করা আপনার সহ্য হবে না। যারা নতুন কালার করাতে চাচ্ছেন তাদের জন্য হেয়ার হাইলাইট করানো ভালো হবে। ফলে স্টাইলও হলো এবং ত্বকের কোনো প্রকার ক্ষতিও হলো না। হেয়ার হাইলাইটসের কাজগুলো সাধারণত পারলারে করানো হয়। আর এর প্রসাধনে বেশির ভাগই থাকে রাসায়নিকযুক্ত। এক্ষেত্রে আপনি যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে হেয়ার হাইলাইট করাতে চান তবে প্রাকৃতিক উপাদান হবে বেস্ট অপশন। ক্ষতির আশঙ্কা থাকে না এবং ইচ্ছামতো হেয়ার হাইলাইট করানো যায় খুব সহজেই। চুল হাইলাইট করার আছে প্রাকৃতিক পদ্ধতিও। হ্যাঁ, তাও মিলবে ঘরেই।

♦ ভালো মানের কন্ডিশনার এবং দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে হেয়ার হাইলাইটার বানাতে পারেন। মিশ্রণটি ঠিক যতটুকু চুল হাইলাইটস করতে চান ততটুকু চুলে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত লাগিয়ে নিন। একটি চিরুনি দিয়ে চুল ভালো করে আঁচড়িয়ে নিন। তারপর চুলগুলো খোঁপা করে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে পেঁচিয়ে রাখুন সারা রাত। সকালে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

♦ ক্যামোমাইল টিব্যাগ চুল হাইলাইট করতে বেশ কার্যকর। ক্যামোমাইল টি ব্যাগ ছাড়া রং চা দিয়ে হেয়ার হাইলাইট করা যায়। একটি টিব্যাগ কমপক্ষে ১০ মিনিট পানিতে ফুটিয়ে নিন। টি ব্যাগ থেকে রং ছড়ালে এই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন এবং অন্তত ১৫ মিনিট রাখুন। এভাবে ২-৩ বার করতে হবে। তারপর চুল শ্যাম্পু করে ফেলুন।

♦ অলিভ অয়েল চুলের ময়েশ্চরাইজার হিসেবে অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু চুলের ঘরোয়া হাইলাইটের জন্য অলিভ অয়েলের ব্যবহার সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। চুলের যে যে অংশ হাইলাইট করতে চান সে অংশে ভালো করে অলিভ অয়েল মাখিয়ে রোদে বসে থাকুন। অলিভ অয়েল আলোর সঙ্গে রিঅ্যাকশনের মাধ্যমে চুলের রং পরিবর্তন করে ফেলে। পছন্দ অনুযায়ী চুল হাইলাইট করা যাবে।

♦ দুই কাপ ভিনেগার, এক কাপ বিশুদ্ধ মধু, এক টেবিল চামচ বিশুদ্ধ অলিভ অয়েল, এক টেবিল চামচ দারুচিনি অথবা এলাচ গুঁড়া। সব উপাদান ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার একটি ব্রাশ বা চিরুনি দিয়ে যে চুলগুলো হাইলাইট করতে চান, সেখানে এই মিশ্রণটি লাগিয়ে নিন। এবার একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ বা তোয়ালে দিয়ে চুলগুলো পেঁচিয়ে রাখুন সারা রাত। হাইলাইট করাতে সাধারণত রোদে বসে থাকতে হয়, কিন্তু এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে রোদে বসার প্রয়োজন পড়ে না। মধু হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের মতো চুলের রং পরিবর্তন করে।

হাইলাইট চুলের যত্ন

হাইলাইট চুলের যত্নে সোডিয়াম লরেল সালফেট মুক্ত শ্যাম্পুই ব্যবহার করুন। হাইলাইট করা চুলের জন্য এ ধরনের শ্যাম্পু খুবই কার্যকরী। এই শ্যাম্পু ব্যবহার করলে চুলের কালার অনেকদিন পর্যন্ত থাকবে। বিকল্প হিসেবে কালার স্পেসিফিক শ্যাম্পুও ব্যবহার করতে পারেন, এটি চুলের সঠিক রং ধরে রাখে।

♦ চুলের কালার বজায় রাখার জন্য সালফেট মুক্ত হেয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত।

♦ যাদের চুলের রং গাঢ় তাদের শাইন এনহ্যান্সিং স্টাইলিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়।

♦ যারা চুল কালার অথবা হাইলাইট করাচ্ছেন তাদের এটাও জেনে রাখা জরুরি যে, চুলের এই শাইন এবং স্বাস্থ্য কতদিন পর্যন্ত বজায় থাকবে। তা নির্ভর করে চুলের যত্নের ওপর।

লেখা : নূরজাহান জেবিন সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com