গর্ভবতী নারীরা যেভাবে নামাজ পড়বেন

মায়ের পায়ের নিচে দেওয়া হয়েছে জান্নাতের সুসংবাদ। একজন নারী গর্ভধারণের মাধ্যমে মা হন। গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের যে কষ্ট ও বিপন্ন অবস্থার সম্মুখীন হতে হয় তার পুরস্কার স্বরূপ প্রদান করা হয়েছে মাতৃত্বের এ মর্যাদা। গর্ভে সন্তান আসা নারীর জন্য বোঝা নয়, বরং সম্মান ও সৌভাগ্যের। 

 

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত— তিনি বলেন, নবীজি (সা.)-এর পুত্র ইবরাহিমের দুধমাতা সালামাকে (রা.) নবীজি (সা.) বলেছিলেন, তোমরা নারীরা কি এতে খুশি নও যে, যখন কোনো নারী তার স্বামীর পক্ষ থেকে গর্ভধারিণী হয় আর স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন, তখন সে আল্লাহর জন্য সর্বদা রোজা পালনকারী ও সারা রাত নফল ইবাদতকারীর মতো সওয়াব পেতে থাকবে? তার যখন প্রসব ব্যথা শুরু হয় তখন তার জন্য নয়ন জুড়ানো কী কী নেয়ামত লুকিয়ে রাখা হয়, তা আসমান-জমিনের কোনো অধিবাসীই জানে না। সে যখন সন্তান প্রসব করে তখন তার দুধের প্রতিটি ফোঁটার বিনিময়ে একটি করে নেকি দেওয়া হয়। এ সন্তান যদি কোনো রাতে তাকে জাগিয়ে রাখে (কান্নাকাটি করে মাকে বিরক্ত করে ঘুমুতে না দেয়) তা হলে সে আল্লাহর জন্য নিখুঁত সত্তরটি গোলাম আজাদ করার সওয়াব পাবে।’ (তাবরানি, হাদিস : ৬৯০৮; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ : ৪/৩০৫)

গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরের অবকাঠামো ও অবস্থা পরিবর্তন হয়ে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে পেটে চাপ সৃষ্টি হয় এমনকি কোনো কাজ করার সক্ষমতা থাকে না। তবে এসময় স্বাভাবিক চলাফেরা. মৌলিক কাজ-কর্ম চালিয়ে নিতে হয়। সময় মতো নামাজ পড়তে হয়। শরীর ভারী হয়ে যাওয়ায় এসময় অনেকের নামাজ আদায় করতে কষ্ট হয়। তাদের পক্ষে সুস্থ মানুষের মতো নামাজ আদায় সম্ভব হয়।

 

গর্ভাবস্থায় নারীরা অসুস্থ ব্যক্তির মতো নামাজ আদায় করবে। অর্থাৎ শক্তি ও সামর্থ্য অনুযায়ী একাধিক বিকল্পের কোনো একটি গ্রহণ করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ো, যদি না পারো তাহলে বসে নামাজ পড়ো, যদি তাও না পারো তাহলে ইশারা করে নামাজ আদায় করো। (বুখারি, হাদিস : ১০৫০)।

 

যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে অক্ষম, সে বসে বসে রুকু-সিজদা আদায় করে নামাজ পড়বে। যে ব্যক্তি বসে রুকু-সিজদা করবে, সে রুকু থেকে সিজদায় সামান্য বেশি ঝুঁকবে। অন্যথায় নামাজ শুদ্ধ হবে না। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৭৬)

 

গর্ভবতী অবস্থায় সিজদা দিতে কষ্ট হলে সম্ভব হলে হাত জমিনে রেখে তার ওপর সিজদা করবে। অন্যথায় হাত সামনে রেখে যতটুতু ঝুঁকতে পারে ততটুকু ঝুঁকে ইশারায় সিজদা করবে। ইশারায় সিজদার সময় সামনে কোনো টেবিল, বালিশ বা অন্য কিছু রেখে তাতে সিজদা করবে না।

 

হাদিস শরিফে এসেছে, জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) একজন রোগী দেখতে গেলেন।

 

তিনি তাকে একটি বালিশের ওপর সিজদা করতে দেখলেন। তিনি তা (বালিশ) নিয়ে সরিয়ে রাখেন। অতঃপর লোকটি একটি কাঠের টুকরা নিল তার ওপর সিজদার জন্য। রাসুল (সা.) তা নিয়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন, তুমি সক্ষম হলে জমিনের ওপর সিজদা করবে অন্যথায় ইশারা করবে। আর তোমার সিজদা রুকু থেকে বেশি ঝুঁকে আদায় করবে। (সুনানে বাইহাকি, শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৪৮৪) সূএ: ঢাকা পোস্ট

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বজ্রপাতে পদ্মা সেতুর টোলপ্লাজায় ত্রুটি, ৩ কিলোমিটার যানজট

» ঢাকায় ২২ স্থানে বসবে কোরবানির পশুর হাট

» উপজেলায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ভোটের সরঞ্জাম

» হেরোইন পাচারের সময় মাদক কারবারি গ্রেফতার

» কৃষকদের হয়রানি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: খাদ্যমন্ত্রী

» রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল গঠনে অংশীদার খুঁজুন, আইওএমকে প্রধানমন্ত্রী

» জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

» ‘জনগণের সম্পদ লুটপাটে বারবার ডামি নির্বাচন করতে চাচ্ছে সরকার’

» চাল, শাকসবজি, আম উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ: কৃষিমন্ত্রী

» আজ ৭ মে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের ২০তম শাহাদাৎ বার্ষিকী

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

গর্ভবতী নারীরা যেভাবে নামাজ পড়বেন

মায়ের পায়ের নিচে দেওয়া হয়েছে জান্নাতের সুসংবাদ। একজন নারী গর্ভধারণের মাধ্যমে মা হন। গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের যে কষ্ট ও বিপন্ন অবস্থার সম্মুখীন হতে হয় তার পুরস্কার স্বরূপ প্রদান করা হয়েছে মাতৃত্বের এ মর্যাদা। গর্ভে সন্তান আসা নারীর জন্য বোঝা নয়, বরং সম্মান ও সৌভাগ্যের। 

 

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত— তিনি বলেন, নবীজি (সা.)-এর পুত্র ইবরাহিমের দুধমাতা সালামাকে (রা.) নবীজি (সা.) বলেছিলেন, তোমরা নারীরা কি এতে খুশি নও যে, যখন কোনো নারী তার স্বামীর পক্ষ থেকে গর্ভধারিণী হয় আর স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন, তখন সে আল্লাহর জন্য সর্বদা রোজা পালনকারী ও সারা রাত নফল ইবাদতকারীর মতো সওয়াব পেতে থাকবে? তার যখন প্রসব ব্যথা শুরু হয় তখন তার জন্য নয়ন জুড়ানো কী কী নেয়ামত লুকিয়ে রাখা হয়, তা আসমান-জমিনের কোনো অধিবাসীই জানে না। সে যখন সন্তান প্রসব করে তখন তার দুধের প্রতিটি ফোঁটার বিনিময়ে একটি করে নেকি দেওয়া হয়। এ সন্তান যদি কোনো রাতে তাকে জাগিয়ে রাখে (কান্নাকাটি করে মাকে বিরক্ত করে ঘুমুতে না দেয়) তা হলে সে আল্লাহর জন্য নিখুঁত সত্তরটি গোলাম আজাদ করার সওয়াব পাবে।’ (তাবরানি, হাদিস : ৬৯০৮; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ : ৪/৩০৫)

গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরের অবকাঠামো ও অবস্থা পরিবর্তন হয়ে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে পেটে চাপ সৃষ্টি হয় এমনকি কোনো কাজ করার সক্ষমতা থাকে না। তবে এসময় স্বাভাবিক চলাফেরা. মৌলিক কাজ-কর্ম চালিয়ে নিতে হয়। সময় মতো নামাজ পড়তে হয়। শরীর ভারী হয়ে যাওয়ায় এসময় অনেকের নামাজ আদায় করতে কষ্ট হয়। তাদের পক্ষে সুস্থ মানুষের মতো নামাজ আদায় সম্ভব হয়।

 

গর্ভাবস্থায় নারীরা অসুস্থ ব্যক্তির মতো নামাজ আদায় করবে। অর্থাৎ শক্তি ও সামর্থ্য অনুযায়ী একাধিক বিকল্পের কোনো একটি গ্রহণ করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ো, যদি না পারো তাহলে বসে নামাজ পড়ো, যদি তাও না পারো তাহলে ইশারা করে নামাজ আদায় করো। (বুখারি, হাদিস : ১০৫০)।

 

যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে অক্ষম, সে বসে বসে রুকু-সিজদা আদায় করে নামাজ পড়বে। যে ব্যক্তি বসে রুকু-সিজদা করবে, সে রুকু থেকে সিজদায় সামান্য বেশি ঝুঁকবে। অন্যথায় নামাজ শুদ্ধ হবে না। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৭৬)

 

গর্ভবতী অবস্থায় সিজদা দিতে কষ্ট হলে সম্ভব হলে হাত জমিনে রেখে তার ওপর সিজদা করবে। অন্যথায় হাত সামনে রেখে যতটুতু ঝুঁকতে পারে ততটুকু ঝুঁকে ইশারায় সিজদা করবে। ইশারায় সিজদার সময় সামনে কোনো টেবিল, বালিশ বা অন্য কিছু রেখে তাতে সিজদা করবে না।

 

হাদিস শরিফে এসেছে, জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) একজন রোগী দেখতে গেলেন।

 

তিনি তাকে একটি বালিশের ওপর সিজদা করতে দেখলেন। তিনি তা (বালিশ) নিয়ে সরিয়ে রাখেন। অতঃপর লোকটি একটি কাঠের টুকরা নিল তার ওপর সিজদার জন্য। রাসুল (সা.) তা নিয়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন, তুমি সক্ষম হলে জমিনের ওপর সিজদা করবে অন্যথায় ইশারা করবে। আর তোমার সিজদা রুকু থেকে বেশি ঝুঁকে আদায় করবে। (সুনানে বাইহাকি, শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৪৮৪) সূএ: ঢাকা পোস্ট

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com