‘সে আমার কে ছিল?’

কাজী আরিফ:
নদীটা আমার প্রেমিকার মতনই ছিল।

তার বুকে ঝুঁকে পড়া আকাশকে আমার খুব আপন লাগতো। সে কথা একদিন বলতেই আমায় সে খেয়াপাড়ে আমন্ত্রণ জানালো। আমি জানতাম খেয়াপার হয়ে ওপারে গেলে একটা বটগাছ আমায় হাতছানি দিয়ে ডাকবে, জানতাম ওপারে সেই ঘন জঙ্গল আর পায়ে চলা পথ আমাকে চেনা ইয়ার দোস্তদের মত হেসে কথা বলতে চাইবে। আর বলতে চাইবে, ‘সেই যে স্কুল পালিয়ে আমাদের কাছে আসতি সেসব ভুলে বসে আছিস?’

আমায় বারবার বলতে চাইবে, ‘একবার যে আমার এই ঘন জঙ্গলের পথে সেই যে রাজকন্যের সাথে দেখা হয়েছিল তা বুঝি মনে নেই?’

আমিইবা তাকে কি করে বলি ‘ওহে ! আমি যে সে রাজকন্যের যোগ্য হয়ে উঠতে পারিনি কোনকালেই। সেজন্যে তার কথা আমি ভুলি কি করে!’

নানা খেয়ালে ভরা আমার জীবনের কতটুকুইবা জানে জংগলের পায়ে চলা পথ?
কতটুকুই বা জানে প্রিয়তমা নদীটি !

মাধুর্যমাখা এ বিহ্বল জীবনের বারান্দায় কত পায়চারি, কত উৎকন্ঠা আমায় ঘিরে থাকল তার ইয়ত্তা নেই। কত রাতজাগা দীর্ঘশ্বাস আমায় নীল অভিমানে ভরিয়ে তুলল সে আমি জানি
আর জানে আমার ভাষাহীন অফুরান ভালবাসা।
আমি সত্যি তোমায় ভালবেসেছিলাম
সত্যি ভালবাসি।
একথা আমি বুকের ভাষায় লিখে গেছি কুয়াশার শরীরে
হাজার হাজার দিস্তা কাগজে; লিখেছি জলের উরসে স্বপ্নের কালি দিয়ে।

একবার তোমার দেখা পাব বলে আমি গাছের মত দাঁড়িয়ে ছিলাম বাধ্য বালকের মত।
আমার পায়ে শেকড় গজিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলেও হাল ছাড়িনি
আমি কি এখনো বুঝি অপেক্ষা করে নেই ? আছি তো আজও।
জানি একদিন সকল বেদনার মহাকাল মহারাত্রি পার হয়ে একদিন দেবে ডাক
এক মহাপ্লাবনের কল্লোলে।

সেদিন জলের আর্শিতে আমি দেখব তোমার জোছনা ভাঙা হাসির কোরক। সেদিন তুমি পরখ করে নিতে পারবে প্রেমের রোদে আমি কতোটা পুড়ে পুড়ে নিঃশব্দ হয়েছি। সভ্যতার নানান মেধাবী ক্রিয়াকর্মে যতই ব্যাপ্ত থাকি না কেন আমি তোমার থেকে নিঃশ্বাসের দূরত্বে থেকে গেছি সারাজীবন। আজ হয়ত তোমার ছবির পাশে নেই সত্যি কিন্ত তা হোক, আমি তো রয়ে গেছি তোমার পাশে পাশে অন্ধকার ছায়ার মত।

তাই আজও আমি মুগ্ধ –
তোমার উচ্ছল পূর্ণিমা হাসিতে
তোমার সুরম্য ব্যালকনিতে ফুটে থাকা গোলাপে।
বিশুদ্ধ শৈশবের পরেই বুঝি দেখা মিলে গেল মাধুরীময় কোন লাস্যময়ীর
তারপর কোথায় কোন বিষন্ন স্রোতের তোড়ে ভেসে গেল আমার সবুজ প্রেমের সোনালী দুপুর
পড়ে থাকল রাজকন্যের সোনার পালংক
পড়ে থাকল রাজকন্যের সোনার মুকুট। আর তার জন্য আমি কেবল পথে পথে কাটিয়ে দিলাম আমার অগুনতি বছরগুলো। কি এক মোহন আকাঙ্খায় কাটিয়ে গেলাম এতগুলো বসন্তের দিন।

ও হে , তুমি কি এসবের কোন খবর রেখেছ কোন কালে?

আমার এসব বুকের গহীনের একান্ত ঝিলমিল, একান্ত ঢেউগুলি কোথায় কোন সুরের নহবৎ তৈরি করে তার আদ্যোপান্ত তুমি কিছুই জানো না।
আমার বুকে কোথায় রক্তকরবী ফোঁটে তার তুমি কতটুকু খবর রাখো?
জীবনের হাজারো অন্ধকারে
হাজার পথের বন্ধুরতায় তুমি যে রয়ে গেছ এক অনুপম প্রেরণার উৎস
সে কথা আজ নাইবা তোমায় জানালাম। নাইবা বললাম,

‘তোমায় ভালবাসি’

সূূূএ:ডেইলি-বাংলাদেশ ডটকম
Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আবারও কমল স্বর্ণের দাম

» জাপানে শক্তিশালী ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্প

» হজ ফ্লাইট শুরু ৯ মে

» উদ্যমী ও অগ্রগামী মানুষদের নিয়ে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করলো মানব কল্যাণ পরিষদ

» দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষায় দেবোত্তর সম্পদ আইন তৈরি করা হচ্ছে – ভূমিমন্ত্রী

» সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে সুসংহত করতে  হবে-ধর্মমন্ত্রী

» ডিপিএস এসটিএস স্কুল ঢাকার আয়োজনে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্কলার্স কাপ ২০২৪’

» নতুন উদ্ভাবন বাজারে এলো বাংলা ভাষার প্রথম স্মার্টওয়াচ ‘এক্সপার্ট’

» বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না, পরিষ্কার ধারণা ছিল : জিএম কাদের

» চিফ হিট অফিসার ডিএনসিসির কেউ নন : মেয়র আতিক

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

‘সে আমার কে ছিল?’

কাজী আরিফ:
নদীটা আমার প্রেমিকার মতনই ছিল।

তার বুকে ঝুঁকে পড়া আকাশকে আমার খুব আপন লাগতো। সে কথা একদিন বলতেই আমায় সে খেয়াপাড়ে আমন্ত্রণ জানালো। আমি জানতাম খেয়াপার হয়ে ওপারে গেলে একটা বটগাছ আমায় হাতছানি দিয়ে ডাকবে, জানতাম ওপারে সেই ঘন জঙ্গল আর পায়ে চলা পথ আমাকে চেনা ইয়ার দোস্তদের মত হেসে কথা বলতে চাইবে। আর বলতে চাইবে, ‘সেই যে স্কুল পালিয়ে আমাদের কাছে আসতি সেসব ভুলে বসে আছিস?’

আমায় বারবার বলতে চাইবে, ‘একবার যে আমার এই ঘন জঙ্গলের পথে সেই যে রাজকন্যের সাথে দেখা হয়েছিল তা বুঝি মনে নেই?’

আমিইবা তাকে কি করে বলি ‘ওহে ! আমি যে সে রাজকন্যের যোগ্য হয়ে উঠতে পারিনি কোনকালেই। সেজন্যে তার কথা আমি ভুলি কি করে!’

নানা খেয়ালে ভরা আমার জীবনের কতটুকুইবা জানে জংগলের পায়ে চলা পথ?
কতটুকুই বা জানে প্রিয়তমা নদীটি !

মাধুর্যমাখা এ বিহ্বল জীবনের বারান্দায় কত পায়চারি, কত উৎকন্ঠা আমায় ঘিরে থাকল তার ইয়ত্তা নেই। কত রাতজাগা দীর্ঘশ্বাস আমায় নীল অভিমানে ভরিয়ে তুলল সে আমি জানি
আর জানে আমার ভাষাহীন অফুরান ভালবাসা।
আমি সত্যি তোমায় ভালবেসেছিলাম
সত্যি ভালবাসি।
একথা আমি বুকের ভাষায় লিখে গেছি কুয়াশার শরীরে
হাজার হাজার দিস্তা কাগজে; লিখেছি জলের উরসে স্বপ্নের কালি দিয়ে।

একবার তোমার দেখা পাব বলে আমি গাছের মত দাঁড়িয়ে ছিলাম বাধ্য বালকের মত।
আমার পায়ে শেকড় গজিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলেও হাল ছাড়িনি
আমি কি এখনো বুঝি অপেক্ষা করে নেই ? আছি তো আজও।
জানি একদিন সকল বেদনার মহাকাল মহারাত্রি পার হয়ে একদিন দেবে ডাক
এক মহাপ্লাবনের কল্লোলে।

সেদিন জলের আর্শিতে আমি দেখব তোমার জোছনা ভাঙা হাসির কোরক। সেদিন তুমি পরখ করে নিতে পারবে প্রেমের রোদে আমি কতোটা পুড়ে পুড়ে নিঃশব্দ হয়েছি। সভ্যতার নানান মেধাবী ক্রিয়াকর্মে যতই ব্যাপ্ত থাকি না কেন আমি তোমার থেকে নিঃশ্বাসের দূরত্বে থেকে গেছি সারাজীবন। আজ হয়ত তোমার ছবির পাশে নেই সত্যি কিন্ত তা হোক, আমি তো রয়ে গেছি তোমার পাশে পাশে অন্ধকার ছায়ার মত।

তাই আজও আমি মুগ্ধ –
তোমার উচ্ছল পূর্ণিমা হাসিতে
তোমার সুরম্য ব্যালকনিতে ফুটে থাকা গোলাপে।
বিশুদ্ধ শৈশবের পরেই বুঝি দেখা মিলে গেল মাধুরীময় কোন লাস্যময়ীর
তারপর কোথায় কোন বিষন্ন স্রোতের তোড়ে ভেসে গেল আমার সবুজ প্রেমের সোনালী দুপুর
পড়ে থাকল রাজকন্যের সোনার পালংক
পড়ে থাকল রাজকন্যের সোনার মুকুট। আর তার জন্য আমি কেবল পথে পথে কাটিয়ে দিলাম আমার অগুনতি বছরগুলো। কি এক মোহন আকাঙ্খায় কাটিয়ে গেলাম এতগুলো বসন্তের দিন।

ও হে , তুমি কি এসবের কোন খবর রেখেছ কোন কালে?

আমার এসব বুকের গহীনের একান্ত ঝিলমিল, একান্ত ঢেউগুলি কোথায় কোন সুরের নহবৎ তৈরি করে তার আদ্যোপান্ত তুমি কিছুই জানো না।
আমার বুকে কোথায় রক্তকরবী ফোঁটে তার তুমি কতটুকু খবর রাখো?
জীবনের হাজারো অন্ধকারে
হাজার পথের বন্ধুরতায় তুমি যে রয়ে গেছ এক অনুপম প্রেরণার উৎস
সে কথা আজ নাইবা তোমায় জানালাম। নাইবা বললাম,

‘তোমায় ভালবাসি’

সূূূএ:ডেইলি-বাংলাদেশ ডটকম
Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com