সোহানুর রহমান সোহাগ:
আজ ঈদ! ছেলেটা এখনো ঘুম থেকে ওঠেনি, সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেলো তবুও তার ঘুম থেকে ওঠার কোনো বলাই নেই। অথচ প্রত্যেক ঈদের দিন সকালে পরিবারের সবার আগে ঘুম থেকে উঠতো সে!
দেখি একটু এগিয়ে দেখি ঘুম থেকে উঠে কি না?
এক পা দু পা করে ওর ঘরে ডুকতেই ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্নার আওয়াজ পেলাম। এগিয়ে গিয়ে দেখি ছেলেটা কেদেঁ কেদেঁ বিছানার বালিশ পযর্ন্ত ভিজিয়ে ফেলেছে।
কাছে গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম কি হয়েছে রে তোর?
ওহ আচ্ছা! বলা হলো না আপনাদের ছেলেটার নাম শাওন। ছোট ছেলে। কিছুদিন আগে ওর বাবা পৃথিবী থেকে চলে গেছে। বাবাকে ছাড়া ওর এটাই প্রথম ঈদ।
আবার জিঙ্গাসা করলাম কিরে উঠ!
সেমাই খাবি না?
ওঠ ভাই!
প্রতিবছর তো তুই আমাদের ডেকে তুলিস এবার কি হলো তোর!
শাওন প্রতিবছর সবার আগে ঈদে জামা কিনতো কিনে সবাইকে দেখিয়ে বেড়াতো অথচ এবার
সে কোনো জামা কেনে নি!
প্রতিবছর যে সবার আগে সেমাইয়ের প্লেট নিয়ে বসতো সে আজ সেমাইয়ের কথা মুখেই আনেন। যে ছেলেটা প্রতিবছর সালামির জন্য লাফালাফি করে সে আজ বিছানা থেকেই ওঠেনি।
আমি এর মধ্যে অনেকবার ডেকে চলছি শাওনকে উঠছে না কান্না ও বন্ধ করছে না। এবার তো রাগ করে আমি ধাক্কা দিয়েই বললাম ওঠ! তাড়াতাড়ি তোর সময় এক সেকেন্ড!
এভাবে জোর করে বিছানা থেকে উঠাতেই কান্না যেন আরো বেড়ে গেলো। জিজ্ঞাসা করলাম কি হয়েছে বল?
কে কি বলেছে?
কান্না করে বলল বাবা নেই আমার ঈদও নেই।
ওর কথা শুনে আমার চোখ দিয়ে বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছিল।
আসলেই তো!
শাওনের বাবা শাওন কে নিয়ে সবার আগে জামা কিনে দিতো! ঈদের সালামি দিত! নতুন জামা পড়ে একসঙ্গে নামাজে যেত অথচ এবার ওর বাবা নেই বলে ওর ঈদও নেই।
শাওন অনেক কান্না করে বলছে ঈদ আর এখন আমার নেই!
লেখক: শিক্ষার্থী, আইডিয়াল কলেজ।সূএ: জাগোনিউজ২৪.কম