শ্রমিকদের কল্যাণে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে সরকার, শ্রমিক-মালিকসহ সকল উন্নয়ন অংশীজনকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আগামীকাল মহান মে দিবস উপলক্ষে আজ এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

 

‘শ্রমিক-মালিক একতা, উন্নয়নের নিশ্চয়তা’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মহান মে দিবস উদযাপিত হচ্ছে জেনে রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেন। দিবসটি উপলক্ষে তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শ্রমজীবী মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

 

তিনি বলেন, মহান মে দিবস বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন। ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে হে মার্কেটে যে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে শ্রমিকদের ৮ ঘন্টা কাজের দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তার স্মৃতি শ্রমজীবী মানুষ তথা বিশ্বের সকল মানুষের কাছে চির অম্লান হয়ে থাকবে।

 

রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি ছিলেন শ্রমজীবী মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু। স্বাধীনতার পর মে দিবস রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় এবং জাতির পিতা মে দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে মজুরি কমিশন গঠন করেন এবং তিনি শ্রমিকদের জন্যও নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেন। ১৯৭২ সালে জাতির পিতার উদ্যোগ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তজার্তিক শ্রম সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে এবং আইএলও-র ৬টি কোর কনভেনশনসহ ২৯টি কনভেনশন অনুসমর্থন করে। এটি একটি বিরল ঘটনা এবং শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও তাঁদের অধিকার রক্ষায় এক অনন্য স্বীকৃতি। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদে সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতসহ কৃষক ও শ্রমিককে সকল প্রকার শোষণ হতে মুক্তি দেয়ার অঙ্গীকার রয়েছে।

 

আবদুল হামিদ বলেন, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার সুরক্ষায় শিল্প ও শ্রমিক সংক্রান্ত সকল আইনের সমন্বয় করে ২০০৬ সালে প্রণীত হয় ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬’ যা ২০১৩ ও ২০১৮ সালে ব্যাপকভাবে সংশোধন করা হয়েছে। শ্রম আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে ২০১৫ সালে প্রণয়ন করা হয় ‘বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫’। এছাড়া ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতিমালা, ২০১৩’ এবং গৃহশ্রমিকের সুরক্ষায় ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি, ২০১৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণ ও সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকার জন্য সরকারের পাশাপাশি শ্রমিক-মালিক উভয়ের সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে কলকারখানার উৎপাদন বৃদ্ধিতে আরো নিবেদিত হতে হবে।

 

তিনি বলেন, ‘শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই শিল্প-বাণিজ্যসহ দেশ এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির দিকে-মহান মে দিবসে এ প্রত্যাশা সবার।’ সূত্র: বাসস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন: প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান

» রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় এক ব্যক্তি নিহত

» খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের কল্যাণেও বেশ কিছু নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার- ধর্মমন্ত্রী

» দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি নামলো

» যেকোনো মূল্যে নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জেলা প্রশাসক ড.বদিউর আলম

» বিশ্ব গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের উদ্দ্যোগে কর্মশালা

» ফোনের বিরক্তিকর বিজ্ঞাপন বন্ধ করার উপায়

» নুসরাতের বুকে কার নামের ট্যাটু?

» সড়ক দুর্ঘটনায় দুই হেলপার নিহত

» আগামীকাল থেকে ২৫ জেলায় স্কুল-কলেজ-মাদরাসা বন্ধ

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

শ্রমিকদের কল্যাণে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে সরকার, শ্রমিক-মালিকসহ সকল উন্নয়ন অংশীজনকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আগামীকাল মহান মে দিবস উপলক্ষে আজ এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

 

‘শ্রমিক-মালিক একতা, উন্নয়নের নিশ্চয়তা’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মহান মে দিবস উদযাপিত হচ্ছে জেনে রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেন। দিবসটি উপলক্ষে তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শ্রমজীবী মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

 

তিনি বলেন, মহান মে দিবস বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন। ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে হে মার্কেটে যে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে শ্রমিকদের ৮ ঘন্টা কাজের দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তার স্মৃতি শ্রমজীবী মানুষ তথা বিশ্বের সকল মানুষের কাছে চির অম্লান হয়ে থাকবে।

 

রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি ছিলেন শ্রমজীবী মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু। স্বাধীনতার পর মে দিবস রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় এবং জাতির পিতা মে দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে মজুরি কমিশন গঠন করেন এবং তিনি শ্রমিকদের জন্যও নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেন। ১৯৭২ সালে জাতির পিতার উদ্যোগ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তজার্তিক শ্রম সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে এবং আইএলও-র ৬টি কোর কনভেনশনসহ ২৯টি কনভেনশন অনুসমর্থন করে। এটি একটি বিরল ঘটনা এবং শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও তাঁদের অধিকার রক্ষায় এক অনন্য স্বীকৃতি। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদে সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতসহ কৃষক ও শ্রমিককে সকল প্রকার শোষণ হতে মুক্তি দেয়ার অঙ্গীকার রয়েছে।

 

আবদুল হামিদ বলেন, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার সুরক্ষায় শিল্প ও শ্রমিক সংক্রান্ত সকল আইনের সমন্বয় করে ২০০৬ সালে প্রণীত হয় ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬’ যা ২০১৩ ও ২০১৮ সালে ব্যাপকভাবে সংশোধন করা হয়েছে। শ্রম আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে ২০১৫ সালে প্রণয়ন করা হয় ‘বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫’। এছাড়া ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতিমালা, ২০১৩’ এবং গৃহশ্রমিকের সুরক্ষায় ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি, ২০১৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণ ও সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকার জন্য সরকারের পাশাপাশি শ্রমিক-মালিক উভয়ের সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে কলকারখানার উৎপাদন বৃদ্ধিতে আরো নিবেদিত হতে হবে।

 

তিনি বলেন, ‘শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই শিল্প-বাণিজ্যসহ দেশ এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির দিকে-মহান মে দিবসে এ প্রত্যাশা সবার।’ সূত্র: বাসস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com