দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মানিলন্ডারিং মামলায় গাড়ি এবং স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। পাশাপাশি তার জামিন আবেদনের শুনানি আগামী দুই মাসের জন্য মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া আগামী দুই মাসের মধ্যে এ মামলার তদন্ত শেষ করে ৩ এপ্রিলের মধ্যে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মনির হোসেনের জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হাইকোর্ট বেঞ্চ গাড়ি এবং স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের জামিন আবেদন দুই মাসের জন্য মুলতবি করেছেন। এছাড়া এ মামলার তদন্ত শেষ করে আগামী ৩ এপ্রিলের মধ্যে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন।
২০২০ সালের ২০ নভেম্বর গভীর রাতে রাজধানীর বাড্ডায় মনিরের বাড়ি ঘিরে রাখে র্যাব। ২১ নভেম্বর দুপুর পর্যন্ত টানা আট ঘণ্টা অভিযানের পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার বাসা থেকে ৬০০ ভরি সোনার গহনা, বিদেশি পিস্তল-গুলি, মদ, ১০টি দেশের বিপুল পরিমাণ মুদ্রা ও নগদ এক কোটি ৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়। সবশেষ মানিলন্ডারিং আইনের এ মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মনিরের প্রায় ৩০টি প্লট, এক ডজনেরও বেশি ভবন ও দুটি গাড়ির শোরুম আছে। এর সবগুলোই তার অবৈধ উপার্জিত অর্থ দিয়ে কেনা হয়েছে।
এর পরে ২০২১ সালে গত ১৬ মে তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ ছাদেক আলী গোল্ডেন মনিরের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য ১৮ মে দিন ধার্য করেন। এদিন গোল্ডেন মনিরের পক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তিনদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
অন্যদিকে, ২০২০ সালের ১১ মে সিআইডির পরিদর্শক মো. ইব্রাহিম হোসেন বাদী হয়ে গোল্ডেন মনিরের স্ত্রী রওশন আক্তার ও ছেলে রাফি হোসেনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- গোল্ডেন মনিরের বোন নাসিমা আক্তার, নাসিমার স্বামী হাসান আলী খান, মনিরের আরেক ভগ্নিপতি নাহিদ হোসেন, গোল্ডেন মনিরের সহযোগী আবদুল হামিদ, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন, রিয়াজের ভাই হায়দার আলী এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিক।