চিপস চুরির অভিযোগে ৮ বছরের শিশু আটক!

এক প্যাকেট চিপস চুরির অভিযোগে আট বছরের শিশুকে পিঠমোড়া করে নিয়ে যাচ্ছেন এক পুলিশ। পাশে দাঁড়ানো আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাতে সমর্থন দিচ্ছেন। এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। সামান্য চিপস ‘চুরি’র অভিযোগে একটি শিশুর সঙ্গে এমন ভয়ঙ্কর আচরণ করায় পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন বেশিরভাগ মানুষ। শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ। খবর এএফপির।

 

ভাইরাল ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, এক কৃষ্ণাঙ্গ শিশুকে পিঠমোড়া করে ধরে গাড়ির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন সিরাকিউজ পুলিশ বিভাগের এক কর্মকর্তা। শিশুটি ভয়ে কাঁদছিল আর পাশে দাঁড়িয়ে আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তা সেসব দেখছিলেন।

এসময় ভিডিওধারণকারী ব্যক্তি তাদের জিজ্ঞেস করেন, আপনারা সবাই কী করছেন? শিশুটিকে ধরে রাখা পুলিশ কর্মকর্তা তাকে জবাব দেন, আন্দাজ করুন আমি কী করছি! এসময় আরেক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, শিশুটি চুরি করছিল।

 

তখন ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেন, পুলিশ শিশুটির সঙ্গে এমন আচরণ করছে যেন সে ‘ঠাণ্ডা মাথার কোনো অপরাধী’। শিশুটিকে পুলিশের হাত থেকে মুক্ত করতে একপর্যায়ে তিনি চিপসের দাম মিটিয়ে দেওয়ারও প্রস্তাব দেন।

 

কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তারা কোনো কথা শোনেননি। শিশুটিকে নিয়ে চলে যান তারা। এসময় একটি ছোট সাইকেলও গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। সম্ভবত ওই শিশু সাইকেলটি চালিয়ে দোকানে গিয়েছিল।

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আট বছরের শিশুটিকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি।

 

নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হচুল ভিডিওটিকে ‘হৃদয় বিদারক’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের মধ্যে অনেকেই বাবা-মা রয়েছি। আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না, ওই অবস্থায় শিশুটি কী পরিমাণ ভয়ের মধ্যে ছিল।

 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই পুলিশের বিরেুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, মার্কিন পুলিশ কর্মকর্তারা শ্বেতাঙ্গদের তুলানায় কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর বেশি চড়াও হন।

 

২০২০ সালে পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। দেশব্যাপী বিক্ষোভে পুলিশি আচরণবিধি সংস্কারের দাবি জানায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।

নিউইয়র্ক গভর্নর বলেছেন, শহরের অশ্বেতাঙ্গ সম্প্রদায়ের মানুষেরা ভিডিওটি দেখার সময় হয়তো অন্যদের মতো অবাক হবেন না। কারণ তারা সারা জীবনই পুলিশ ও অন্যদের কাছ থেকে ভিন্ন আচরণ দেখে আসছেন।

 

সিরাকিউজ পুলিশ বিভাগ মঙ্গলবার টুইটারে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কর্মকর্তাদের কাজ ও শরীরে পরা ক্যামেরাসহ পুরো ঘটনা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

 

তারা বলেছে, চুরির ঘটনায় সন্দেহভাজন শিশুটিকে হাতকড়া পরানো হয়নি। তাকে গাড়ির পেছনে বসিয়ে সরাসরি বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা শিশুটির বাবার সঙ্গে দেখা করেছেন। তবে কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

সূত্র: এনডিটিভি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে কারিকুলাম প্রণয়নের আহ্বান

» উপজেলা নির্বাচন : ৩ দিনের জন্য বন্ধ হচ্ছে বাইক চলাচল

» তীব্র দাবদাহ মোকাবিলায় দেশব্যপী বাংলালিংক-এর বিনামূল্যে পানি ও স্যালাইন বিতরণ

» শিগগিরই অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের বিধিমালা জারি – সংসদীয় কমিটিকে ভূমি মন্ত্রণালয়

» ক্র্যাব (CRAB) থেকে আবারও ব্র্যাক ব্যাংকের ‘এএএ’ ক্রেডিট রেটিং অর্জন

» নারীদের মধ্যে কেন বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি

» সোমবার থেকে শাহজালালে ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ

» বরিশালে বাস চলাচল শুরু

» বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া ভোটের অংশ: হানিফ

» চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে যা জানালেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

চিপস চুরির অভিযোগে ৮ বছরের শিশু আটক!

এক প্যাকেট চিপস চুরির অভিযোগে আট বছরের শিশুকে পিঠমোড়া করে নিয়ে যাচ্ছেন এক পুলিশ। পাশে দাঁড়ানো আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাতে সমর্থন দিচ্ছেন। এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। সামান্য চিপস ‘চুরি’র অভিযোগে একটি শিশুর সঙ্গে এমন ভয়ঙ্কর আচরণ করায় পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন বেশিরভাগ মানুষ। শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ। খবর এএফপির।

 

ভাইরাল ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, এক কৃষ্ণাঙ্গ শিশুকে পিঠমোড়া করে ধরে গাড়ির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন সিরাকিউজ পুলিশ বিভাগের এক কর্মকর্তা। শিশুটি ভয়ে কাঁদছিল আর পাশে দাঁড়িয়ে আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তা সেসব দেখছিলেন।

এসময় ভিডিওধারণকারী ব্যক্তি তাদের জিজ্ঞেস করেন, আপনারা সবাই কী করছেন? শিশুটিকে ধরে রাখা পুলিশ কর্মকর্তা তাকে জবাব দেন, আন্দাজ করুন আমি কী করছি! এসময় আরেক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, শিশুটি চুরি করছিল।

 

তখন ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেন, পুলিশ শিশুটির সঙ্গে এমন আচরণ করছে যেন সে ‘ঠাণ্ডা মাথার কোনো অপরাধী’। শিশুটিকে পুলিশের হাত থেকে মুক্ত করতে একপর্যায়ে তিনি চিপসের দাম মিটিয়ে দেওয়ারও প্রস্তাব দেন।

 

কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তারা কোনো কথা শোনেননি। শিশুটিকে নিয়ে চলে যান তারা। এসময় একটি ছোট সাইকেলও গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। সম্ভবত ওই শিশু সাইকেলটি চালিয়ে দোকানে গিয়েছিল।

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আট বছরের শিশুটিকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি।

 

নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হচুল ভিডিওটিকে ‘হৃদয় বিদারক’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের মধ্যে অনেকেই বাবা-মা রয়েছি। আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না, ওই অবস্থায় শিশুটি কী পরিমাণ ভয়ের মধ্যে ছিল।

 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই পুলিশের বিরেুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, মার্কিন পুলিশ কর্মকর্তারা শ্বেতাঙ্গদের তুলানায় কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর বেশি চড়াও হন।

 

২০২০ সালে পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। দেশব্যাপী বিক্ষোভে পুলিশি আচরণবিধি সংস্কারের দাবি জানায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।

নিউইয়র্ক গভর্নর বলেছেন, শহরের অশ্বেতাঙ্গ সম্প্রদায়ের মানুষেরা ভিডিওটি দেখার সময় হয়তো অন্যদের মতো অবাক হবেন না। কারণ তারা সারা জীবনই পুলিশ ও অন্যদের কাছ থেকে ভিন্ন আচরণ দেখে আসছেন।

 

সিরাকিউজ পুলিশ বিভাগ মঙ্গলবার টুইটারে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কর্মকর্তাদের কাজ ও শরীরে পরা ক্যামেরাসহ পুরো ঘটনা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

 

তারা বলেছে, চুরির ঘটনায় সন্দেহভাজন শিশুটিকে হাতকড়া পরানো হয়নি। তাকে গাড়ির পেছনে বসিয়ে সরাসরি বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা শিশুটির বাবার সঙ্গে দেখা করেছেন। তবে কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

সূত্র: এনডিটিভি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com