চলছে পবিত্র মাহে রমজান। প্রাপ্ত বয়স্ক প্রতিটি মুসলিম ছাড়াও নানা বয়সের শিশুরাও রোজা রাখছে। আনন্দ-উচ্ছ্বাসে খুশির আবির ছাড়াচ্ছে। সতত ইফতার প্রতিটি রোজাদারের জন্য আনন্দঘন মুহূর্ত।
রোজাদার ইফতার করে তার রোজা পূর্ণ করে। অনেক রোজাদার নিজে ইফতার করার পাশাপাশি অন্যের ইফতারেরও ব্যবস্থা করে। অভাবী কিংবা স্বাবলম্বীদের হাতে হাতে পৌঁছে দেয় ইফতারের সামগ্রী ও বিভিন্ন খাবার-দাবার।
যারা অন্যকে ইফতার করায়, আল্লাহ তাদের পুরো রোজা রাখার সওয়াব দান করেন। জায়েদ ইবনে খালেদ আল-জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন— যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে সে রোজাদারের সম পরিমাণ সওয়াব পাবে; রোজাদারের সওয়াব থেকে একটুও কমানো হবে না। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৮০৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৭৪৬; ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৮/২১৬; সহিহ আল-জামে, হাদিস : ৬৪১৫)
অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। ন্যায়পরায়ণ শাসক, রোজাদার যতক্ষণ না ইফতার করে এবং মজলুমের দোয়া। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৭৫২)
উপরোক্ত হাদিস দ্বারা বোঝা যায় যে ইফতারের আগে রোজাদারের দোয়া কবুল হয়। তাই রমজানের পরিপূর্ণ বরকত অর্জনের জন্য রোজাদারদের ইফতারের ব্যবস্থা করাও একটি বড় পদ্ধতি হতে পারে। এতে খুব সহজে তাদের নেক দোয়া পাওয়া যাবে।
যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিঃস্বার্থভাবে ক্ষুধার্ত মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করে, মহান আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই সৎকর্মশীলরা পান করবে এমন পানপাত্র থেকে, যার মিশ্রণ হবে কর্ফূর। এমন এক ঝরনা, যা থেকে আল্লাহর বান্দারা পান করবে, তারা এটিকে যথা ইচ্ছা প্রবাহিত করবে। তারা মানত পূর্ণ করে এবং সে দিনকে ভয় করে, যার অকল্যাণ হবে সুবিস্তৃত। তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মিসকিন, এতিম ও বন্দিকে খাদ্য দান করে। তারা বলে, ‘আমরা তো আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদের খাদ্য দান করি। আমরা তোমাদের থেকে কোনো প্রতিদান চাই না এবং কোনো শোকরও না। আমরা আমাদের রবের পক্ষ থেকে এক ভয়ংকর ভীতিপ্রদ দিবসের ভয় করি। সুতরাং সেই দিবসের অকল্যাণ থেকে আল্লাহ তাদের রক্ষা করলেন এবং তাদের প্রদান করলেন উজ্জ্বলতা ও উত্ফুল্লতা। ’ (সুরা দাহর, আয়াত : ৫-১১)
মাহে রমজানে মহান আল্লাহ এভাবে তার বান্দাদের অগণিত সওয়াব অর্জনের সুযোগ করে দেন।