জেনে নিন অ্যাফাসিয়া কী ধরনের রোগ

অ্যাফাসিয়া এমন একটি ব্যাধি, যা মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ক্ষতির কারণে সৃষ্ট হয়। এর ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি ভাষার অভিব্যক্তি এবং বোধগম্যতা হারিয়ে ফেলে।

 

চিকিৎসকদের ভাষায়, অ্যাফাসিয়া বলতে স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে কোনও আঘাতের ফলে রোগীর বাকশক্তি হারানোকে বোঝায়। সাধারণত এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শব্দ উচ্চারণে এবং কথা বলতে অসুবিধা হয়। অক্ষমতা তৈরি হয় লেখার ক্ষেত্রেও।

 

অ্যাফাসিয়া কয়েক ধরনের হতে পারে। যুক্তরাজ্যের জাতীয় অ্যাফাসিয়া সংস্থা দুই ধরনের অ্যাফাসিয়ার কথা জানিয়েছে। সেগুলো: ১. ব্রোকাস অ্যাফাসিয়া ও ২. অ্যানোমিক অ্যাফাসিয়া।

 

১. ব্রোকাস অ্যাফাসিয়া

এতে বাকশক্তি পুরোপুরি না হারালেও অনর্গল কথা বলার ক্ষমতা লোপ পায়। এতে রোগীর কথা বলা এতোটাই সীমিত হয়ে পড়ে যে, অনেক প্রচেষ্টার পর চারটি শব্দের চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারে না।

তবে অন্যের কথা বোঝার ক্ষেত্রে বা কোনও লেখা পড়ার ক্ষেত্রে রোগীর কোনও সমস্যা থাকে না। তবে নিজে লিখতে গেলে কিছু অসুবিধা হয়।

২. অ্যানোমিক অ্যাফাসিয়া

যাদের অ্যানোমিক বা অস্বাভাবিক অ্যাফাসিয়া আছে, তাদের কথা বলা বা লেখার সময় যে শব্দটি ব্যবহার করতে চান সেটা খুঁজে বের করতে প্রতিনিয়ত সমস্যা হয়। বিশেষ করে কিছু উল্লেখযোগ্য বিশেষ্য এবং ক্রিয়াপদ।

তবে তারা অন্যের কথা ভালভাবে বুঝতে পারে এবং লেখাও পড়তে পারে।

অ্যাফাসিয়ায় আক্রান্তের কারণসমূহ

অ্যাফাসিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সাধারণ কারণগুলো হল:-

১. মাথায় আঘাত
২. স্ট্রোক
৩. মস্তিষ্কের রক্তপাত এবং
৪. টিউমার

অ্যাফাসিয়া কীভাবে নির্ণয় করা হয়?

একজন নিউরোলজিস্ট, নিউরোসার্জন বা স্পিচ এবং ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্ট অ্যাফাসিয়া নির্ণয় করতে এবং এর কারণ নির্ধারণ করতে পারেন। অ্যাফাসিয়ার কারণ নির্ণয়ের জন্য সাধারণ পরীক্ষাগুলো হল সিটি স্ক্যান, এমআরআই, লাম্বার পাঞ্চার (মেরুদণ্ডের তরল পরীক্ষা করার জন্য)। এছাড়াও স্পিচ থেরাপিস্টের বিশদ মূল্যায়নের প্রয়োজন হতে পারে।

তথ্যসূত্র: বিবিসিহপকিন্স মেডিসিনস্ট্রোক সাপোর্টন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস ইউকেআমেরিকান স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ইসির ২ আইন সংস্কার প্রস্তাবের অনুমোদন

» কল্কির সিক্যুয়েল থেকেও বাদ পড়লেন দীপিকা

» সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন

» বাংলাদেশের মানুষ পিআর পদ্ধতি প্রত্যাখ্যান করেছে: টুকু

» বায়তুল মোকাররম এলাকায় ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ শুরু

» সীমানা বিরোধ: আদালতের রায়ের পর সিদ্ধান্ত নেবে ইসি

» নির্বাচনকে সামনে রেখে নেতাকর্মীদের একগুচ্ছ নির্দেশনা তারেক রহমানের

» দুটি ব্যাংকের তিনটি কার্ড ব্যবহার করে ৬ লাখ টাকা প্রতারণার, গ্রেফতার ১

» বাংলাদেশে সবচাইতে আগে জরুরি জাতীয় নির্বাচন : জিল্লুর রহমান

» শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা জুলাই গণহত্যার জন্য দায়ী— সাক্ষ্য নাহিদের

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জেনে নিন অ্যাফাসিয়া কী ধরনের রোগ

অ্যাফাসিয়া এমন একটি ব্যাধি, যা মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ক্ষতির কারণে সৃষ্ট হয়। এর ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি ভাষার অভিব্যক্তি এবং বোধগম্যতা হারিয়ে ফেলে।

 

চিকিৎসকদের ভাষায়, অ্যাফাসিয়া বলতে স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে কোনও আঘাতের ফলে রোগীর বাকশক্তি হারানোকে বোঝায়। সাধারণত এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শব্দ উচ্চারণে এবং কথা বলতে অসুবিধা হয়। অক্ষমতা তৈরি হয় লেখার ক্ষেত্রেও।

 

অ্যাফাসিয়া কয়েক ধরনের হতে পারে। যুক্তরাজ্যের জাতীয় অ্যাফাসিয়া সংস্থা দুই ধরনের অ্যাফাসিয়ার কথা জানিয়েছে। সেগুলো: ১. ব্রোকাস অ্যাফাসিয়া ও ২. অ্যানোমিক অ্যাফাসিয়া।

 

১. ব্রোকাস অ্যাফাসিয়া

এতে বাকশক্তি পুরোপুরি না হারালেও অনর্গল কথা বলার ক্ষমতা লোপ পায়। এতে রোগীর কথা বলা এতোটাই সীমিত হয়ে পড়ে যে, অনেক প্রচেষ্টার পর চারটি শব্দের চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারে না।

তবে অন্যের কথা বোঝার ক্ষেত্রে বা কোনও লেখা পড়ার ক্ষেত্রে রোগীর কোনও সমস্যা থাকে না। তবে নিজে লিখতে গেলে কিছু অসুবিধা হয়।

২. অ্যানোমিক অ্যাফাসিয়া

যাদের অ্যানোমিক বা অস্বাভাবিক অ্যাফাসিয়া আছে, তাদের কথা বলা বা লেখার সময় যে শব্দটি ব্যবহার করতে চান সেটা খুঁজে বের করতে প্রতিনিয়ত সমস্যা হয়। বিশেষ করে কিছু উল্লেখযোগ্য বিশেষ্য এবং ক্রিয়াপদ।

তবে তারা অন্যের কথা ভালভাবে বুঝতে পারে এবং লেখাও পড়তে পারে।

অ্যাফাসিয়ায় আক্রান্তের কারণসমূহ

অ্যাফাসিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সাধারণ কারণগুলো হল:-

১. মাথায় আঘাত
২. স্ট্রোক
৩. মস্তিষ্কের রক্তপাত এবং
৪. টিউমার

অ্যাফাসিয়া কীভাবে নির্ণয় করা হয়?

একজন নিউরোলজিস্ট, নিউরোসার্জন বা স্পিচ এবং ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্ট অ্যাফাসিয়া নির্ণয় করতে এবং এর কারণ নির্ধারণ করতে পারেন। অ্যাফাসিয়ার কারণ নির্ণয়ের জন্য সাধারণ পরীক্ষাগুলো হল সিটি স্ক্যান, এমআরআই, লাম্বার পাঞ্চার (মেরুদণ্ডের তরল পরীক্ষা করার জন্য)। এছাড়াও স্পিচ থেরাপিস্টের বিশদ মূল্যায়নের প্রয়োজন হতে পারে।

তথ্যসূত্র: বিবিসিহপকিন্স মেডিসিনস্ট্রোক সাপোর্টন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস ইউকেআমেরিকান স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com