সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : গাজার একটি হাসপাতালের ভেতরে ঢুকলে প্রথমেই চোখে পড়ে নীরবতা আর শূন্যতা। বেড আছে, রোগীও আছে। কিন্তু নেই প্রয়োজনীয় ওষুধ, নেই অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম, নেই পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ। ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের অবরোধ ও চিকিৎসা সামগ্রী প্রবেশে বাধার কারণে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা এখন চরম সংকটে পড়েছে। এই সংকটে হাজার হাজার রোগী মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছেন বলে সতর্ক করেছেন গাজার শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের বাধার কারণে গাজায় ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের প্রবেশ মারাত্মকভাবে কমে গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বারশ জানান, হাসপাতালগুলোর অবস্থা এখন ‘করুণ ও ভয়াবহ’। গুরুতর রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসকেরা কার্যত অসহায় হয়ে পড়েছেন।
তার ভাষ্য অনুযায়ী, অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ নেই। স্যালাইন, অবশ করার ওষুধ, গজ, ডায়ালাইসিসের সামগ্রী—সবকিছুরই তীব্র সংকট চলছে। পাশাপাশি ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও জেনারেটরের ঘাটতিতে চিকিৎসা কার্যক্রম আরও ব্যাহত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও নির্ধারিত সংখ্যক চিকিৎসা সহায়তার ট্রাক গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এতে চলমান স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা আরও গভীর হচ্ছে বলে জানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এই সংকটে শুধু আহতরাই নয়, দীর্ঘমেয়াদি রোগীরাও মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছেন। প্রায় ৪ হাজার গ্লকোমা রোগী স্থায়ী অন্ধত্বের আশঙ্কায় রয়েছেন। একই সঙ্গে ৪০ হাজার বাস্তুচ্যুত অন্তঃসত্ত্বা নারী অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকছেন, যা মা ও শিশুর জন্য বড় হুমকি। পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার শিশু অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে।
গাজার বাইরে চিকিৎসার অনুমতির অপেক্ষায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ১৫৬ রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। প্রায় ২০ হাজার রোগী বিদেশে চিকিৎসার অপেক্ষায় আছেন, যাদের মধ্যে বহু শিশু রয়েছে। আল-বারশ অবিলম্বে সীমান্ত খুলে মানবিক সহায়তা ও রোগী স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি সতর্ক করে বলেন, দেরি হলে আরও বহু প্রাণ ঝরে যেতে পারে।








