দুইজন নারী ও পুরুষকে ৫ মাস বন্দির রাখার ঘটনায় বাড়ির মালিক গ্রেফতার

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় ব্যক্তিগত ‌‘আয়নাঘরে’ দুইজন নারী ও পুরুষকে ৫ মাস বন্দি করে রাখার ঘটনায় সেই বাড়ির মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর আয়নাঘর ও আটকের বিষয়ে আদালতে স্বীরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।

 

মঙ্গলবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (১) এর বিচারক আলমগীর হোসেন ১৬৪ ধারায় তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আয়নাঘরের মালিক সুমন সেখ (২৩) রায়গঞ্জ উপজেলার সোনারাম মধ্যপাড়ার জহুরুল ইসলামের ছেলে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিরাজগঞ্জ ডিবির এস,আই নাজমুল হক রতন জানান, সোমবার রাতে সদর উপজেলার বহুলী বাজার এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। সাড়ে ৩ ঘণ্টা জবানবন্দি রেকর্ড করার পর সন্ধ্যায় তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

 

নাজমুল হক আরো বলেন, জবানবন্দিতে সুমন সেখ জানিয়েছে পল্লী চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরাফাত তাদের বাসা ভাড়া নিয়ে নিচের ফ্লোরে দুইটি কক্ষ তৈরি করেন। যেখানে দুইজন নারী ও পুরুষকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। তিনি নিজে তাদের খাবার সরবরাহ করতেন। আরাফাতসহ অজ্ঞাত ২/৩জন সেখানে নিয়মিত যাতায়াত করতো।

 

তিনি আরো জানান, সুমন সেখ এ ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ঘটনার দিন দুটি মামলার  প্রধান আসামি পল্লী চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরাফাত গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা বলছেও বলে তিনি জানিয়েছে।

 

রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের পূর্ব পাইকড়া গ্রামের আব্দুল জুব্বার (৭৫) ও লক্ষ্মী বিষ্ণু প্রসাদ  গ্রামের শিল্পী বেগমকে (৪৮) সুমন সেখের বাড়িতে প্রায় ৫ মাস ধরে বন্দি করে রাখা হয়। ১ মে গভীর রাতে নিজেদের চেষ্টায় তৈরি করা সুড়ঙ্গ দিয়ে তারা বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন। পরেরদিন বিষয়টি জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ লোকজন অভিযুক্ত আরাফাত ও সুমনের বসতবাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এদের মধ্যে আব্দুল জুব্বারকে ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর এবং শিল্পী বেগমকে পল্লী চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরাফাত  ১২ ডিসেম্বর অপহরণ করেন।

 

মুক্ত হওয়াদের অভিযোগ, মূলত জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরেই প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের তুলে নিয়ে ‘আয়নাঘরে’ বন্দি করে রাখে। এ ঘটনায় ৩ মে আব্দুল জুব্বারের ছেলে শফিকুল ইসলাম এবং শিল্পী বেগমের স্বামী মনসুর আলী খন্দকার দুটি মামলা করেছেন।

 

শফিকুল ইসলামের মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। অপরদিকে মনসুর আলীর মামলায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ১০ কেজি ওজনের রহস্যময় ফুল রাফ্লেশিয়া

» ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতি ঐশ্বরিয়া-আলিয়া এবার কান উৎসবে যাচ্ছেন কি

» বিভিন্ন অপরাধে জড়িত মোট ১৭ জন গ্রেফতার

» ইরানের সাথে চুক্তি করতে চান ট্রাম্প, তবে থাকা যাবে না পারমাণবিক অস্ত্র

» ইঞ্জিনচালিন লাটার সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল চালক নিহত

» কৃষককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা

» সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম দুদিনের রিমান্ডে

» এই ক্ষমতা বেশি দিন টিকবে না, বললেন শাজাহান খান

» চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের জন্য জমি বরাদ্দের দলিল হস্তান্তর

» বন্দরের ব্যবস্থাপনা পৃথিবীর সেরাদের হাতে দিতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

দুইজন নারী ও পুরুষকে ৫ মাস বন্দির রাখার ঘটনায় বাড়ির মালিক গ্রেফতার

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় ব্যক্তিগত ‌‘আয়নাঘরে’ দুইজন নারী ও পুরুষকে ৫ মাস বন্দি করে রাখার ঘটনায় সেই বাড়ির মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর আয়নাঘর ও আটকের বিষয়ে আদালতে স্বীরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।

 

মঙ্গলবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (১) এর বিচারক আলমগীর হোসেন ১৬৪ ধারায় তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আয়নাঘরের মালিক সুমন সেখ (২৩) রায়গঞ্জ উপজেলার সোনারাম মধ্যপাড়ার জহুরুল ইসলামের ছেলে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিরাজগঞ্জ ডিবির এস,আই নাজমুল হক রতন জানান, সোমবার রাতে সদর উপজেলার বহুলী বাজার এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। সাড়ে ৩ ঘণ্টা জবানবন্দি রেকর্ড করার পর সন্ধ্যায় তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

 

নাজমুল হক আরো বলেন, জবানবন্দিতে সুমন সেখ জানিয়েছে পল্লী চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরাফাত তাদের বাসা ভাড়া নিয়ে নিচের ফ্লোরে দুইটি কক্ষ তৈরি করেন। যেখানে দুইজন নারী ও পুরুষকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। তিনি নিজে তাদের খাবার সরবরাহ করতেন। আরাফাতসহ অজ্ঞাত ২/৩জন সেখানে নিয়মিত যাতায়াত করতো।

 

তিনি আরো জানান, সুমন সেখ এ ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ঘটনার দিন দুটি মামলার  প্রধান আসামি পল্লী চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরাফাত গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা বলছেও বলে তিনি জানিয়েছে।

 

রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের পূর্ব পাইকড়া গ্রামের আব্দুল জুব্বার (৭৫) ও লক্ষ্মী বিষ্ণু প্রসাদ  গ্রামের শিল্পী বেগমকে (৪৮) সুমন সেখের বাড়িতে প্রায় ৫ মাস ধরে বন্দি করে রাখা হয়। ১ মে গভীর রাতে নিজেদের চেষ্টায় তৈরি করা সুড়ঙ্গ দিয়ে তারা বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন। পরেরদিন বিষয়টি জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ লোকজন অভিযুক্ত আরাফাত ও সুমনের বসতবাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এদের মধ্যে আব্দুল জুব্বারকে ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর এবং শিল্পী বেগমকে পল্লী চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরাফাত  ১২ ডিসেম্বর অপহরণ করেন।

 

মুক্ত হওয়াদের অভিযোগ, মূলত জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরেই প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের তুলে নিয়ে ‘আয়নাঘরে’ বন্দি করে রাখে। এ ঘটনায় ৩ মে আব্দুল জুব্বারের ছেলে শফিকুল ইসলাম এবং শিল্পী বেগমের স্বামী মনসুর আলী খন্দকার দুটি মামলা করেছেন।

 

শফিকুল ইসলামের মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। অপরদিকে মনসুর আলীর মামলায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com