সংগৃহীত ছবি
ধর্ম ডেস্ক:রমজানের আগের মাস শাবান। এই মাসকে বলা হয় রমজানের প্রস্তুতির মাস। শাবান মাসে নবীজি বেশি বেশি নফল রোজা রাখতেন। নবীজির অনুসরণে অনেকে এই মাসে যতটা সম্ভব রোজা রাখার চেষ্টা করেন। প্রশ্ন হলো রমজান শুরুর আগের দিন নফল রোজা রাখা যাবে কি না। এই রোজা রাখার বিধান কি?
এর উত্তর হলো- রমজানের আগে দুয়েকদিন রোজা না রাখাই উচিত। কেননা রমজানের রোজার জন্য শারীরিক সক্ষমতার প্রয়োজন রয়েছে। স্বয়ং নবীজিও রমজান শুরুর আগের কয়েক দিন রোজা রাখতেন না। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, শাবান মাসের কিয়দংশ ছাড়া গোটা মাস রোজা রাখতেন।’ (সহিহ বুখারি: ১৯৭০; সহিহ মুসলিম: ১১৫৬)
তবে, যাদের রোজা রাখার অভ্যাস আছে এবং শারীরিক সক্ষমতা রয়েছে, তাদের জন্য রমজানের আগের দিনও নফল রোজা রাখা নিষেধ নয়। হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের একদিন বা দুইদিন আগে রোজা রাখবে না। তবে কারো যদি রোজা রাখার অভ্যাস থাকে সে ব্যক্তি রোজা রাখতে পারে।’ (সহিহ বুখারি: ১৯১৪; সহিহ মুসলিম: ১০৮২)
যাদের শরীর দুর্বল বা যাদের নফল রোজার অভ্যাস কম, তাদের শাবানের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেই রোজা রাখার দরকার নেই। যেমনটি এক হাদিসে এসেছে, ‘যখন শাবান মাসের অর্ধেক গত হবে তখন তোমরা আর রোজা রাখবে না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৩২৩৭; সুনানে তিরমিজি: ৭৩৮; সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৬৫১)
ইমাম নববি বলেন, ‘অর্ধ শাবানের পর রমজানের একদিন আগে রোজা পালন করার উপর নিষেধাজ্ঞা; তবে যে ব্যক্তি এর আগে থেকে লাগাতার রোজা রেখে আসছে কিংবা যে ব্যক্তির অভ্যাসগত রোজা এতে পড়ে যায়, যেমন যার অভ্যাস হচ্ছে- সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা পালন করা, তারা ওই দিনগুলোতে রোজা পালন করতে পারবে।’ ( ইমাম নববি ‘রিয়াদুস সালেহিন’ পৃ-৪১২)
মোটকথা, শাবান মাসে রমজানের প্রস্তুতিমূলক যতটা সম্ভব রোজা রাখা অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। কিন্তু মাসের শেষদিকে যেহেতু নবীজি রোজা রাখতেন না, তাই সবল-দুর্বল সবার জন্যই সুন্নত হলো- রমজান শুরুর আগের কয়েকদিন রোজা না রাখা। তবে, যে রোজা রাখতে অভ্যস্থ এবং সুস্থ-সক্ষম, তার জন্য নিষেধ নয়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র রমজানের জন্য শারীরিক মানসিক প্রস্তুতি নেওয়ার তাওফিক দান করুন। পবিত্র রমজানকে সুন্দরভাবে কাজে লাগানোর তাওফিক দান করুন। সব বিষয়ে কোরআন-সুন্নাহর যথাযথ অনুসারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।