ছবি সংগৃহীত
ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের ওপর সরকার স্টিম রোলার চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, অটোরিকশা বন্ধের মধ্য দিয়ে গরিবের আহার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সরকার সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে গরিবদের ওপর জুলুম চালাচ্ছে।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে শ্রমিক দল আয়োজিত মানববন্ধনে এই মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি এই নেতার অভিযোগ, দরিদ্র রিকশাচালকদের কাছ থেকে সরকারি দলের নেতাকর্মীরা প্রতিদিন চাঁদাবাজি করে তাদের সর্বশান্ত করছে।
সেতুমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, হঠাৎ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা-ভ্যান বন্ধ করে দিলেন। হাতে দামি ঘড়ি পরে ৫০ লাখ টাকার সানগ্লাস পরলে গরিব রিকশাওয়ালাদের চোখে পড়বে কীভাবে। উনি কি জানেন, এরা একবেলা খায়; নাকি দুই বেলা? ওবায়দুল কাদের কি জানেন, তারা রিকশা চালিয়ে উপার্জন করা অর্থ দিয়ে সন্তানদের স্কুলে পাঠায়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো আমদানি করছে কারা, কারা রিকশাগুলোকে লাইসেন্স দিচ্ছে— তাদের না ধরে গরিব রিকশাচালকদের ওপর স্ট্রিম রোলার চালানো হচ্ছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারদের সরকারেই তো রিকশাগুলো আমদানি করছে। আপনাদের ব্যবসায়ীরা আমদানি করছে, অথচ এদের কাছ থেকে নিয়ে যারা চালাচ্ছেন তাদের ওপর আপনারা জুলুম করছেন। এখন সবদোষ এদের হয়ে গেল।
তিনি বলেন, পেট ভরে বদ হজম হবে; তারপরও আপনাদের টাকা দরকার। আজকে যাদের রিকশা চালাতে দেওয়া হচ্ছে না; এদের কাছ থেকেই প্রশাসনের লোকেরা টাকা নেয়, যুবলীগ-ছাত্রলীগকে চাঁদা দিতে হচ্ছে। তারপরও এদের উপরেই আপনারা স্টিম রোলার চালাচ্ছেন। তাদের ওপরই তরবারি ঘোরাচ্ছেন।
বিএনপি মুখপাত্র বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনি গরিবের আহার কেড়ে নিয়ে, ভাত কেড়ে নিয়ে, রাজত্ব করবেন, স্বর্গ বানিয়ে বসবাস করবেন, সেই স্বর্গ থেকেই আপনাকে বিদায় নিতে হবে। বেশি দিন টিকতে পারবেন না।
শেয়ার বাজারেও নতুন করে ধ্বস নেমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তরুণ শিক্ষিত যুবকরা, অল্প আয়ের মানুষেরা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করে; সেই শেয়ার মার্কেটেও আবার নতুন করে পতন হচ্ছে, বিনিয়োগকারীরা মাথাতুলে দাঁড়াতে পারছে না। এতে বেকার হচ্ছে তরুণরা যুবকরা। তারা এখন সর্বশান্ত হয়ে গেছে, ফতুর হয়ে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে অ্যাডভোকেট রিজভী বলেন, তিনি অনেক কথা বলেন, আমি এই করেছি; সেই করেছি; এত উন্নয়ন করেছি— এগুলো সবই তার গলাবাজি। তার নেতাদের চাপাবাজি। অথচ দিন দিন কত মানুষকে যে গরিব বানিয়েছেন; গরিব থেকে চরম গরিব বানাচ্ছেন; সেটা একবারও বলেন না। অবশ্য তারা কী করে; বাজেটে ভর্তুকি বাড়ানো হচ্ছে; বিদ্যুৎ খাত থেকে সব খাতে। কারণ ভর্তুকি না দিলে বিদ্যুৎ খাতের দেনা পরিশোধ করা যাবে না। আইএমএফ থেকে শুরু করে অন্যান্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের শর্ত দিচ্ছে— তবুও তারা ভর্তুকি বাড়াচ্ছে। এই ভর্তুকি কে দেয়; এটা কি টুঙ্গিপাড়ার টাকা দিয়ে চলে? না এগুলো দেওয়া হয় গরিব শ্রমজীবী মানুষের ঘরের টাকায়।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির চেয়ারপাসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সহ-শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।