এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির
হিমেন শীতল হাওয়া নেমেছে দেশে,
কনকনে ঠান্ডায় স্তব্ধ হয়ে আসে জীবন।
শহরের ফুটপাথ থেকে
গ্রামের খড়ের ঘর—
শীত এখানে শুধু ঋতু নয়,
এ এক নীরব বিপর্যয়।
রাত গভীর হলে
ছিন্নমূল মানুষগুলো জেগে থাকে,
কারো গায়ে পাতলা কাপড়,
কারো শরীরে জ্বরের আগুন।
মায়ের কোলে কাঁপতে থাকে শিশু,
বৃদ্ধের নিঃশ্বাস ভেঙে যায়
হিমেল বাতাসে।
শীতের সঙ্গে নামে অসুখ—
শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর।
হাসপাতালের বারান্দায়
শয্যা ছাড়িয়ে পড়ে মানুষের ভিড়।
এক বিছানায় দুই রোগী,
এক অক্সিজেনে দুই প্রাণ,
করিডোর জুড়ে দীর্ঘশ্বাস।
দেশজুড়ে হাজার হাজার
সাধারণ মানুষ ভর্তি,
তাদের নাম নেই শিরোনামে,
নেই ছবির ক্যাপশনে।
তাপমাত্রা কমার খবর হয়,
কিন্তু কমে যাওয়া জীবন
সংবাদ হয় না।
ডাক্তারের চোখে ক্লান্তি,
নার্সের পায়ে ছুটে চলা রাত।
আর রোগীর চোখে—
একটাই প্রার্থনা,
আর একটু উষ্ণতা,
আর একটু বাঁচা।
শীত আসে প্রতিবছর,
প্রস্তুতি আসে খণ্ডিত।
কম্বল বিতরণ হয় দিনের আলোয়,
রাতের ঠান্ডা পড়ে থাকে
অদেখাই।
নীতির ভাষা উষ্ণ,
মানুষের বাস্তবতা ঠান্ডা।
তবু এই হিমেল সময়েই
মানুষ মানুষকে খোঁজে।
একটি কম্বল,
একটি হাত,
একটি প্রশ্ন—
“আপনি ঠিক আছেন তো?”
এই শীত আমাদের
আয়নার সামনে দাঁড় করায়।
প্রশ্ন তোলে—
আমরা কি কেবল পাঠক,
নাকি দায়বদ্ধ নাগরিক?
হিমেন শীতল হাওয়া
আজ খবরের পাতায় এসে
একটাই কথা বলে—
মানুষকে বাদ দিয়ে
কোনো খবরই পূর্ণ নয়।








