শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ ঘোষণা

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক :  ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা ক্ষতিগ্রস্তদের বাসস্থান পুনঃনির্মাণে বড় ধরনের ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। যদিও দেশটি শনিবারও নতুন ভূমিধস ও বন্যার আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে।

সরকার নিশ্চিত করেছে যে ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখন পর্যন্ত ৬০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ২১৪ জন নিখোঁজ রয়েছে এবং এই নিখোঁজ ব্যক্তিরা মারা গেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকে একে দেশটির ‘সবচেয়ে কঠিন প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

সমগ্র দেশে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এই মানুষরা, দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেঁচে যাওয়া পরিবারগুলোকে নিরাপদ এলাকায় জমি কিনে এবং সেখানে নতুন ঘর নির্মাণের জন্য সর্বোচ্চ ১ কোটি রুপি (৩৩ হাজার ডলার) পর্যন্ত দেওয়া হবে।

এছাড়াও, এই দুর্যোগে যারা মারা গেছে অথবা স্থায়ীভাবে বিকলাঙ্গ বা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়া প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবারকে সরকার ১০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) জানিয়েছে, সাম্প্রতিক এই প্রাকতিক দুর্যোগে ৭১ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে গত সপ্তাহের বন্যা ও ভূমিধসে প্রায় ৫ হাজার বাড়ি বা ঘর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

এখনও প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ রাষ্ট্র পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। যদিও সংখ্যাটি সর্বোচ্চ পর্যায়ের ২ লাখ ২৫ হাজার থেকে কমে এসেছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার অতিরিক্ত ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার অনুরোধে তারা সাড়া দেবে কি-না, সে ব্যাপারে বিবেচনা করছে। এর বাইরে চলতি মাসে আগেই শ্রীলঙ্কার ৩৪৭ মিলিয়ন ডলার সহায়তা পাওয়ার কথা ছিল।

ওয়াশিংটনভিত্তিক এই ঋণদাতা সংস্থা শুক্রবার রাতে বলেছে, ‘এই কঠিন সময়ে, শ্রীলঙ্কার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আইএমএফ ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এবং দেশটির পুনরুদ্ধার, পুনর্গঠন ও ভবিষ্যতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

এমন এক সময় ঘূর্ণিঝড় দিতওয়া শ্রীলঙ্কায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, যখন দেশটি ২০২২ সালের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট থেকে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল।

২০২৩ সালের শুরুর দিকে আইএমএফের ৪ বছরের ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের বেইলআউট চুক্তির পর অর্থনীতি কিছুটা পুনরুদ্ধার হচ্ছিল।

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী দিসানায়েকে শুক্রবার পার্লামেন্টে বলেন, দেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়ালেও, সাম্প্রতিক এই আঘাত দেশটির পক্ষে একা সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে দেশটির সেই সক্ষমতা নেই।

এদিকে ডিএমসি জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মধ্যাঞ্চলে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৃষ্টিপাত ওই অঞ্চলে নতুন করে ভূমিধসের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে, আর এর ফলে ধ্বংস্তুপ অপসারণ ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

তবে কর্তৃপক্ষ মধ্যাঞ্চলের ভূমিধসপ্রবণ এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া বাসিন্দাদেরকে ঘরবাড়ি অক্ষত থাকলেও, এখনই তাদেরকে সেখানে ফিরে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করেছে।

শুক্রবার এমন কিছু অঞ্চলে নতুন করে ভূমিধসের সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যে সমস্ত অঞ্চল পূর্ববর্তী সতর্কতার আওতায় ছিল না। সূত্র : এএফপি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সামনের নির্বাচন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় টেস্ট: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

» অবিস্মরণীয় একটি দিন ৬ ডিসেম্বর : তারেক রহমান

» বাসায় গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় নারী শিশুসহ ৬ জন দগ্ধ

» বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বাসঘাতক বলায় ক্ষেপে গেলেন যুমনা টেলিভিশনের উপস্থাপিকা !

» এভারকেয়ারে কমছে উৎসুক জনতার ভিড়

» আজ ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন দিবস

» নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা, প্রত্যাশা ও বাস্তবতা

» মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৮৪ অভিবাসী আটক

» ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা শুরু

» ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে একজন নিহত

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ ঘোষণা

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক :  ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা ক্ষতিগ্রস্তদের বাসস্থান পুনঃনির্মাণে বড় ধরনের ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। যদিও দেশটি শনিবারও নতুন ভূমিধস ও বন্যার আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে।

সরকার নিশ্চিত করেছে যে ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখন পর্যন্ত ৬০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ২১৪ জন নিখোঁজ রয়েছে এবং এই নিখোঁজ ব্যক্তিরা মারা গেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকে একে দেশটির ‘সবচেয়ে কঠিন প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

সমগ্র দেশে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এই মানুষরা, দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেঁচে যাওয়া পরিবারগুলোকে নিরাপদ এলাকায় জমি কিনে এবং সেখানে নতুন ঘর নির্মাণের জন্য সর্বোচ্চ ১ কোটি রুপি (৩৩ হাজার ডলার) পর্যন্ত দেওয়া হবে।

এছাড়াও, এই দুর্যোগে যারা মারা গেছে অথবা স্থায়ীভাবে বিকলাঙ্গ বা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়া প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবারকে সরকার ১০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) জানিয়েছে, সাম্প্রতিক এই প্রাকতিক দুর্যোগে ৭১ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে গত সপ্তাহের বন্যা ও ভূমিধসে প্রায় ৫ হাজার বাড়ি বা ঘর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

এখনও প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ রাষ্ট্র পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। যদিও সংখ্যাটি সর্বোচ্চ পর্যায়ের ২ লাখ ২৫ হাজার থেকে কমে এসেছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার অতিরিক্ত ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার অনুরোধে তারা সাড়া দেবে কি-না, সে ব্যাপারে বিবেচনা করছে। এর বাইরে চলতি মাসে আগেই শ্রীলঙ্কার ৩৪৭ মিলিয়ন ডলার সহায়তা পাওয়ার কথা ছিল।

ওয়াশিংটনভিত্তিক এই ঋণদাতা সংস্থা শুক্রবার রাতে বলেছে, ‘এই কঠিন সময়ে, শ্রীলঙ্কার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আইএমএফ ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এবং দেশটির পুনরুদ্ধার, পুনর্গঠন ও ভবিষ্যতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

এমন এক সময় ঘূর্ণিঝড় দিতওয়া শ্রীলঙ্কায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, যখন দেশটি ২০২২ সালের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট থেকে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল।

২০২৩ সালের শুরুর দিকে আইএমএফের ৪ বছরের ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের বেইলআউট চুক্তির পর অর্থনীতি কিছুটা পুনরুদ্ধার হচ্ছিল।

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী দিসানায়েকে শুক্রবার পার্লামেন্টে বলেন, দেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়ালেও, সাম্প্রতিক এই আঘাত দেশটির পক্ষে একা সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে দেশটির সেই সক্ষমতা নেই।

এদিকে ডিএমসি জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মধ্যাঞ্চলে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৃষ্টিপাত ওই অঞ্চলে নতুন করে ভূমিধসের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে, আর এর ফলে ধ্বংস্তুপ অপসারণ ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

তবে কর্তৃপক্ষ মধ্যাঞ্চলের ভূমিধসপ্রবণ এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া বাসিন্দাদেরকে ঘরবাড়ি অক্ষত থাকলেও, এখনই তাদেরকে সেখানে ফিরে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করেছে।

শুক্রবার এমন কিছু অঞ্চলে নতুন করে ভূমিধসের সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যে সমস্ত অঞ্চল পূর্ববর্তী সতর্কতার আওতায় ছিল না। সূত্র : এএফপি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com