সংগৃহীত ছবি
স্পোর্টস ডেস্ক :১৩ বছর বয়সে আর্জেন্টিনা ছেড়ে বার্সেলোনার একাডেমি লা মাসিয়ায় যোগ দেন লিওনেল মেসি। সেই সময় তাঁর সামনে ছিল স্পেন জাতীয় দলে খেলার সুযোগও। কিন্তু আর্জেন্টিনার প্রতি টান থেকে প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দেন তিনি। সেই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে বড় ভূমিকা ছিল আর্জেন্টাইন কোচ ওমার সাউতোর।
মেসির ক্যারিয়ারে মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এই কোচ আর বেঁচে নেই। গত রোববার ৭৩ বছর বয়সে মারা গেছেন সাউতো। তিন দশকেরও বেশি সময় আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)-এ দায়িত্ব পালন করা এই ফুটবল ব্যক্তিত্বকে মাত্র এক মাস আগেই এক অনুষ্ঠানে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়েছিল।
এক বিবৃতিতে এএফএ সাউতোর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানায়, “গভীর শোক ও দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের ঐতিহাসিক ম্যানেজার ওমার সাউতো আর নেই। তাঁর দায়বদ্ধতা, মানবিকতা ও আদর্শিক চরিত্রের জন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ।”
বার্সেলোনায় থাকাকালীন কিশোর মেসির সঙ্গে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলার সম্ভাবনা নিয়ে প্রথম যোগাযোগ করেন সাউতোই। সে সময় প্রতিভাবান মেসিকে পেতে আগ্রহী ছিল স্পেন। কিন্তু সাউতো মেসির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর নাগরিকত্ব ও যোগ্যতা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া শুরু করান।
২০২১ সালে টিওয়াইসি স্পোর্টসে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, স্পেন অনূর্ধ্ব-২০ দলের কোচিং স্টাফ তাঁকে মেসির ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন, “বার্সেলোনার ওই ছেলেটাকে আননি কেন? এখানে থাকা সবার চেয়ে ভালো সে।”

দেশে ফিরে তিনি মেসির বাড়িতে যোগাযোগ করেন। প্রথমে ফোন করেন মেসির দাদিকে, এরপর চাচা- সবশেষে বাবার সঙ্গে কথা হয়। মেসির বাবা তখনই বলেন, “অবশেষে ডাকলেন! আমার ছেলে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলেই খেলতে চায়।”
এরপর মেসি বেছে নেন আর্জেন্টিনাকে, আর সেই সিদ্ধান্ত থেকেই জন্ম নেয় এক মহাকাব্যিক আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার।
সাউতোর মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন মেসি। ২০২২ বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে সাউতোর সঙ্গে তোলা একটি ছবি শেয়ার করে তিনি লেখেন, “আপনি সবসময় পাশে ছিলেন। আমাকেই প্রথম এএফএ-র নজরে আনতে আপনি পথ দেখিয়েছিলেন। আপনাকে কখনো ভুলব না, ওমার। শান্তিতে থাকুন।”
তিন দশকের দীর্ঘ কর্মজীবনে সাউতোকে বর্তমান আর্জেন্টিনা দলের অনেক খেলোয়াড়ই ‘দ্বিতীয় বাবা’ বলে মনে করতেন।







