বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের বাঘ কেড়ে নিয়েছে স্বামী, নদী দিয়েছে জুলেখার জীবিকা  

এস.এম.  সাইফুল ইসলাম কবির, সুন্দরবন থেকে ফিরে  :দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলের সকাল, বিকেল কিংবা রাত নয়, ভাটা হলেই জাল হাতে নদীতে নামেন। নদীর এ মাথা থেকে ও মাথা জাল টানেন। কোনো ঝুঁকিই তাঁর কাছে ঝুঁকি মনে হয় না। বড় আপন মনে হয় সুন্দরবনের এই মামুদো নদীকে। এই নদীতে যে তাঁর জীবন বাঁধা। স্বামী করিম গাজী বাঘের পেটে যাওয়ার পর এ নদীই তাঁকে দিয়েছে দিশা। সেখানে জাল টেনে চিংড়ি রেণু ধরে প্রায় ২২ বছর চলছে জুলেখা বিবির (৫২) বেঁচে থাকার নিরন্তর লড়াই।

জুলেখা বিবির বসবাস সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবনের একেবারে পেটের মধ্যে গোলাখালী গ্রামে। হঠাৎ করে দেখলে মনে হবে এ তো গ্রাম নয়, সুন্দরবন। তিন দিক দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে সুন্দরবন, একদিকে ধনচিখালী নদী। এখানে ৭৮টি পরিবারের পাঁচ শতাধিক মানুষের বসবাস। আধুনিক কোনো সুযোগ–সুবিধা এখানকার মানুষকে স্পর্শ করেনি। সবার একমাত্র বেঁচে থাকার অবলম্বন সুন্দরবন আর সুন্দরবন–সংলগ্ন নদীগুলো।

সাতক্ষীরা শহর থেকে গোলখালী গ্রাম প্রায় ১০০ কিলোমিটার। সম্প্রতি ভাঙাচোরা ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হয় জুলেখা বিবির সঙ্গে। সকাল তখন সাড়ে ১০টা। গোলাখালী গ্রামের মানুষ নদীতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জুলেখা বিবিও প্রস্তুতি নিচ্ছেন নদীতে নামার।

জুলেখা বলে চলেন তাঁর জীবনের গল্প, ‘তখন আমার বয়স ২৯ কিংবা ৩০ হবে। তিন মেয়ে ও এক ছেলের মা আমি। কুলে সাবর ছোট সাবাল (ছেলে) মোস্তাফা কামাল। বয়স তাঁর বছর পেরুয়ে সবে। একদিন সুকালে ওর বাপ করিম গাজী ও একই এলাকার নওসাদ সরদার, গণি সরদার, ইউসুফ মোল্যাসহ পাঁচ-ছয় জন সুন্দরবনে গিইলো মাছ মারতি। পরের দিন ২০০১ সালের ২৭ মে খবর এল আমার স্বামীকে বাঘে খাইছে। এক দিন পরে দুপুরে ওর বাপের লাশ এল। চিনতে পারিনি ক্ষতবিক্ষত দেহ। কবর দিলাম এই গোলাখালী গেরামে।’

স্বামীকে হারানোর পর কয়েক দিন নির্বাক হয়ে গিয়েছিলেন চার সন্তানের মা জুলেখা। কীভাবে সংসার চলবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে এক বছরের মোস্তফাকে বাড়িতে রেখে নদীতে নামেন রেণু ধরতে।

গোলাখালী গ্রামে পাঁচ কাঠা জমি কিনে মাথা গোঁজার ঠাঁই করেছেন জুলেখা বিবিছবি জুলেখা বিবি বলেন, ‘ওই যে ঝাঁপ দিলাম। এখনো প্রতিদিন মামুদো নদীতে ভাটা হলে ঝড়–বৃষ্টি কিংবা দুর্যোগ উপেক্ষা করে নদীতে ঝাঁপ দেই। মাছ ধরি। তা বিক্রি করে চার সন্তানকে বড় করছি। তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। সেই এক বছরের মোস্তাফা কামাল এখন খুলনা বিএল কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ালেখা কুরে।’

জুলেখা জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর নদী থেকে চিংড়ির রেণু ধরে তাঁর জীবিকা চলে। স্বামী বাঘের পেটে যাওয়ার পর এক টাকাও কেউ সহযোগিতা করেনি। ২০০৮-০৯ সালের দিকে ১২ হাজার টাকা দিয়ে গোলাখালী গ্রামে পাঁচ কাঠা জমি কিনে মাথা গোঁজার ঠাঁই করেছেন। মাটির দেয়ালের টিনের ছাউনি দিয়ে করেছেন একটি ঘর। সেখানে ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন। ছাউনি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। সেই থেকে মামুনদো নদীতে কোনো দিন ৫০০-৬০০ টাকা, আবার কোনো দিন এক টাকাও আয় হয় না। এভাবেই প্রায় ২২ বছর তাঁর নদীর সঙ্গে সখ্য।

আর্থিক সংকটের কারণে ছেলে সব সময় খুলনায় থাকতে পারেন না উল্লেখ করে জুলেখা বিবি বলেন, ছেলে পরীক্ষার তিন মাস আগে খুলনায় যান। এ সময় তিনি বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে ২০ হাজার টাকা করে ছেলেকে পাঠান খুলনায়। তখন সপ্তাহে কিস্তি দিতে হয় ৫৫০ টাকা।

স্বামী মারা যাওয়ার পর নদী থেকে চিংড়ির রেণু ধরে জীবিকা চলে জুলেখা বিবির আগে খুব একটা সমস্যা হতো না জানিয়ে জুলেখা বলেন, ২০২১ সালের পর থেকে তিন মাস (১ জুন-৩১ আগস্ট) সুন্দরবন ও সুন্দরবন–সংলগ্ন নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরাসহ সুন্দরবনে প্রবেশে জেলেদের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে। এ সময় তিনি আর নদীতে নামতে পারেন না। বেঁচে থাকতে হলে ঋণ নিয়ে চলতে হবে। তাঁর মতো সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল অন্য জেলেরাও সংকটে পড়েছেন।

ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়ে জুলেখা বিবি বলেন, স্বামীর মতো ছেলেকেও যেন সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের খোরাক হতে না হয়, এ জন্য তিনি সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে সহযোগিতা চান।

স্থানীয় রমজান নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন ‌বলেন, জুলেখার জীবন সংগ্রামী জীবন। তিনি এই পশ্চাৎপদ এলাকায় একজন অনুকরণীয় মা। জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস শুধু জুলেখার মতো অনেক জেলে নানা সংকটে থাকেন। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে জুখেলার জন্য কিছু করার ইচ্ছা পোষণ করেন তিনি।#

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সিলেট নগরীর যেসব এলাকায় ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না

» ক্লিকের যুগে প্রিন্ট মিডিয়ার টিকে থাকার লড়াই

» ৭ ঘণ্টা পর মতিঝিলে-শাহবাগ অংশে চালু মেট্রোরেল

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত পাঁচজন গ্রেফতার

» ভারতকে ১২৬ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ

» ‘সমালোচনাগুলো ওর মনে আঘাত ফেলেছে’

» ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে: আমানউল্লাহ আমান

» যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে হবে : মাসুদ সাঈদী

» নির্বাচন ছাড়া সংস্কার বাস্তবায়ন হবে না : জোনায়েদ সাকি

» বিস্ফোরক মামলায় মির্জা ফখরুলসহ ১৬৩ জনকে অব্যাহতি

উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা,

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের বাঘ কেড়ে নিয়েছে স্বামী, নদী দিয়েছে জুলেখার জীবিকা  

এস.এম.  সাইফুল ইসলাম কবির, সুন্দরবন থেকে ফিরে  :দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলের সকাল, বিকেল কিংবা রাত নয়, ভাটা হলেই জাল হাতে নদীতে নামেন। নদীর এ মাথা থেকে ও মাথা জাল টানেন। কোনো ঝুঁকিই তাঁর কাছে ঝুঁকি মনে হয় না। বড় আপন মনে হয় সুন্দরবনের এই মামুদো নদীকে। এই নদীতে যে তাঁর জীবন বাঁধা। স্বামী করিম গাজী বাঘের পেটে যাওয়ার পর এ নদীই তাঁকে দিয়েছে দিশা। সেখানে জাল টেনে চিংড়ি রেণু ধরে প্রায় ২২ বছর চলছে জুলেখা বিবির (৫২) বেঁচে থাকার নিরন্তর লড়াই।

জুলেখা বিবির বসবাস সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবনের একেবারে পেটের মধ্যে গোলাখালী গ্রামে। হঠাৎ করে দেখলে মনে হবে এ তো গ্রাম নয়, সুন্দরবন। তিন দিক দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে সুন্দরবন, একদিকে ধনচিখালী নদী। এখানে ৭৮টি পরিবারের পাঁচ শতাধিক মানুষের বসবাস। আধুনিক কোনো সুযোগ–সুবিধা এখানকার মানুষকে স্পর্শ করেনি। সবার একমাত্র বেঁচে থাকার অবলম্বন সুন্দরবন আর সুন্দরবন–সংলগ্ন নদীগুলো।

সাতক্ষীরা শহর থেকে গোলখালী গ্রাম প্রায় ১০০ কিলোমিটার। সম্প্রতি ভাঙাচোরা ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হয় জুলেখা বিবির সঙ্গে। সকাল তখন সাড়ে ১০টা। গোলাখালী গ্রামের মানুষ নদীতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জুলেখা বিবিও প্রস্তুতি নিচ্ছেন নদীতে নামার।

জুলেখা বলে চলেন তাঁর জীবনের গল্প, ‘তখন আমার বয়স ২৯ কিংবা ৩০ হবে। তিন মেয়ে ও এক ছেলের মা আমি। কুলে সাবর ছোট সাবাল (ছেলে) মোস্তাফা কামাল। বয়স তাঁর বছর পেরুয়ে সবে। একদিন সুকালে ওর বাপ করিম গাজী ও একই এলাকার নওসাদ সরদার, গণি সরদার, ইউসুফ মোল্যাসহ পাঁচ-ছয় জন সুন্দরবনে গিইলো মাছ মারতি। পরের দিন ২০০১ সালের ২৭ মে খবর এল আমার স্বামীকে বাঘে খাইছে। এক দিন পরে দুপুরে ওর বাপের লাশ এল। চিনতে পারিনি ক্ষতবিক্ষত দেহ। কবর দিলাম এই গোলাখালী গেরামে।’

স্বামীকে হারানোর পর কয়েক দিন নির্বাক হয়ে গিয়েছিলেন চার সন্তানের মা জুলেখা। কীভাবে সংসার চলবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে এক বছরের মোস্তফাকে বাড়িতে রেখে নদীতে নামেন রেণু ধরতে।

গোলাখালী গ্রামে পাঁচ কাঠা জমি কিনে মাথা গোঁজার ঠাঁই করেছেন জুলেখা বিবিছবি জুলেখা বিবি বলেন, ‘ওই যে ঝাঁপ দিলাম। এখনো প্রতিদিন মামুদো নদীতে ভাটা হলে ঝড়–বৃষ্টি কিংবা দুর্যোগ উপেক্ষা করে নদীতে ঝাঁপ দেই। মাছ ধরি। তা বিক্রি করে চার সন্তানকে বড় করছি। তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। সেই এক বছরের মোস্তাফা কামাল এখন খুলনা বিএল কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ালেখা কুরে।’

জুলেখা জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর নদী থেকে চিংড়ির রেণু ধরে তাঁর জীবিকা চলে। স্বামী বাঘের পেটে যাওয়ার পর এক টাকাও কেউ সহযোগিতা করেনি। ২০০৮-০৯ সালের দিকে ১২ হাজার টাকা দিয়ে গোলাখালী গ্রামে পাঁচ কাঠা জমি কিনে মাথা গোঁজার ঠাঁই করেছেন। মাটির দেয়ালের টিনের ছাউনি দিয়ে করেছেন একটি ঘর। সেখানে ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন। ছাউনি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। সেই থেকে মামুনদো নদীতে কোনো দিন ৫০০-৬০০ টাকা, আবার কোনো দিন এক টাকাও আয় হয় না। এভাবেই প্রায় ২২ বছর তাঁর নদীর সঙ্গে সখ্য।

আর্থিক সংকটের কারণে ছেলে সব সময় খুলনায় থাকতে পারেন না উল্লেখ করে জুলেখা বিবি বলেন, ছেলে পরীক্ষার তিন মাস আগে খুলনায় যান। এ সময় তিনি বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে ২০ হাজার টাকা করে ছেলেকে পাঠান খুলনায়। তখন সপ্তাহে কিস্তি দিতে হয় ৫৫০ টাকা।

স্বামী মারা যাওয়ার পর নদী থেকে চিংড়ির রেণু ধরে জীবিকা চলে জুলেখা বিবির আগে খুব একটা সমস্যা হতো না জানিয়ে জুলেখা বলেন, ২০২১ সালের পর থেকে তিন মাস (১ জুন-৩১ আগস্ট) সুন্দরবন ও সুন্দরবন–সংলগ্ন নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরাসহ সুন্দরবনে প্রবেশে জেলেদের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে। এ সময় তিনি আর নদীতে নামতে পারেন না। বেঁচে থাকতে হলে ঋণ নিয়ে চলতে হবে। তাঁর মতো সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল অন্য জেলেরাও সংকটে পড়েছেন।

ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়ে জুলেখা বিবি বলেন, স্বামীর মতো ছেলেকেও যেন সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের খোরাক হতে না হয়, এ জন্য তিনি সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে সহযোগিতা চান।

স্থানীয় রমজান নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন ‌বলেন, জুলেখার জীবন সংগ্রামী জীবন। তিনি এই পশ্চাৎপদ এলাকায় একজন অনুকরণীয় মা। জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস শুধু জুলেখার মতো অনেক জেলে নানা সংকটে থাকেন। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে জুখেলার জন্য কিছু করার ইচ্ছা পোষণ করেন তিনি।#

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা,

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com