ফাইল ছবি
অনলাইন ডেস্ক : আন্দোলনের মুখে দুপুরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জরুরি ঘোষণা দিয়েছে। কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আন্দোলনরত ‘জুলাই বীর যোদ্ধাদের’ উদ্দেশে বলেছেন, ‘গতকালের আলোচনা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর অঙ্গীকারনামার ৫ নং দফার পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে জুলাই যোদ্ধাদের দাবির প্রতিফলন ঘটিয়ে প্রয়োজনীয় জরুরি সংশোধন করা হয়েছে।’
আজ শুক্রবার ঢাকায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আন্দোলনরত জুলাই যোদ্ধাদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন আলী রীয়াজ। এ সময় কমিশনের সদস্যদের মধ্যে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড.ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
‘যাদের রক্তের ওপর জুলাই অভ্যুত্থান, তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি’‘যাদের রক্তের ওপর জুলাই অভ্যুত্থান, তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি’
অধ্যাপক আলী রীয়াজ সংশোধিত ভাষ্যটি পাঠ করেন। এতে বলা হয়েছে, ‘গণঅভ্যুত্থানপূর্ব বাংলাদেশে ১৬ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান কালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত সব হত্যাকান্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারকে এবং জুলাই আহতদের রাষ্ট্রীয় বীর, আহত জুলাই বীর যোদ্ধাদের যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান যেমন মাসিক ভাতা, সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ব্যবস্থা এবং শহীদ পরিবার ও আহত বীর যোদ্ধাদের আইনগত দায়মুক্তি, মৌলিক অধিকার সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।’
কমিশনের সহ-সভাপতি জানান, এই অঙ্গীকারনামা বাস্তবায়নের ব্যাপারে কমিশন সরকারকে সুস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্টভাবে উপস্থাপন করবে এবং এ বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও কমিশনের কোনো মতপার্থক্য নেই।
‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সরাতে পুলিশের লাঠিপেটা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ভাঙচুর, আগুন‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সরাতে পুলিশের লাঠিপেটা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ভাঙচুর, আগুন
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিক্ষোভের পর আজ সকালে ‘জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধা’ ব্যানারে শতাধিক মানুষ সংসদ ভবন এলাকার ১২ নম্বর গেটের সামনে জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা গেট টপকে ভেতরের দিকে ঢুকে যান। তাঁরা সরাসরি অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত মঞ্চের সামনে চলে এসে অতিথিদের জন্য রাখা চেয়ারে বসে স্লোগান দিতে থাকেন।
আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি হলো—জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তাদের অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আইনি সুরক্ষা এবং পুনর্বাসন দ্রুত বাস্তবায়ন করা। তাঁদের স্লোগানে দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়টি উঠে আসে।
আন্দোলনকারীরা মঞ্চের সামনে অবস্থান নিলে পুলিশ দ্রুত তাদের সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। এ সময় পুলিশ লাঠিপেটা করে আন্দোলনকারীদের মঞ্চের এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়।
পুলিশ সরিয়ে দেওয়ার পর আন্দোলনকারীরা সংসদ ভবনের বাইরে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং এ সময় কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে লাঠিসোঁটা হাতে একদল তরুণকে বিক্ষোভ করতে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। কিছু ব্যক্তি পুনরায় মঞ্চের দিকে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ দ্বিতীয় দফায় তাদের সরিয়ে দেয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উত্তেজনা সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়েই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুরু করার প্রস্তুতি চলছে।