ছবি সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক : শিম্পাঞ্জি নিয়ে যুগান্তকারী গবেষণার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পাওয়া ব্রিটিশ সংরক্ষণবাদী ও প্রাইমাটোলজিস্ট (যিনি প্রাইমেট প্রজাতির জীবন-আচরণ-বিবর্তন নিয়ে কাজ করেন) জেন গুডঅল মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
গুডঅলের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে দেওয়া শোকবার্তায় গুডঅলকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেন মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গুডঅলের মৃত্যুতে তিনি গভীরভাবে শোকাহত।
জেন গুডঅল ইনস্টিটিউট গতকাল বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানায়। পোস্টে বলা হয়, গুডঅল বক্তৃতা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া সফর করছিলেন। সেখানেই তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়। পোস্টে আরও বলা হয়, একজন ইথোলজিস্ট (প্রাণীর আচরণবিজ্ঞানী) হিসেবে গুডঅলের গবেষণালব্ধ আবিষ্কারগুলো বিজ্ঞানের রূপান্তরে ভূমিকা রেখেছে। তিনি বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষা ও পুনরুদ্ধারে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন।
গুডঅলের জন্ম ১৯৩৪ সালে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে। তিনি তানজানিয়ায় প্রাকৃতিক পরিবেশে মুক্তজীবন কাটানো শিম্পাঞ্জিগুলোর ওপর ১৯৬০ সালে গবেষণা শুরু করেন।
ডেভিড গ্রেবিয়ার্ড নামের একটি শিম্পাঞ্জির ওপর দীর্ঘদিন ধরে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে গুডঅল দেখতে পান, প্রাণীটি গাছের ডাল দিয়ে প্রয়োজনীয় হাতিয়ার বানাতে পারে। আর সে সেটি ব্যবহার করে উইপোকা ধরতে পারে। এ পর্যবেক্ষণযন্ত্র কিংবা হাতিয়ার বানানোর ক্ষেত্রে মানুষের একক কৃতিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানায়।
১৯৭৭ সালে জেন গুডঅল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এ প্রতিষ্ঠান বৃহৎ প্রাইমেট প্রজাতির প্রাণীর প্রাকৃতিক আবাস রক্ষায় কাজ করে। একই সঙ্গে প্রাণী ও পরিবেশ সুরক্ষায় তরুণদের কাজে সহায়তা দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
২০০২ সালে গুডঅল জাতিসংঘের শান্তিদূত হন। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিশ্ব সংস্থাটি এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছে, আজ জাতিসংঘ পরিবার গুডঅলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছে। বিজ্ঞানী, সংরক্ষণবাদী ও জাতিসংঘের শান্তিদূত হিসেবে তিনি এই গ্রহ, এর প্রতিটি জীবের জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছেন। মানবতা ও প্রকৃতির জন্য অসাধারণ উত্তরাধিকার রেখে গেছেন তিনি।