ফাইল ফটো
অনলাইন ডেস্ক : পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার আলোচিত কলেজছাত্রী ও শহীদ কন্যা লামিয়াকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলার পলাতক প্রধান আসামি ইমরান মুন্সি (১৭) অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছেন। রোববার বিকেল ৫টার দিকে বরিশাল নগরীর কাশিপুর ইছাকাঠি মহল্লা থেকে তাকে আটক করে পটুয়াখালী জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
পটুয়াখালী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল গণমাধ্যমকে ইমরান মুন্সির গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, লামিয়ার বাবা জসিম উদ্দিন ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে’ পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ জুলাই মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর লামিয়ার মা ঢাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। এসময় লামিয়া দুমকী উপজেলার আলগী গ্রামে নানাবাড়িতে বসবাস করছিলেন।
১৮ মার্চ লামিয়া দাদাবাড়ি নলদোয়ানি গ্রাম থেকে বাবার কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনার দু’দিন পর, ২০ মার্চ দুপুরে লামিয়া নিজেই দুমকী থানায় মামলা দায়ের করেন। এজাহারে সহপাঠী সিফাত মুন্সি ও স্থানীয় মেহেরুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র শাকিব মুন্সির নাম উল্লেখ করা হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্তরা লামিয়াকে অপহরণ করে ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে।
পরে পুলিশ সিফাত ও শাকিবকে গ্রেফতার করে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে এবং ঘটনার অন্যতম মূল হোতা হিসেবে ইমরান মুন্সির নাম প্রকাশ করে।
ধর্ষণের ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন লামিয়া। একপর্যায়ে ২৬ এপ্রিল রাত ৯টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর শেখেরটেক এলাকার মায়ের ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করেন তিনি। পরদিন গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয় শহীদ বাবার কবরের পাশে। এ ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত বিচার নিশ্চিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই নৃশংস ঘটনায় জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। মামলার তদন্ত অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পরিচালিত হচ্ছে এবং অপরাধীদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”