রাজধানীসহ সারা দেশে ৫৪ শতাংশ রেস্টুরেন্ট অগ্নিঝুঁকিতে

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীসহ সারা দেশে ৫৪ শতাংশ রেস্টুরেন্ট রয়েছে অগ্নিঝুঁকিতে। বিশেষজ্ঞরা একাধিকবার সতর্ক করলেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না। সময়মতো উদ্যোগ না নিলে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি ভবনের মতো আরও ট্র্যাজেডির জন্য অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

ফায়ার সার্ভিসের এক হিসাবে দেখা গেছে, দেশের প্রায় ৫৪ শতাংশ রেস্টুরেন্ট অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে।

 

তবে বড় কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না। গত বছর ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের গ্রিন কোজি রেস্টুরেন্টে আগুনের পর রাজউক, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থা অভিযান চালিয়ে ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের আলোচিত গাউছিয়া টুইন পিক ভবনসহ বিভিন্ন এলাকায় বহু রেস্টুরেন্ট সিলগালা করে। কিন্তু এর কিছুদিন পরই সেই অভিযান থেমে যায়।
ঝুঁকি বিবেচনায় ভবনের ছাদে থাকা সব রুফটপ রেস্টুরেন্টের ট্রেড লাইসেন্স সম্প্রতি বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

 

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান নিজে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন এলাকার রেস্টুরেন্ট পরিদর্শন করছেন। তা ছাড়া অন্য কোনো সরকারি সংস্থার তেমন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি নগর-বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, একটি মেগা সিটির সব বিষয়েই মেগা ব্যবস্থাপনা থাকতে হয়। কিন্তু ঢাকায় কারও ইচ্ছে হলেই যেকোনো ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট খুলে বসছেন।

যেগুলোর অনুমোদন নেই, এগুলো তো ঝুঁকিপূর্ণই। কিন্তু অনুমোদিত রেস্টুরেন্টগুলো তদারকির অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, সিলিন্ডার, গ্যাস লাইনের পাইপ, বিদ্যুতের তার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি ওয়্যারিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। যে কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বেড় যাচ্ছে। দুর্ঘটনা ঘটলে যে মানুষ তাড়াতাড়ি প্রস্থান করবে, সেই ব্যবস্থাও নেই।

বহির্গমন সিঁড়িগুলো মালামাল দিয়ে পূর্ণ করে রাখা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন ও রাজউকের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। রেস্টুরেন্টের জন্য যখন ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়, তখন ওই ভবনের নকশাসহ আনুষঙ্গিক বিষয় খতিয়ে দেখলে এ সমস্যা সৃষ্টি হতো না। এই দুটি সংস্থাসহ আন্তঃসংস্থার সমন্বয় থাকলে রেস্টুরেন্টসহ অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যাবে।

 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মুনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা একটি সার্ভে করেছি। সেখানে ডিএসসিসি এলাকায় ৪৫টি ভবনের ছাদে রুফটপ রেস্টুরেন্ট পেয়েছি, যা ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলো পরিচালনার ক্ষেত্রে যথাযথ অনুমোদনও নেওয়া হয়নি। তাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এসব রেস্টুরেন্টের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অন্য রেস্টুরেন্টগুলো নিয়েও আমরা কাজ করছি। তবে এখন রাজস্ব কালেকশনের মৌসুম। এ সময় রেস্টুরেন্টকে বেশি গুরুত্ব দিলে রাজস্ব আহরণ ব্যাহত হবে। আগামী জুলাই মাসে যখন ট্রেড লাইসেন্স রিনিউ করতে আসবে, তখন সব বিষয় চেক করা হবে। তা ছাড়া আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম চলমান আছে।’

 

রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী রিয়াজুল হক বলেন, নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে পরিচালিত রেস্টুরেন্টে অগ্নিকা-সহ যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো পরিদর্শন করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই লক্ষ্যে সব সংস্থা একযোগে কাজ করবে। নকশাবহির্ভূত ভবনগুলোর বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।

 

তিনি বলেন, ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডসহ ঢাকার অন্যান্য স্থানের যত নকশাবহির্ভূত ও অননুমোদিত রেস্টুরেন্ট এবং আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে রাজউক। একটি বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তোলার জন্য ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে সব সংস্থাকে নিয়ে কাজ করব। ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজও অবৈধ এবং ঝুঁকিপূর্ণ রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

৮ লাখ রেস্টুরেন্টের মধ্যে বৈধ ১২৮টি

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ২০২১ সালে হোটেল ও রেস্টুরেন্ট খাত নিয়ে একটি জরিপ অনুযায়ী দেশের হোটেল ও রেস্টুরেন্টের সংখ্যা ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি। গত চার বছরে এই সংখ্যা আরও বেড়েছে।

রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির তথ্যমতে, ঢাকায় লক্ষাধিক রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১২৮টি রেস্টুরেন্টের অনুমোদন আছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মতিঝিল এলাকার এক রেস্টুরেন্ট মালিক বলেন, রেস্টুরেন্টের অনুমোদন প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। যে কারণে সবাই চাইলেই সব সংস্থার অনুমতি নিতে পারে না। তা ছাড়া কোনো সংস্থা থেকেই ঘুষ ছাড়া ছাড়পত্র দেওয়া হয় না। সে ক্ষেত্রে ঘুষের পেছনে বড় অঙ্কের টাকার প্রয়োজন।

 

নিবন্ধনে জটিল প্রক্রিয়া

রেস্টুরেন্টের জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। তা ছাড়া কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন ও সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে অনুমোদন এবং ছাড়পত্র নিতে হয় একজন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীকে। এর বাইরে দই ও বোরহানির মতো বোতল বা প্যাকেটজাত খাদ্যপণ্য কোনো রেস্তোরাঁ বিক্রি করলে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নিতে হয়। ভবন নির্মাণের সময় সেটি কী কাজে ব্যবহৃত হবে, সে বিষয়ে আবার রাজউকের অকুপেন্সি সনদ নিতে হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রেস্টুরেন্ট নিবন্ধনের জন্য অন্তত আট ধরনের ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। আবার নিজের জমিতে রেস্টুরেন্ট করলে একরকম ডকুমেন্ট এবং ভাড়া করা ভবনে করলে আরেক রকম ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়।

 

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, অনুমোদনের এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফলে উদ্যোক্তারা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হন। এই প্রক্রিয়া সহজ হলে ব্যবসায়ীদের জন্য ভালো হতো। এরপরও অনেক তরুণ উদ্যোক্তা তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় আসছেন, যা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» চার দিনের রিমান্ডে মমতাজ

» চিকিৎসার নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর সরকার : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» ‘দলগুলোর ভিন্নমত থাকলেও সবার লক্ষ্য এক’

» প্রথম সরকারি সফরে সৌদিতে ট্রাম্প, স্বাগত জানালেন সালমান

» রমনা বটমূলে বোমা হামলা: দুজনের যাবজ্জীবন, ৯ জনের ১০ বছর কারাদণ্ড

» আমরা ভয়ংকর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছি: রিজভী

» আমরা ভারতের পানি আগ্রাসনের শিকার: মেজর হাফিজ

» বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আরও ১০০৪ জন আসামি গ্রেফতার

» ধার করে, টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করবো না: অর্থ উপদেষ্টা

» মাছের গাড়ি উল্টে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

রাজধানীসহ সারা দেশে ৫৪ শতাংশ রেস্টুরেন্ট অগ্নিঝুঁকিতে

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীসহ সারা দেশে ৫৪ শতাংশ রেস্টুরেন্ট রয়েছে অগ্নিঝুঁকিতে। বিশেষজ্ঞরা একাধিকবার সতর্ক করলেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না। সময়মতো উদ্যোগ না নিলে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি ভবনের মতো আরও ট্র্যাজেডির জন্য অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

ফায়ার সার্ভিসের এক হিসাবে দেখা গেছে, দেশের প্রায় ৫৪ শতাংশ রেস্টুরেন্ট অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে।

 

তবে বড় কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না। গত বছর ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের গ্রিন কোজি রেস্টুরেন্টে আগুনের পর রাজউক, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থা অভিযান চালিয়ে ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের আলোচিত গাউছিয়া টুইন পিক ভবনসহ বিভিন্ন এলাকায় বহু রেস্টুরেন্ট সিলগালা করে। কিন্তু এর কিছুদিন পরই সেই অভিযান থেমে যায়।
ঝুঁকি বিবেচনায় ভবনের ছাদে থাকা সব রুফটপ রেস্টুরেন্টের ট্রেড লাইসেন্স সম্প্রতি বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

 

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান নিজে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন এলাকার রেস্টুরেন্ট পরিদর্শন করছেন। তা ছাড়া অন্য কোনো সরকারি সংস্থার তেমন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি নগর-বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, একটি মেগা সিটির সব বিষয়েই মেগা ব্যবস্থাপনা থাকতে হয়। কিন্তু ঢাকায় কারও ইচ্ছে হলেই যেকোনো ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট খুলে বসছেন।

যেগুলোর অনুমোদন নেই, এগুলো তো ঝুঁকিপূর্ণই। কিন্তু অনুমোদিত রেস্টুরেন্টগুলো তদারকির অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, সিলিন্ডার, গ্যাস লাইনের পাইপ, বিদ্যুতের তার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি ওয়্যারিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। যে কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বেড় যাচ্ছে। দুর্ঘটনা ঘটলে যে মানুষ তাড়াতাড়ি প্রস্থান করবে, সেই ব্যবস্থাও নেই।

বহির্গমন সিঁড়িগুলো মালামাল দিয়ে পূর্ণ করে রাখা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন ও রাজউকের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। রেস্টুরেন্টের জন্য যখন ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়, তখন ওই ভবনের নকশাসহ আনুষঙ্গিক বিষয় খতিয়ে দেখলে এ সমস্যা সৃষ্টি হতো না। এই দুটি সংস্থাসহ আন্তঃসংস্থার সমন্বয় থাকলে রেস্টুরেন্টসহ অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যাবে।

 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মুনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা একটি সার্ভে করেছি। সেখানে ডিএসসিসি এলাকায় ৪৫টি ভবনের ছাদে রুফটপ রেস্টুরেন্ট পেয়েছি, যা ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলো পরিচালনার ক্ষেত্রে যথাযথ অনুমোদনও নেওয়া হয়নি। তাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এসব রেস্টুরেন্টের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অন্য রেস্টুরেন্টগুলো নিয়েও আমরা কাজ করছি। তবে এখন রাজস্ব কালেকশনের মৌসুম। এ সময় রেস্টুরেন্টকে বেশি গুরুত্ব দিলে রাজস্ব আহরণ ব্যাহত হবে। আগামী জুলাই মাসে যখন ট্রেড লাইসেন্স রিনিউ করতে আসবে, তখন সব বিষয় চেক করা হবে। তা ছাড়া আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম চলমান আছে।’

 

রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী রিয়াজুল হক বলেন, নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে পরিচালিত রেস্টুরেন্টে অগ্নিকা-সহ যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো পরিদর্শন করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই লক্ষ্যে সব সংস্থা একযোগে কাজ করবে। নকশাবহির্ভূত ভবনগুলোর বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।

 

তিনি বলেন, ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডসহ ঢাকার অন্যান্য স্থানের যত নকশাবহির্ভূত ও অননুমোদিত রেস্টুরেন্ট এবং আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে রাজউক। একটি বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তোলার জন্য ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে সব সংস্থাকে নিয়ে কাজ করব। ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজও অবৈধ এবং ঝুঁকিপূর্ণ রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

৮ লাখ রেস্টুরেন্টের মধ্যে বৈধ ১২৮টি

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ২০২১ সালে হোটেল ও রেস্টুরেন্ট খাত নিয়ে একটি জরিপ অনুযায়ী দেশের হোটেল ও রেস্টুরেন্টের সংখ্যা ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি। গত চার বছরে এই সংখ্যা আরও বেড়েছে।

রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির তথ্যমতে, ঢাকায় লক্ষাধিক রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১২৮টি রেস্টুরেন্টের অনুমোদন আছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মতিঝিল এলাকার এক রেস্টুরেন্ট মালিক বলেন, রেস্টুরেন্টের অনুমোদন প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। যে কারণে সবাই চাইলেই সব সংস্থার অনুমতি নিতে পারে না। তা ছাড়া কোনো সংস্থা থেকেই ঘুষ ছাড়া ছাড়পত্র দেওয়া হয় না। সে ক্ষেত্রে ঘুষের পেছনে বড় অঙ্কের টাকার প্রয়োজন।

 

নিবন্ধনে জটিল প্রক্রিয়া

রেস্টুরেন্টের জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। তা ছাড়া কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন ও সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে অনুমোদন এবং ছাড়পত্র নিতে হয় একজন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীকে। এর বাইরে দই ও বোরহানির মতো বোতল বা প্যাকেটজাত খাদ্যপণ্য কোনো রেস্তোরাঁ বিক্রি করলে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নিতে হয়। ভবন নির্মাণের সময় সেটি কী কাজে ব্যবহৃত হবে, সে বিষয়ে আবার রাজউকের অকুপেন্সি সনদ নিতে হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রেস্টুরেন্ট নিবন্ধনের জন্য অন্তত আট ধরনের ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। আবার নিজের জমিতে রেস্টুরেন্ট করলে একরকম ডকুমেন্ট এবং ভাড়া করা ভবনে করলে আরেক রকম ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়।

 

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, অনুমোদনের এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফলে উদ্যোক্তারা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হন। এই প্রক্রিয়া সহজ হলে ব্যবসায়ীদের জন্য ভালো হতো। এরপরও অনেক তরুণ উদ্যোক্তা তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় আসছেন, যা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com