‘মা-শা আল্লাহ’ কখন ও কেন বলবেন?

বহুল প্রচলিত একটি বাক্য- ‘মা শা আল্লাহ’। আরবি- مَا شَاءَ الله ‘মা শা আল্লাহ’- শব্দটির অর্থ হলো- ‘আল্লাহ তাআলা যেমন চেয়েছেন’। কিন্তু ব্যাপক প্রচলিত এ কথাটি কখন এবং কেন বলতে হয়। এটি বলার উপকারিতাই বা কী?

 

হাদিসে পাকে এসেছে, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রশংসার বহিঃপ্রকাশ কিংবা ভালো যে কোনো কিছু দেখলে বলা-

مَا شَاءَ الله

উচ্চারণ : ‘মা শা আল্লাহ’

অর্থ : ‘আল্লাহ তাআলা যেমনটি চেয়েছেন’ (মুসলিম)

‘মা শা আল্লাহ’ কখন বলবেন?

সুন্দর কিছু দেখলে- ‘মা শা আল্লাহ’ বলতে হয়। তবে ইসলামিক স্কলাররা মা শা আল্লাহ বলার তিনটি অবস্থা নির্ধারণ করেছেন। তাহলো-

১. যখন কারও সফলতা দেখবেন; তখন- ‘মা শা আল্লাহ’ বলা।

২. যখন কাউকে ভালো কিছু করতে দেখবেন; তখন- ‘মা শা আল্লাহ’ বলা।

৩. যখন কারো কোনো সুন্দর জিনিস দেখবেন; তখন- ‘মা শা আল্লাহ’ বলা।

‘মা শা আল্লাহ’ কেন বলবেন?

 

কারো সফলতা, ভালো কাজ ও সুন্দর জিনিস দেখে ‘মা শা আল্লাহ’ বলায় কোন বদ নজর লাগে না। বরং মাশা আল্লাহ বলায় রয়েছে বিশেষ উপকার। যে নিজিস বা যে কাজ দেখে ‘মা শা আল্লাহ’ বলা হয়; সে জিনিস বা কাজ থেকে শয়তানের প্রভাব চলে যায়। শয়তান তাতে আর প্রভাব ফেলতে পারে না। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে-

কোনো অতিথি বা মেহমান দাওয়াতে এসে যদি কোনো সুন্দর বাচ্চাকে দেখতে পেয়ে ‘মা শা আল্লাহ’ বলে তবে ওই ব্যক্তির বদনজর থেকে বাচ্চাটি হেফাজত থাকে।

সুন্দর কিছু দেখলে যা বলা যাবে না

অনেকে সুন্দর কোনো কিছু দেখলে বা সুন্দর কোনো বাচ্চা দেখলে সাধারণত- ‘ওয়াও’, ‘কংগ্রাচুলেসন্স’ কিংবা ‘ওয়ান্ডারফুল’ ইত্যাদি আশ্চর্যজনক শব্দ ব্যবহার করেন। না, এমনটি বলায় সুন্দর জিনিসটিতে শয়তান প্রভাব ফেলতে সুযোগ খুঁজে পায়। তাই এ সব শব্দ এড়িয়ে চলুন এবং সুন্নাতের অনুসরণে- ‘মা শা আল্লাহ’ বলুন। এতে শয়তানের আক্রমণ ও বদনজর থেকে কাজটি মুক্ত থাকবে।

 

‘মা শা আল্লাহ’র উত্তর দেওয়া

কেউ যদি সুন্দর যে কোনো জিনিস দেখে ‘মা শা আল্লাহ’ বলেন, তবে তার উচিত, এ শব্দ শুনেই মহান আল্লাহর প্রশংসায়- ‘আলহামদুলিল্লাহ’ কিংবা ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা। তাহলে উভয়ের প্রশংসা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য ও বরকতময় হয় এবং দুনিয়ার যাবতীয় ক্ষতি থেকে বিষয় বা উপলক্ষ্যটি মুক্তি পায়।

 

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সুন্দর কিংবা প্রশংসামূলক কোনো কিছু দেখলে- مَا شَاءَ الله ‘মা শা আল্লাহ’ বলা। আর কাউকে ‘মা শা আল্লাহ’ বলতে শুনলে আল্লাহর প্রশংসায়- ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বা ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা।

 

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুন্দর কিছু দেখলে কিংবা প্রশংসামূলক কাজে ‘মা শা আল্লাহ’ বলার তাওফিক দান করুন। আর যারা ‘মা শা আল্লাহ’ শুনবেন তাদের আলহামদুলিল্লাহ বা সুবহানাল্লাহ বলার তাওফিক দান করুন। আমিন। সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চলছে ডাকসু নির্বাচন : ডিসি মাসুদ

» ভোট কেন্দ্র দখলের পাঁয়তারা করছে ছাত্রদল: শিবির সেক্রেটারি

» এনআইডি হারিয়ে গেলে আর জিডি করতে হবে না: ইসি সচিব

» ১ লাখ ৯০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার

» মানবপাচার চক্রের হাত থেকে দুই বাংলাদেশি কিশোরকে উদ্ধার, আটক ১

» ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের জয়ের ব্যাপারে বিএনপি আশাবাদী: গয়েশ্বর

» কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ১জনকে কুপিয়ে জখম

» ঋতুপর্ণা-মৌসুমীকে নিয়ে প্রকাশ্যে এলেন ফেরদৌস

» পরিত্যক্ত বস্তায় মিলল ১০ বন্দুক ও ৩৬ রাউন্ড কার্তুজ

» ‌যারা লুকিয়ে ছিল, তাদের ভোট দেওয়ার আগে আরেকবার ভাবুন: হান্নান মাসউদ

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

‘মা-শা আল্লাহ’ কখন ও কেন বলবেন?

বহুল প্রচলিত একটি বাক্য- ‘মা শা আল্লাহ’। আরবি- مَا شَاءَ الله ‘মা শা আল্লাহ’- শব্দটির অর্থ হলো- ‘আল্লাহ তাআলা যেমন চেয়েছেন’। কিন্তু ব্যাপক প্রচলিত এ কথাটি কখন এবং কেন বলতে হয়। এটি বলার উপকারিতাই বা কী?

 

হাদিসে পাকে এসেছে, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রশংসার বহিঃপ্রকাশ কিংবা ভালো যে কোনো কিছু দেখলে বলা-

مَا شَاءَ الله

উচ্চারণ : ‘মা শা আল্লাহ’

অর্থ : ‘আল্লাহ তাআলা যেমনটি চেয়েছেন’ (মুসলিম)

‘মা শা আল্লাহ’ কখন বলবেন?

সুন্দর কিছু দেখলে- ‘মা শা আল্লাহ’ বলতে হয়। তবে ইসলামিক স্কলাররা মা শা আল্লাহ বলার তিনটি অবস্থা নির্ধারণ করেছেন। তাহলো-

১. যখন কারও সফলতা দেখবেন; তখন- ‘মা শা আল্লাহ’ বলা।

২. যখন কাউকে ভালো কিছু করতে দেখবেন; তখন- ‘মা শা আল্লাহ’ বলা।

৩. যখন কারো কোনো সুন্দর জিনিস দেখবেন; তখন- ‘মা শা আল্লাহ’ বলা।

‘মা শা আল্লাহ’ কেন বলবেন?

 

কারো সফলতা, ভালো কাজ ও সুন্দর জিনিস দেখে ‘মা শা আল্লাহ’ বলায় কোন বদ নজর লাগে না। বরং মাশা আল্লাহ বলায় রয়েছে বিশেষ উপকার। যে নিজিস বা যে কাজ দেখে ‘মা শা আল্লাহ’ বলা হয়; সে জিনিস বা কাজ থেকে শয়তানের প্রভাব চলে যায়। শয়তান তাতে আর প্রভাব ফেলতে পারে না। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে-

কোনো অতিথি বা মেহমান দাওয়াতে এসে যদি কোনো সুন্দর বাচ্চাকে দেখতে পেয়ে ‘মা শা আল্লাহ’ বলে তবে ওই ব্যক্তির বদনজর থেকে বাচ্চাটি হেফাজত থাকে।

সুন্দর কিছু দেখলে যা বলা যাবে না

অনেকে সুন্দর কোনো কিছু দেখলে বা সুন্দর কোনো বাচ্চা দেখলে সাধারণত- ‘ওয়াও’, ‘কংগ্রাচুলেসন্স’ কিংবা ‘ওয়ান্ডারফুল’ ইত্যাদি আশ্চর্যজনক শব্দ ব্যবহার করেন। না, এমনটি বলায় সুন্দর জিনিসটিতে শয়তান প্রভাব ফেলতে সুযোগ খুঁজে পায়। তাই এ সব শব্দ এড়িয়ে চলুন এবং সুন্নাতের অনুসরণে- ‘মা শা আল্লাহ’ বলুন। এতে শয়তানের আক্রমণ ও বদনজর থেকে কাজটি মুক্ত থাকবে।

 

‘মা শা আল্লাহ’র উত্তর দেওয়া

কেউ যদি সুন্দর যে কোনো জিনিস দেখে ‘মা শা আল্লাহ’ বলেন, তবে তার উচিত, এ শব্দ শুনেই মহান আল্লাহর প্রশংসায়- ‘আলহামদুলিল্লাহ’ কিংবা ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা। তাহলে উভয়ের প্রশংসা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য ও বরকতময় হয় এবং দুনিয়ার যাবতীয় ক্ষতি থেকে বিষয় বা উপলক্ষ্যটি মুক্তি পায়।

 

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সুন্দর কিংবা প্রশংসামূলক কোনো কিছু দেখলে- مَا شَاءَ الله ‘মা শা আল্লাহ’ বলা। আর কাউকে ‘মা শা আল্লাহ’ বলতে শুনলে আল্লাহর প্রশংসায়- ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বা ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা।

 

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুন্দর কিছু দেখলে কিংবা প্রশংসামূলক কাজে ‘মা শা আল্লাহ’ বলার তাওফিক দান করুন। আর যারা ‘মা শা আল্লাহ’ শুনবেন তাদের আলহামদুলিল্লাহ বা সুবহানাল্লাহ বলার তাওফিক দান করুন। আমিন। সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com