মাদকে অপ্রতিরোধ্য রোহিঙ্গারা

মাদক সাম্রাজ্যে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গারা। মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান দেশে প্রবেশ করানো থেকে শুরু করে ক্যাম্পে মজুদ ও ক্যারিয়ার হিসেবে বহন করে বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়াসহ সবকিছুই করছে তারা। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে ইয়াবা সাম্রাজ্যের সিংহভাগ চলে গেছে তাদের দখলে।

 

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মুজিবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি রোহিঙ্গা গ্রেফতার হচ্ছে মাদক নিয়ে। বেশ কিছু কারণে মাদকের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ততা বেড়েছে এটাই তদন্তে জানতে পেরেছি।

 

কক্সবাজারের ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক এসপি নাঈমুল হক বলেন, ‘আমরা প্রতিদিনই কোনো না কোনো রোহিঙ্গাকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করছি। প্রশাসনিক তৎপরতা বৃদ্ধি এবং চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ওপর কড়া নজরদারির কারণেই অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি রোহিঙ্গা গ্রেফতার হচ্ছে।’

 

অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমানে ইয়াবা ব্যবসার সিংহভাগই নিয়ন্ত্রণ করছে রোহিঙ্গারা। মিয়ানমার থেকে স্থল ও নৌপথে ইয়াবার চালান দেশে প্রবেশ করানো থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চালান মজুদ করা এবং ক্যাম্প থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করছে তারা। বছর দেড়েক আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভিতর ইয়াবা নিয়ন্ত্রণকারী ৭২ জনের একটি সমন্বিত তালিকা তৈরি করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। ওই তালিকায় প্রায় ২০০ জনের নাম রয়েছে ইয়াবার ক্যারিয়ার হিসেবে। বর্তমানে সরাসরি ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকারী রোহিঙ্গার সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। ইয়াবা ক্যারিয়ারের সংখ্যাও ছাড়িয়েছে হাজার। রোহিঙ্গাদের মাদক সাম্রাজ্যের বিস্তার অনুসন্ধান করতে গিয়ে উঠে এসেছে ভয়ংকর কিছু তথ্য। আগে ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা বের হওয়া নিয়ে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকলেও বর্তমানে সে পরিস্থিতি অনেকটাই শিথিল। ফলে অনায়াসে মাদকের চালান নিয়ে ক্যাম্পে প্রবেশ ও বের হতে পারছে রোহিঙ্গারা। ক্যাম্পে পরিবহনগুলো অনেকটা তল্লাশি ছাড়াই প্রবেশ করে। পর্যাপ্ত তল্লাশি না থানায় সিএনজি অটোরিকশা, পণ্যবাহী গাড়ি, এমনকি বিভিন্ন সংস্থার গাড়ি নিয়ে পাচার করা হয় ইয়াবা। রোহিঙ্গা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করছে টেকনাফের কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং কিছু জনপ্রতিনিধি। অল্প টাকায় রোহিঙ্গাদের ইয়াবা বহনসহ গুরুতর অপরাধগুলোতে সম্পৃক্ত করা যায় অনায়াসে। ফলে টাকার লোভে পড়েই ইয়াবার ক্যারিয়ার হিসেবে মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা।

 

কক্সবাজার জেলার টেকনাফে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সোমেন ম ল। তার মতে, রোহিঙ্গারা অল্প টাকায় মাদক পরিবহনসহ গুরুতর অপরাধগুলো সহজে করে ফেলে। এ ছাড়া ক্যাম্প এলাকাগুলো ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় সহজে অভিযান পরিচালনা করা যায় না। তাই রোহিঙ্গাদের মধ্যে মাদক-সংশ্লিষ্ট অপরাধগুলো দ্রুতই সংক্রমণের মতো ছড়িয়ে পড়ছে।’  সূত্র:বিডি প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আজকের খেলা

» অধিকার আদায়ে শেরে বাংলার অবদান কখনোই ভুলবার নয়: ফখরুল

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ৩৯ জন গ্রেপ্তার

» সরবরাহ থাকলেও কমছে না সবজির দাম, অস্বস্তি মাছ-মাংসের বাজারে

» ভারী বৃষ্টিপাতের পর তানজানিয়ায় বন্যা-ভূমিধস, নিহত অন্তত ১৫৫

» ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু

» সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২

» নদীতে ৪ নৌ চাঁদাবাজ আটক

» থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

» আজ শুক্রবার রাজধানীর যেসব এলাকা-মার্কেট বন্ধ

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মাদকে অপ্রতিরোধ্য রোহিঙ্গারা

মাদক সাম্রাজ্যে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গারা। মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান দেশে প্রবেশ করানো থেকে শুরু করে ক্যাম্পে মজুদ ও ক্যারিয়ার হিসেবে বহন করে বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়াসহ সবকিছুই করছে তারা। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে ইয়াবা সাম্রাজ্যের সিংহভাগ চলে গেছে তাদের দখলে।

 

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মুজিবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি রোহিঙ্গা গ্রেফতার হচ্ছে মাদক নিয়ে। বেশ কিছু কারণে মাদকের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ততা বেড়েছে এটাই তদন্তে জানতে পেরেছি।

 

কক্সবাজারের ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক এসপি নাঈমুল হক বলেন, ‘আমরা প্রতিদিনই কোনো না কোনো রোহিঙ্গাকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করছি। প্রশাসনিক তৎপরতা বৃদ্ধি এবং চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ওপর কড়া নজরদারির কারণেই অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি রোহিঙ্গা গ্রেফতার হচ্ছে।’

 

অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমানে ইয়াবা ব্যবসার সিংহভাগই নিয়ন্ত্রণ করছে রোহিঙ্গারা। মিয়ানমার থেকে স্থল ও নৌপথে ইয়াবার চালান দেশে প্রবেশ করানো থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চালান মজুদ করা এবং ক্যাম্প থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করছে তারা। বছর দেড়েক আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভিতর ইয়াবা নিয়ন্ত্রণকারী ৭২ জনের একটি সমন্বিত তালিকা তৈরি করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। ওই তালিকায় প্রায় ২০০ জনের নাম রয়েছে ইয়াবার ক্যারিয়ার হিসেবে। বর্তমানে সরাসরি ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকারী রোহিঙ্গার সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। ইয়াবা ক্যারিয়ারের সংখ্যাও ছাড়িয়েছে হাজার। রোহিঙ্গাদের মাদক সাম্রাজ্যের বিস্তার অনুসন্ধান করতে গিয়ে উঠে এসেছে ভয়ংকর কিছু তথ্য। আগে ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা বের হওয়া নিয়ে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকলেও বর্তমানে সে পরিস্থিতি অনেকটাই শিথিল। ফলে অনায়াসে মাদকের চালান নিয়ে ক্যাম্পে প্রবেশ ও বের হতে পারছে রোহিঙ্গারা। ক্যাম্পে পরিবহনগুলো অনেকটা তল্লাশি ছাড়াই প্রবেশ করে। পর্যাপ্ত তল্লাশি না থানায় সিএনজি অটোরিকশা, পণ্যবাহী গাড়ি, এমনকি বিভিন্ন সংস্থার গাড়ি নিয়ে পাচার করা হয় ইয়াবা। রোহিঙ্গা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করছে টেকনাফের কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং কিছু জনপ্রতিনিধি। অল্প টাকায় রোহিঙ্গাদের ইয়াবা বহনসহ গুরুতর অপরাধগুলোতে সম্পৃক্ত করা যায় অনায়াসে। ফলে টাকার লোভে পড়েই ইয়াবার ক্যারিয়ার হিসেবে মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা।

 

কক্সবাজার জেলার টেকনাফে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সোমেন ম ল। তার মতে, রোহিঙ্গারা অল্প টাকায় মাদক পরিবহনসহ গুরুতর অপরাধগুলো সহজে করে ফেলে। এ ছাড়া ক্যাম্প এলাকাগুলো ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় সহজে অভিযান পরিচালনা করা যায় না। তাই রোহিঙ্গাদের মধ্যে মাদক-সংশ্লিষ্ট অপরাধগুলো দ্রুতই সংক্রমণের মতো ছড়িয়ে পড়ছে।’  সূত্র:বিডি প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com